কলকাতা, 10 অগস্ট: গ্রামীণ উন্নয়নের (Rural Development) ধারা অব্যাহত রাখতে এবার 'ন্যাশনাল ব্যাংক ফর এগ্রিকালচার অ্য়ান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট' (National Bank for Agriculture and Rural Development) বা নাবার্ড-এর (NABARD) দ্বারস্থ হচ্ছে রাজ্য সরকার (West Bengal Government) ৷ সূত্রের খবর, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বাংলার জন্য গ্রামীণ উন্নয়নে বরাদ্দ টাকা পাওয়া যাচ্ছে না ! তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই এই পদক্ষেপ করতে হয়েছে নবান্নকে ৷
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে দাবি করা হয়েছে, শুধুমাত্র 100 দিনের কাজ নয়, এই মুহূর্তে একাধিক প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ আটকে দেওয়া হয়েছে ! রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, টাকা আটকে আদতে পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন ব্যাহত করার অপচেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ বস্তুত, প্রকাশ্যেও এই অভিযোগ তৃণমূল তথা রাজ্যের তরফে একাধিকবার করা হয়েছে ৷ এ নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং ৷ কিন্তু, তাতেও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ ৷ তাই বিকল্প পথে গ্রামীণ উন্নয়নের টাকা জোগাড় করতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে ৷
আরও পড়ুন:Govt worried over paying DA: 19 অগস্ট বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মেটানোর শেষদিন, কী করবে রাজ্য সরকার ?
রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, বছর ঘুরলেই রাজ্য়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন (West Bengal Panchayat Election 2023) ৷ এই সময়ে গ্রামীণ উন্নয়নের কাজ বন্ধ হলে আগামী বছর ব্য়ালটে বিপাকে পড়তে হবে তৃণমূল কংগ্রেসকে ৷ তাই কোনও মতেই গ্রামীণ উন্নয়ন বন্ধ করার ঝুঁকি নিতে নারাজ মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Mamata Banerjee) সরকার ৷ এ দিকে, রাজ্য়ের নানা অংশে গ্রামীণ এলাকায় সড়ক নির্মাণের কাজ এখনও বাকি রয়েছে ৷ এই প্রেক্ষাপটে নাবার্ড থেকে সহজ শর্তে ঋণ নিয়ে সেই কাজ দ্রুত শেষ করতে চাইছে রাজ্য সরকার ৷
এখনও পর্যন্ত যা খবর, নাবার্ডের টাকায় 1 হাজার 140 কিলোমিটার রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা করেছে রাজ্য়ের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর ৷ এর জন্য খরচ হবে প্রায় 1 হাজার 34 কোটি টাকা ৷ 'গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল' (Rural Infrastructure Development Fund) বা আরআইডিএফ (RIDF)-এর মাধ্যমে এই কাজ করা হবে ৷ রাজ্য সরকারের অনুমান, এই অর্থ পেলে খুব সহজেই আটকে থাকা গ্রামীণ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রকল্পগুলি শেষ করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, রাজ্যের উন্নয়নে গ্রামীণ সড়কের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ৷ কিন্তু, বেশ কিছু জটিলতার জেরে কেন্দ্রীয় সরকার প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ৷ প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের প্রধান শাসকদল বিজেপি-র অভিযোগ হল, কেন্দ্রীয় সরকারের জনকল্যাণমুখী প্রকল্পগুলির নাম বদলে দিচ্ছে রাজ্য সরকার ৷ এবং সেগুলিকে রাজ্য়ে প্রকল্প বলে চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে ৷ এ নিয়ে কেন্দ্র বনাম রাজ্যের দড়ি টানাটানি নতুন নয় ৷ আর এই রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মাঝে পড়ে থমকে যাচ্ছে প্রকল্প রূপায়ণের কাজ ৷
আরও পড়ুন:WB Budget 22-23 : চন্দ্রিমার প্রথম বাজেটে গ্রামীণ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে জোর
এ নিয়ে বহুবার সরব হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এমনকী, সাম্প্রতিক দিল্লি সফরেও এ নিয়ে অনুযোগের সুর শোনা গিয়েছে তাঁর গলায় ৷ স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর কাছেও অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি ৷ নীতি আয়োগের বৈঠকেও বিষয়টি উত্থাপন করেছেন মমতা ৷ কিন্তু, তারপরও বরাদ্দ অর্থ মেলেনি ৷ এই কারণেই বিকল্প রাস্তা খুঁজতে হচ্ছে রাজ্যকে ৷
বর্তমানে রাজ্য়ের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের দায়িত্ব পেয়েছেন প্রদীপ মজুমদার ৷ প্রসঙ্গত, সুব্রত মুখোপাধ্য়ায়ের প্রয়াণের পর এই দফতরের সাময়িক দায়িত্ব পেয়েছিলেন পুলক রায় ৷ সেই সময়েই গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ সংক্রান্ত ফাইলে তিনি স্বাক্ষর করে গিয়েছেন ৷ নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই গ্রামীণ এলাকায় 1 হাজার 140 কিলোমিটার রাস্তা তৈরির জন্য ডিপিআর (DPR) বা Detailed Project Report তৈরি হয়ে গিয়েছে ৷ কম, বেশি সব জেলাতেই রাস্তা তৈরি করা হবে ৷