কলকাতা , 9 জুলাই : ডেউচা-পাচামি কয়লা খনি প্রকল্প চালু করার ক্ষেত্রে জটিলতা কাটাতে আজ সেখানকার জলি মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। এরপরই সেই আলোচনার সন্তোষজনক ফলাফলের দিকে ইঙ্গিত করে টুইট করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
মমতা টুইটে বলেন, "রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা ও রাজ্য ও জেলার পদাধিকারীরা আজ মহম্মদবাজারের ডেউচার মানুষের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ৷ জমি মালিকদের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে ৷"
মুখ্য়মন্ত্রী টুইটে আরও বলেন, "আমরা ডেউচা-পাচমি কয়লা ব্লকের মতো বৃহৎ প্রকল্পগুলি কার্যকর করতে ভারতের জন্য একটি মডেল তৈরি করব। এই প্রকল্পের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে নির্ধারিত সময়ে এবং সম্পূর্ণ জনসাধারণের সহায়তায় করা হবে ৷ সংকটের সময়ও বাংলার উন্নয়নের চাকা থামবে না ৷"
ডেউচা-পাচামি কয়লা খনি প্রকল্পের কাজে যাতে কোনও বাধা না আসে সেজন্য আগাম প্রস্তুতি হিসাবে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বৃহস্পতিবার বৈঠক করেন সেখানকার জমির মালিকদের সঙ্গে ৷ ডেউচা গৌরাঙ্গিনী হাইস্কুলের মাঠে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা, পুলিশ সুপার শ্যাম সিং, আদিবাসী গাঁওতার জেলা সম্পাদক রবীন সোরেন ৷ এছাড়া মহম্মদবাজারের তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্ব ও জমির মালিকরা। "ডেউচা-পাচামি কয়লা খনির কাজ শুরুর আগে আদিবাসী বা জমির মালিকদের 100 শতাংশ পুনর্বাসন দেওয়া হবে। মানুষের সমস্ত দিক দেখেই শুরু হবে কাজ।" কয়লা খনি প্রকল্প নিয়ে আদিবাসী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে ঠিক এভাবেই আশ্বস্ত করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব।
আদিবাসী অধ্যুষিত বীরভূমের মহম্মদবাজার ব্লকের ডেউচা এবং পাচামি এলাকায় মোট সাড়ে তিন হাজার একর জমিতে হতে চলেছে কয়লা খনি প্রকল্প। এটি সম্পূর্ণ হলে ভারতের প্রস্তাবিত সর্ববৃহৎ কয়লা খনি প্রকল্প হবে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। আজ 20 জন আদিবাসী প্রতিনিধি এবং জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব । এই বৈঠকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের দাবি-দাওয়া শোনা হয়। রাজ্যের মুখ্যসচিব কয়লা খনির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তাদের কাছে সবিস্তারে ব্যাখ্যা করেন। তিনি জানান, এই প্রকল্পে সরকার ছাড়া কোনও বেসরকারি সংস্থা কাজ করবে না। কমপক্ষে 4 টি ধাপে প্রকল্পের কাজ চলবে। প্রাথমিক পর্যায়ে 600 থেকে 700 একর জমিতে শুরু হবে কাজ। এরপরে সাড়ে তিন হাজার একরের বাকি জমিতে কাজ চলবে।
প্রসঙ্গত, ডেউচা ও পাচামি গ্রামের আদিবাসীদের অধিকাংশই দীর্ঘদিন ধরেই কয়লা খনি প্রকল্পের জন্য জমি দিতে নারাজ। পাথর শিল্পের সঙ্গে যুক্ত এইসব মানুষেরা নিজেদের অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে রীতিমতো অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। সরকার পাথর শিল্পের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করার আশ্বাস দিলে জমি দিতে ইচ্ছুক তাঁরা। এর পাশাপাশি আদিবাসী সম্প্রদায়ের দাবি, সঠিক মজুরি ও চাকরি। আজকের বৈঠক থেকে মুখ্যসচিব 100 শতাংশ পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়েছেন। মুখ্যসচিবের প্রস্তাবে আদিবাসীরা রাজি থাকলে দ্রুত কাজ শুরু হবে কয়লা খনি প্রকল্পের।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডেউচা-পাচামি কয়লা খনি প্রকল্প নিয়ে প্রথম থেকেই আগ্রহ দেখিয়েছেন ৷ মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন বছর দুয়েক আগে। এবার প্রশাসনের তরফে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জটিলতা দূর করার চেষ্টা শুরু হল ৷ প্রশাসনের আশা, অক্টোবর থেকে স্থানীয়ভাবে এই খনি প্রকল্পের কাজ শুরু হতে পারে ।