শিলিগুড়ি, 24 ফেব্রুয়ারি : ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ ঘোষণার পর থেকেই টানাপোড়নে দিন কাটছে শিলিগুড়ির বেশ কয়েকটি পরিবারের । চিকিৎসাবিজ্ঞান পড়তে শিলিগুড়ি থেকে ইউক্রেনে পাড়ি দিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন পড়ুয়া (Several students from Siliguri are stuck in Ukraine due to this crisis) । যুদ্ধ ঘোষণার পরে বেশ কয়েকজন পরিবারের কাছে ফিরে এলেও আটকে রয়েছেন অনেকে ৷ আর তাতেই এখন আতঙ্কে দিন কাটছে সেই পড়ুয়াদের পরিবারের সদস্যদের । আর যাঁরা ফিরেছেন, তাঁরা এখনও আতঙ্কের রেশ কাটিয়ে উঠতে পারেননি ৷
তাঁদেরই একজন বিতম বসু৷ বৃহস্পতিবারই ইউক্রেন থেকে শিলিগুড়ির বিতম বসু ৷ ইউক্রেনের সানিভিস্ট অঞ্চলের বুকোভিয়ান স্টেট মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া বিতম ৷ বাড়ি শিলিগুড়ি ইস্টার্ন বাইপাস সংলগ্ন হিমালয় কন্যা আবাসনে । তিনি বলেন, "প্রথমে ওখানে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিকই ছিল । পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে এবং রাতারাতি সেখানে কার্ফু জারি হয়ে যায় । আমরা ভারতীয় দূতাবাসের সেরকম কোনও সাহায্য পাইনি । যে ক’জন ফেরত আসতে পেরেছি সবটাই ভারত সরকারের সহযোগিতায় । পরিস্থিতি সেখানে ধীরে ধীরে আরও খারাপ হচ্ছে । আমি বাড়ি ফিরে এসেছি ঠিকই, কিন্তু আমার মত বহু পড়ুয়া সেখানে আটকে রয়েছেন । ভারত সরকার যেন তাঁদের নিরাপদে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করে (Ukraine Return Student Urges Government to Assist Others Still in Ukraine) ।"
তাঁর আরও দুই সহপাঠী শিলিগুড়ির বাবুপাড়া বাসিন্দা অনন্যা মৈত্র এবং শিলিগুড়ি পৌরনিগমের 14 নম্বর ওয়ার্ডের আশ্রমপাড়ার বাসিন্দা সুকৃতি দেব ফিরে এসেছেন দেশে । যদিও বাকি দুই সহপাঠী দিল্লিতে থেকে গিয়েছেন পরীক্ষার জন্য । আগামিকাল তাদের শিলিগুড়ি ফিরে আসার কথা রয়েছে । অনন্যা মৈত্রের মা রাজশ্রী মৈত্র বলেন, "আমরা খুব আতঙ্কিত ছিলাম । যুদ্ধ ঘোষণার পর থেকেই বারবার মেয়েকে বাড়ি ফেরত আসার জন্য বলে আসছিলাম । কিন্তু এখনও অনেক পড়ুয়ারা ওখানে আটকে রয়েছে । ভারত সরকার যেন তাদের নিরাপদে বাড়ি ফেরত নিয়ে আসার ব্যবস্থা করে এই আবেদনই জানাচ্ছি ।"
অন্যদিকে শিলিগুড়ির চিকিৎসক তথা হাকিম পাড়ার বাসিন্দা পীযূষকান্তি মালাকারের একমাত্র ছেলে প্রীতম ইউক্রেনে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে আটকে রয়েছেন । ফোনে-ভিডিয়ো কলে তাঁর যোগাযোগ রাখছে পরিবার ৷ তার পরও তাদের উৎকণ্ঠা কাটছে না ৷ দু'বছর আগে প্রীতম ইউক্রেনের পলটাবা মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে চিকিৎসাবিজ্ঞান পড়তে গিয়েছিলেন । অগস্টে বাড়ি ফেরত আসার কথা ছিল তাঁর । তার আগেই আচমকা যুদ্ধ পরিস্থিতি চিন্তায় ফেলে দিয়েছে পুরো পরিবারকে ৷ তাই প্রীতমের বাবা আপাতত ছেলেকে ফেরানোর ব্যবস্থার উপায় খুঁজে যাচ্ছেন ৷