কলকাতা, 19 ডিসেম্বর : সাম্প্রতিক কালে রাজ্য় রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় পালাবদল ঘটে গেল শনিবার। আজ থেকে প্রায় 13-14 বছর আগে নন্দীগ্রামে ভূমিরক্ষা আন্দোলনের পুরোধা শুভেন্দু অধিকারী যোগদান করলেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। তৃণমূল কংগ্রস থেকে হেভিওয়েট এই নেতাকে ভাঙিয়ে আনতে পেরে স্বাভাবিক ভাবে আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছে অমিত শাহদের। বিজেপির অনেকে মনে করছেন 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এটাই তাদের মাস্টার স্ট্রোক। কারণ, এর ফলে মমতার একেবারে ঘনিষ্ঠ বৃত্ত থেকে একজনকে নিজেদের দিকে টেনে আনা গেল। কিন্তু সত্য়িই কি তাই! বাংলার রাজনীতি নিয়ে যাঁরা খোঁজ খবর রাখেন, তাঁরা অবশ্য় গেরুয়া শিবিরের এই যুক্তির সঙ্গে সহমত হতে পারছেন না।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য রাজনীতির অবশ্যই একজন গুরুত্বপূর্ণ কুশীলব। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা নিয়েও কোনও প্রশ্ন ওঠে না। কিন্তু তিনি কি কখনও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বৃত্তের মধ্য়ে ছিলেন? এই প্রশ্ন তুলেই গেরুয়া শিবিরের মতের শরিক হতে পারছেন না রাজ্য রাজনীতির ওয়াকিবহাল মহল।
কেন এই প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, বরাবরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে কয়েকটি মুখ পাকাপাকি ভাবে দেখা গিয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তালিকাটা বদলেছে। যেমন- বাম আমলে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসের নেত্রী সেই সময় তাঁর কোনও না কোনও কর্মসূচির ছবি খুঁজে বের করলে দেখা যাবে মুকুল রায়, মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায়রা রয়েছেন। পরবর্তী কালে মমতা যখন তৃণমূল তৈরি করলেন বা পরে যখন মুখ্যমন্ত্রী হলেন তখনও অনেকটা সময় এঁদেরই দেখা গিয়েছে বরাবর। সঙ্গে ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাসদের মতো আরও কয়েকজন নেতা সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি হোক বা মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি সফর, সর্বত্রই দেখা গিয়েছে তাঁদের। এমনকী অধিকাংশ বিদেশ সফরেও সঙ্গী হয়েছেন এঁরা।
আরও পড়ুন : মেদিনীপুরের ময়দানেই গেরুয়া শুভেন্দুর নব-উত্থান
আবার উলটোদিকে সাংগঠনিক ভাবে যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বরাবর পরামর্শ দিয়েছেন, সেই তালিকায় সুব্রত বক্সি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মুকুল রায়রা ছিলেন। পরে মুকুল রায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে নেত্রী তথা দলের দূরত্ব তৈরি হয়। পরে তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন।