কলকাতা, 15 মার্চ: সংসারের হাল ধরে রাখেন মহিলারা ৷ তাঁরাই নিজের ঘরে হোম মিনিস্টার ৷ বাড়ির বাজেট করা হোক বা মেনু ঠিক করা, পরিপাটি হিসেব নিকেশ, তীক্ষ্ণ নজরদারিতে রমণীর গুনেই সুন্দর হয়ে ওঠে সংসার ৷ অনেককে আবার সামাল দিতে হয় বাইরেটাও ৷ প্রতিবার নির্বাচনের সময় বাড়ির মহিলাদের কিছু প্রত্যাশা থাকে ৷ নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন, নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার মতো নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে হোম মিনিস্টারদের মন জিততে চেষ্টা করে রাজনৈতিক দলগুলি ৷ কিন্তু সরকার আসার পর মহিলাদের সেই প্রত্যাশাগুলি পূরণ হয় কি ?
ঘরে বাইরে নারীরা আজ অনেক স্বাধীন । নারী নিরাপত্তাও আগের তুলনায় বেড়েছে । তবে শহর ও গ্রাম বাংলায় এখনও অনেক অঞ্চলে মহিলারা পুরোপুরি নিরাপদ মনে করেন না নিজেদের । আর বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, ঘরে ও বাইরে নারীদের চলাচল নিরাপদ করতে না-পারলে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন হওয়া সম্ভব নয় । এই বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার ও গজল গায়িকা অনিন্দিতা মৈত্র দাস ও এডুকেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেটর সুচিস্মিতা বাগচী সেনের মত অনেকটাই এক ।
অনিন্দিতাদেবী মনে করেন যে, "কর্মরতা মহিলা একজন মা-ও বটে ৷ তাঁর সন্তানকে রাখার জন্য কর্মক্ষেত্রে ক্রেশ থাকলে অফিসের কাজে অনেক বেশি ভালোভাবে মনোনিবেশ করা সম্ভব ।" আবার সুচিস্মিতা দেবীর কথায়, "যে সরকারই আসুক না কেন, তারা নারীদের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠার জন্য বিভিন্ন রকমের প্রকল্প ঘোষণা করেন, আদতে এগুলি শুধু অলঙ্কার । তবে এখনও সমাজের অনেক তৃণমূল স্তরের পরিবার রয়েছে, যাঁদের কাছে এই সুযোগগুলো ঠিকঠাক গিয়ে পৌঁছচ্ছে না বা তাঁরা সুযোগ সন্ধানী অর্থাৎ তাঁরা সুযোগ নিচ্ছেন তবে তার অপব্যবহার করছেন । এর কারণ অবশ্য আমাদের সমাজ ব্যবস্থা । নারী ও পুরুষের মধ্যে আদি অনন্তকাল ধরে হয়ে আসা বৈষম্য ।"
তিনি আরও বলেন যে, "নারী-পুরুষের বৈষম্য আমাদের সমাজে এখনও ভীষণভাবে প্রকট । এই বৈষম্য অনেক সময় বিজ্ঞাপনের কন্টেন্টেও দেখা যায় । গণমাধ্যমে মহিলাদের স্টিরিওটাইপ চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে । আশা রাখি একদিন এই বৈষম্য ঘুঁচবে । যে-ই সরকার গঠন করুক না কেন, এই বিষয়ে অনেক বেশি জোর দেবে ।"