কলকাতা, 24 অগস্ট : কয়লাপাচার চক্রের কিং পিন অনুপ মাঝি (Anup Majhi) ওরফে লালা-সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার খেসারত ৷ আতঙ্কে দিন কাটাতে হচ্ছে গ্রামবাসীকে ৷ তাঁদের অভিযোগ, লালার বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ায় নিত্যদিন প্রাণনাশের হুমকি শুনতে হচ্ছে ৷ আপাতত এই মামলার শুনানি চলছে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) ৷ সেখানেই বিচারপতি দেবাংশু বসাকের এজলাসে মামলাকারীদের আশঙ্কা ও আতঙ্কের কথা তুলে ধরেছেন তাঁদের আইনজীবী বৈদুর্য্য ঘোষাল ৷
আরও পড়ুন :সিল করা হল লালার সল্টলেকের বাড়ি
আদালত সূত্রে খবর, 1991 সালে বাঁকুড়ার মেজিয়ায় মাটির নীচে কয়লার সন্ধান মেলে ৷ তারপর ইসিএলের মাধ্যমে শুরু হয় কয়লা উত্তোলন ৷ পাশাপাশি, বাড়তে থাকে কয়লা মাফিয়াদের দাপট ৷ বেআইনিভাবে খনি খুঁড়ে কয়লা লুট করে নিয়ে যায় তারা ৷ স্থানীয় বাসিন্দারা এই বিষয়ে নানা জায়গায় অভিযোগ জানান ৷ চুরি ঠেকাতে পুলিশ ক্যাম্পও করা হয় এলাকায় ৷ তাতে কিছুটা হলেও কমে মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য ৷ কিন্তু 2015 সালে হঠাৎই সেই পুলিশ ক্যাম্প তুলে দেওয়া হয় ৷
এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন গ্রামের মানুষ ৷ 2017 সালে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন তাঁরা ৷ সেই মামলা চলাকালীন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি জেলাশাসককে সব কিছু খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন ৷ তারপরও কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ ৷ এদিকে, যথেচ্ছভাবে কয়লা চুরির ফলে মেজিয়ার ওই এলাকার মাটি ক্রমশ আলগা হতে থাকে ৷ ধসে যায় কৃষিজমি ৷ ভাঙতে শুরু করে গ্রামের রাস্তা, মাটির বাড়ি ৷ ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই ফের মামলা করেন ভুক্তভোগীরা ৷
আরও পড়ুন :লালা ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীর বাড়িতে তল্লাশি সিবিআইয়ের
চলতি বছর আবারও একই বিষয়ে মামলা রুজু করেন গ্রামের মানুষ ৷ তার আগে এপ্রিলে সিবিআই সহ পুলিশেও অভিযোগ জানায় । সোমবার ও মঙ্গলবার, পর পর দু’দিন মামলাটির শুনানি হয়েছে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের এজলাসে ৷ বুধবারও মামলার শুনানি রয়েছে ৷ সিবিআই-এর কাছে মামলা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছেন বিচারপতি ৷ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এতদিন এ নিয়ে কী কী পদক্ষেপ করেছে, তাও জানতে চেয়েছেন তিনি ৷ যদিও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফে আদালতকে জানানো হয়েছে, তারা গ্রামবাসীর সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা বলেছে ৷ মামলার তদন্ত কত দূর এগিয়েছে, তা কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুরকে জানাতে বলেছে আদালত ৷ এই মামলায় তিনিই সিবিআই-এর আইনজীবী ৷