কলকাতা, 14 সেপ্টেম্বর : জলপাইগুড়ির পর এবার কলকাতার বি সি রায় শিশু হাসপাতাল-সহ আরও বেশ কয়েকটি হাসপাতালের শিশু বিভাগে ধুম জ্বর ও নিউমোনিয়া নিয়ে ভর্তি রয়েছে বেশ কিছু শিশু । তবে জলপাইগুড়ি হাসপাতালের ঘটনার সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই বলে আশ্বাস দিয়েছেন চিকিৎসকরা । জ্বর হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে আতঙ্কেরও তেমন কোনও কারণ দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা ।
প্রথমে জ্বর । তারপর কাশি, সর্দি ও শ্বাসকষ্ট । এই লক্ষণগুলি নিয়ে শহরের বেশ কয়েকটি হাসপাতালে ইতিমধ্যেই ভর্তি হয়েছে বেশ কিছু শিশু । বি সি রায় শিশু হাসপাতালের সুপার চিকিৎসক দিলীপকুমার পাল বলেন, "এই ধরনের জ্বরের লক্ষণগুলি এক হলেও এর সঙ্গে করোনার কোনও সম্পর্ক নেই । প্রতি বছর আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস (Respiratory syncytial virus) বা আরএসভি (RSV)-র জেরে শিশুদের ব্রঙ্কিওলাইটিস হয় । এতে শিশুদের ঠান্ডা লাগে । প্রতিবছরই বর্ষাকালের শেষ ও শীতের শুরু সময়টায় এই সমস্যা নিয়ে বহু শিশু ভর্তি হয় । এটা কোনও নতুন সমস্যা নয় । তবে কিছু শিশুর ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট এতটাই বেড়ে যায় যে তাদের আইসিইউতে রাখতে হয় । এই শিশুদের ভেন্টিলেশন ও অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ে ।"
আরও পড়ুন :Bengal Rain: নিম্নচাপের বৃষ্টি চলবে দক্ষিণবঙ্গে, চার জেলায় কমলা সতর্কতা
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের শিশু বিভাগের প্রধান চিকিৎসক জয়দেব রায় বলেন, ‘‘যখনই আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়, তখনই শিশুদের মধ্যে এই ধরনের ভাইরাল ফিভার দেখা দেয় । ঋতু পরিবর্তনের সময়টায় ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় । তবে প্রাথমিকভাবে এই বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই । কারণ, যে সংখ্যক ভাইরাল হচ্ছে তার থেকে অনেক কম সংখ্যক শিশুদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করছে । এই ধরনের জ্বর আরএসভি, প্যারা ইনফ্লুয়েঞ্জা, ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ও বি থেকেও ফুসফুসের সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে এবং তা তার ফলে প্রবল শ্বাসকষ্ট দেখা যাচ্ছে ।"
ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের চিকিৎসক প্রভাস প্রসূন গিরি বলেন, "হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুরা সকলেই করোনা নেগেটিভ । সব বয়সের বাচ্চাদেরই এই জ্বর হতে পারে । তবে কম বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট বেশি হচ্ছে । যেহেতু এই জ্বরের লক্ষণগুলি অনেকটা করোনার মতো, তাই প্রথমেই আতঙ্কিত না হয়ে প্রয়োজনীয় সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে । যেমন বাড়ির বড়দের সর্দি, জ্বর, হাঁচি বা কাশি হলে শিশুদের দূরে রাখতে হবে । শিশুকেও মাস্ক পড়তে হবে । হাত ভাল করে ধুয়ে নেওয়া এবং স্যানিটাইজ করা । শিশুদের জ্বর হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে ।’’
আরও পড়ুন :Fever in Children : জলপাইগুড়িতে একসঙ্গে 130 শিশুর জ্বর, নমুনা যাচ্ছে কলকাতায়