কলকাতা, 9 অগস্ট : পুজোর পরই চালু হতে পারে টালা ব্রিজ । বিটি রোড-সহ উত্তর কলকাতার একটা বড় অংশে যানজটের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন শহরবাসী ।
কলকাতা পৌরনিগমের প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য এবং তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক অতীন ঘোষ কিছুদিন আগেই টালা ব্রিজের নির্মাণ কাজ পরির্দশনে করেন । তিনি বলেন, "কাজ খুবই জোর গতিতে চলেছে । কাজ প্রায় 70 শতাংশ শেষ । শুধু রেলের ঝুলন্ত অংশটি তৈরি হতে বাকি আছে । আশা করছি আর 6 মাসের মধ্যেই এই ব্রিজ সাধারণ যাত্রীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে ৷"
আরও পড়ুন :Work Pods in Newtown : ওয়ার্ক ফ্রম হোম-এ ক্লান্ত ? শীঘ্রই চালু হচ্ছে ওয়ার্ক পড
এর আগে টালা ব্রিজ দুই লেনের ছিল ৷ এবার তা হয়ে যাচ্ছে চার লেনের ৷ দক্ষিণের মাঝেরহাটের মতোই উত্তরের টালা ব্রিজ 365 কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হচ্ছে । ইতিমধ্যে ব্রিজের নির্মাণ প্রায় অর্ধেকের বেশি হয়ে গিয়েছে ৷ রেলের উপরের অংশের কাজ ছাড়া দু’দিকের অবশিষ্ট অংশের র্যাম্প নির্মাণ শেষ করেছেন ভারপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ররা ।
টালা ব্রিজের সূচনা হয়েছিল 1962 সালে । উত্তর কলকাতার পুরনো ব্রিজগুলির মধ্যে এটি অন্যতম । মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের পর রাজ্য সরকার টালা ব্রিজ সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেয় । ঠিক হয় পুরনো সেতু ভেঙে ফেলে একেবারে নতুন সেতু তৈরি করা হবে ৷ 2020 সালের 31 জানুয়ারি থেকেই টালা ব্রিজ সংস্কারের কাজ শুরু হয় । তার আগের বছর 22 ডিসেম্বর 610 মিটার দীর্ঘ এই টালা সেতুর নয়া নকশা রেল অনুমোদন করে ৷ তার পরই সংস্কারের কাজ শুরু হয় বলে জানা গিয়েছে ৷
আরও পড়ুন :East West Metro : প্রায় প্রস্তুত শিয়ালদা স্টেশন, শনিতে ট্রেন ঢুকবে টানেলে
টালা ব্রিজের নিচে রেললাইন রয়েছে ৷ সেই লাইনের একটি অংশ সার্কুলার রেলের সঙ্গে যুক্ত ৷ অন্য একটি অংশ দিয়ে মালবাহী ট্রেন চিৎপুর ইয়ার্ডের দিকে যায় ৷ পুরনো সেতুর নিচে রেল লাইনের মাঝে পিলার ছিল । কিন্তু এবার লাইনের উপরে 240 মিটার অংশের পুরোটাই কেবলের উপরে ঝুলবে । বাকি 180 মিটার পিলারের উপর থাকবে ।
এছাড়া পাইকপাড়া দিকে অ্যাপ্রোচ রোড হবে 190 মিটার । চিৎপুরের দিকে অ্যাপ্রোচ রোড হবে 187 মিটার ৷ নতুন টালা ব্রিজটি 800 মিটার লম্বা ও 24 মিটার চওড়া হচ্ছে । পুরনো সেতুর ভারবহনের ক্ষমতা ছিল মাত্র 150 টন । কিন্তু এবার নয়া সেতু 385 টন ভার বহন করতে পারবে বলে পূর্ত দফতর জানিয়েছে ।
আরও পড়ুন :West Bengal DGP : সম্ভাব্য ডিজিপি তালিকায় সুমনবালা সাহু, প্রথম মহিলা মহানির্দেশক পেতে পারে বাংলা
টালা সেতু পরিদর্শনে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা জানতে পারেন, পলতা থেকে টালা জলট্যাঙ্কের জন্য তিনটি বড় পাইপ লাইন আসা নিয়ে জটিলতা রয়েছে । এখনও ওই জলের লাইনের জন্য রেললাইনের উপর দিয়ে পৃথক সরু সেতু নির্মাণের সবুজ সংকেত পাওয়া যায়নি । যদিও ওই জলের লাইনের বিকল্প রুটের ফাইনাল নকশা তৈরি হয়ে গিয়েছে । সেই অনুমতি পেলে সেতুর ঝুলন্ত অংশের নির্মাণের পাশাপাশি জলের মোটা পাইপ লাইনের কাজও শুরু হবে বলে অতীন জানান ।
প্রসঙ্গত, টালা ব্রিজ শ্যামবাজার থেকে বিটি রোড ধরে উত্তর দিকে যাওয়ার অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম ৷ সেই সেতু বন্ধ থাকা গত দেড় বছরে সাধারণ মানুষকে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ৷ টালার বাসিন্দা নবকুমার দত্ত বলেন, ‘‘শ্যামবাজার থেকে যদি ডানলপের দিকে যাই । তা হলে অনেকটা হেঁটে গিয়ে বাস ধরতে হচ্ছে । এটা খুবই সমস্যা হচ্ছে । এই ব্রিজটা চালু হলে খুবই উপকার হবে । সাধারণ মানুষের খুবই সুবিধা হবে ।’’
আরও পড়ুন :21 July : 28 বছর পরেও মৃতদের পরিবারের কান্না কানে বাজে, অতীনের 21-এর স্মৃতি
ওই এলাকার অন্য এক বাসিন্দা জয়েন্ত রায় বলেন, ‘‘বৃষ্টি হলে এই এলাকায় খুবই সমস্যা হচ্ছে । যতদিন না সেতুর কাজ শেষ হবে, ততদিন আমাদের খুবই সমস্যা হবে । এখন ব্রিজটি ভাঙার কারণে শ্যামবাজার পর্যন্ত হেঁটে বাস ধরতে হচ্ছে । এটা খুবই সমস্যার । তবে শুনেছি, এটা 4 লেনের রাস্তা হবে । যতক্ষণ না চালু হচ্ছে । সেটা বুঝতে পারছি না ।’’