কলকাতা, 2 ফেব্রুয়ারি : যথাযথ ডিগ্রি নেই অথচ, অস্ত্রোপচার করেন এক মহিলা চিকিৎসক। কলকাতায় তিনি একটি নার্সিংহোম-ও চালান। ওই নার্সিংহোমে অন্তঃসত্ত্বা এক তরুণীর সিজারিয়ান সেকশন করেন এই চিকিৎসক। তবে, সন্তানের জন্ম দিলেও এই অন্তঃসত্ত্বা এর পরে কোমায় চলে গিয়েছেন। এই ঘটনায় 10 লাখ টাকা জরিমানা করল রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন। ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিকেল কাউন্সিলে অভিযোগ জানানোর কথাও বলা হয়েছে।
রাজ্যের এই স্বাস্থ্য কমিশন অর্থাৎ, ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন (ডাব্লুবিসিইআরসি) জানিয়েছে, এই তরুণী আমহার্স্ট স্ট্রিটের বাসিন্দা। গত বছরের নভেম্বর মাসে 30 বছর বয়সি অন্তঃসত্ত্বা এই তরুণীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল রিপন স্ট্রিটে অবস্থিত একটি নার্সিংহোমে। এই নার্সিংহোমটি চালান একজন মহিলা চিকিৎসক। তাঁর এমবিবিএস-এর ডিগ্রি রয়েছে। তবে, যথাযথ ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও এই মহিলা চিকিৎসক মেটারনিটি সার্জারি করেন।
ওই তরুণীর সিজারিয়ান সেকশন করেন এই চিকিৎসক। সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে একটি সন্তানের জন্ম-ও দেন এই তরুণী। তবে, সিজারিয়ান সেকশনের পরে এই তরুণীর রক্তক্ষরণ আর বন্ধ করতে পারছিলেন না এই মহিলা চিকিৎসক। এর পরে এই নার্সিংহোম থেকে এই তরুণীকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার ব্রড স্ট্রিটে অবস্থিত অন্য একটি নার্সিংহোমে। সেখানে এই তরুণীকে দুই দিন রাখা হলেও তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না। এর পরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় মুকুন্দপুরে অবস্থিত বেসরকারি একটি হাসপাতালে। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলতে থাকে। চিকিৎসার খরচ হিসাবে 23 লাখ টাকার মতো বিল হয়।
আরও পড়ুন :সিএসআইআর নেটে তৃতীয় লিঙ্গের আবেদনকারীদের সংরক্ষণ থাকতে হবে, নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, এই তরুণীর স্বামী এই কমিশনে দায়ের করা অভিযোগে জানিয়েছেন, ঘর-বাড়ি বিক্রি করে মুকুন্দপুরের বেসরকারি ওই হাসপাতালের ওই বিলের মধ্যে সাড়ে 10 লাখ টাকা তিনি দিতে পেরেছেন। অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে এর পরে এই তরুণীকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে এই তরুণী কোমায় রয়েছেন। কমিশন জানিয়েছে, এই ঘটনায় রিপন স্ট্রিটের ওই নার্সিংহোমকে 10 লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। 10টি কিস্তিতে এই টাকা দিতে হবে। এই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তার জন্য ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিকেল কাউন্সিলে এই তরুণীর স্বামীকে অভিযোগ জানানোর কথা বলা হয়েছে।