পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

পুলিশকে বোমা মেরে কওসরকে ছাড়ানোর ছক, গ্রেপ্তার ২ জামাত জঙ্গি - stf

ছক ছিল পুলিশকে আক্রমণ করে কওসরকে মুক্ত করার। গতরাতে জামাত-উল-মুজাহিদিনের ওই দুই জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিশের STF(স্পেশাল টাস্ক ফোর্স)।

ধৃত দুই JIM জঙ্গি

By

Published : Feb 27, 2019, 10:31 AM IST

কলকাতা, ২৭ ফেব্রুয়ারি : অ‍্যাসিড বিস্ফোরক বানাতে রীতিমতো ওস্তাদ। ট্রেনিং পেয়েছিল জামাত-উল-মুজাহিদিন ইন্ডিয়া প্রধান কওসরের কাছ থেকে। ছক ছিল পুলিশকে আক্রমণ করে কওসরকে মুক্ত করার। গতরাতে জামাত-উল-মুজাহিদিনের ওই দুই জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিশের STF(স্পেশাল টাস্ক ফোর্স)। সঙ্গে ছিল মুর্শিদাবাদ পুলিশের বিশেষ দল। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে অ‍্যাসিড বোমা বানানোর সামগ্রী। আজ তাদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হবে।

STF সূত্রে খবর, ধৃত দু'জনের নাম মসিবুর রহমান ওরফে ফারুক এবং রুহুল আমিন। তারা জামাত-উল-মুজাহিদিন ইন্ডিয়ার সক্রিয় সদস্য। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের কুলগাছিতে তাদের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। সেখান থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় তাদের। উদ্ধার হয়েছে বিস্ফোরক। সেই বিস্ফোরক নিয়েই পুলিশকে আক্রমণ করার ছক কষেছিল তারা। জেরায় এমনই বিস্ফোরক তথ‍্য পেয়েছে পুলিশ।

STF সূত্রে খবর, ২ ফেব্রুয়ারি আবদুল মতিন নামে এক জামাত জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে STF। কেরলের মল্লপুরম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সঙ্গে ছিল কেরল পুলিশ। মতিন অসমের বরপেটার বাসিন্দা। মালদার কালিয়াচকে শেরশা মাদ্রাসায় পড়ার জন্য এসেছিল সে। তখনই জামাত-উল মুজাহিদিনের সংস্পর্শে আসে মতিন। জিয়াউল এবং মৌলানা ইউসুফের হাত ধরে জঙ্গি খাতায় নাম লেখায়। বর্ধমানের শিমুলিয়া মাদ্রাসায় মৌলানা ইউসুফের হাতে নেয় প্রশিক্ষণ। সেই সময় নাসিরুল্লার কাছ থেকে পায় বোমা বানানোর প্রশিক্ষণও। সেই মতিনকে জেরা করেই আরিফুলের নাম পায় গোয়েন্দারা। মতিনের মতোই সেও অসমের বরপেটার বাসিন্দা। পুলিশ জানতে পারে বয়স মাত্র ২২ হলেও, অত্যন্ত ভয়ঙ্কর এই আরিফুল। তাকে জেরা করে মসিবুর রহমান ওরফে ফারুক এবং রুহুল আমিনের খোঁজ পায় পুলিশ।

বহু খোঁজখবর চালানোর পর অগাস্ট মাসে কর্নাটকের রামাগাড়া থেকে ধরা পড়ে কওসর। তখন সে মনিরুল ছদ্মনামে ছিল। NIA জানতে পারে সে আর কেউ নয় জাইদুল ইসলাম ওরফে বোমারু মিজান। সে ভারতে কাজ করছিল জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া(JMI)-র প্রধান হিসাবে। যদিও ভারতে তার ছদ্মনাম কওসর। জামাতুল মুজাহিদিন প্রধান সালাউদ্দিন বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ মিজানকে দায়িত্ব দিয়েছিল সংগঠনের ভারতীয় শাখার। কর্নাটকের কোলারের একটি টেকনোলজি ইন্সটিটিউটে চাকরি নিয়ে গোপনে চালিয়ে যাচ্ছিল সংগঠনের মডিউল তৈরির কাজ। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। NIA-এর হাতে ধরা পড়ে সে। তার গ্রেপ্তারির খবর পেয়েই তৎপর হয় কলকাতা পুলিশের STF। কলকাতার গোয়েন্দারা তাকে হাতে পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল। আসলে বাংলাদেশ সীমান্তে থাকা এই পশ্চিমবঙ্গে সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মের বেশ কয়েকটি খটকার জবাব দিতে পারে কওসর, এমনটাই ছিল গোয়েন্দাদের ধারণা। মনে করা হচ্ছিল, জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়ার যাবতীয় তথ‍্য দিতে পারে সেই।

জুলাইয়ে NIA কেরালার মালাপ্পুরমের একটি বাঙালি শ্রমিক কলোনি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় দু'জনকে। বুদ্ধগয়ায় বোমা বিস্ফোরণ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের নাম আবদুল করিম(১৯) ওরফে ছোট্টা এবং মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে তুহিন। ছোট্টার বাড়ি মুর্শিদাবাদের ইলিজাবাদে। আর তুহিন বীরভূমের বাসিন্ধা। তুহিন জামাতের অন্যতম মাথা। সে বিস্ফোরক বানাতে ওস্তাদ। খোদ মিজান তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে বলে খবর। মিজান তুহিনের উপর নির্ভর করত অনেকটাই। একমাত্র সেই জানত মিজানের অবস্থান। তাকে জেরা করেই বোমারু মিজানের খোঁজ পায় NIA। তারপরই বেঙ্গালুরু থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরের রামাগাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মিজানকে। জানা যায়, চলতি বছরেই সে রামাগাড়ায় আসে। আমির খান নামে জনৈক বাসিন্দার বাড়িতে ভাড়ায় থাকত সে।তার কাছে পাওয়া যায় বোমা বানানোর সার্কিট, বিস্ফোরক, ল‍্যাপটপ। তবে শুধু বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণ মামলা নয়। মিজান খাগরাগড় কাণ্ডেরও মূল অভিযুক্ত। একটা সময় তার ১০ লাখ টাকা মাথার দাম ঠিক করে পোস্টার দেয় NIA। কিছুতেই তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। সূত্র জানাচ্ছে, এর মাঝে বসে থাকেনি মিজান। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, মালদা সহ একাধিক জায়গায় তৈরি করেছে জামাত-উল-মুজাহিদিন ইন্ডিয়ার মডিউল।

For All Latest Updates

ABOUT THE AUTHOR

...view details