কলকাতা, 27 জুন : ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে (Fake Vaccination Case) জড়িত থাকার অভিযোগ নিজেদের গা থেকে ঝেড়ে ফেলতে একে-অপরের ঘাড়ে দোষ চাপালেন তৃণমূল কংগ্রেসের দুই নেতা (TMC Leaders) । এই ঘটনাকে সরকার বিরোধিতায় নিজেদের অস্ত্র করেছে বিজেপি ৷
ভুয়ো টিকাকরণ কাণ্ডে একদিকে নাম জড়িয়েছে তালতলা তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের (INTTC) নেতা অশোক চক্রবর্তীর (Ashok Chakraborty) । অপরদিকে, উঠে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেসের ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর (Ward Coordinator) ইন্দ্রাণী সাহা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Indrani Saha Banerjee) নামও । এই নিয়ে অবশ্য একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন দলের এই দুই নেতা ।
অশোক চক্রবর্তীর অভিযোগ, 2020 সালে কালীপুজোর আগে তাঁর এলাকায় একটি রক্তদান শিবিরে তাঁর সঙ্গে দেবাঞ্জন দেবের (Debanjan Deb) আলাপ হয় । ওই ক্লাবের কমিটিতে রয়েছেন স্থানীয় ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর ইন্দ্রাণী সাহা বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর মাধ্যমেই দেবাঞ্জনের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয় বলে দাবি করেছেন অশোক চক্রবর্তী । তিনি এও অভিযোগ করেন, স্থানীয় একটি শেড তৈরিতে টাকাও দিয়েছিল দেবাঞ্জন ।
আরও পড়ুন:শহরের স্কুলগুলিতে স্মার্ট অনলাইন ক্লাস চালুর পরিকল্পনা ছিল দেবাঞ্জনের
যদিও এই অভিযোগ শোনামাত্রই তা খারিজ করে দিয়েছেন ইন্দ্রাণী সাহা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি জানান, ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সঙ্গে দেবাঞ্জন দেবের কোনও যোগাযোগ নেই। তাঁর কথায়, "আমি তাঁকে কোনওদিন দেখিইনি । আমার মোবাইলের কল রেকর্ড ঘেঁটে দেখলেও দেখতে পাবেন, কখনও আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলিনি । তবে আমার ছেলেরা বলেছিল, তাঁদের দেবাঞ্জন চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিল । এর চেয়ে বেশি কিছু আমার জানা নেই ।"
ইন্দ্রাণীর অভিযোগ, ব্যক্তিগত শত্রুতা থেকেই অশোক চক্রবর্তী তাঁর নাম দেবাঞ্জন দেবের সঙ্গে জড়িয়ে দিতে চাইছেন । তাঁর দাবি, এই অবস্থায় পুলিশের উচিত প্রকৃত দোষীকে চিহ্নিত করা । এর জন্য পুলিশকে সবরকম সাহায্য করতেও তিনি প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ইন্দ্রাণী ।
আরও পড়ুন:পুরনিগমকে অন্ধকারে রেখে কীভাবে ভুয়ো টেন্ডার-ওয়ার্ক অর্ডার দিল দেবাঞ্জন ?
এদিকে অশোক চক্রবর্তী আবার বলেছেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার ভাবনাচিন্তা করছেন । প্রয়োজনে তিনি সুপ্রিম কোর্ট বা হাইকোর্টকে সব রকম তথ্য দিতে প্রস্তুত । তবে বিষয়টি নিয়ে প্রকৃত তদন্ত হোক, চাইছেন তিনিও ।
তৃণমূল কংগ্রেসের এই দুই নেতার তু তু ম্যায় ম্যায়ের মধ্যেই এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কলকাতা পৌরনিগমের মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তিনি বলেছেন, "আমারা যাঁরা জনতার কাজ করি, তাঁদের খুব সহজেই কোনও ঘটনায় জড়িয়ে দেওয়া যায় । তার অর্থ এই নয়, আমরা দোষী । ইন্দ্রাণীর ক্ষেত্রেও তেমনই হয়েছে । পুলিশ তদন্ত করছে । আমাদের সকলের উচিত, সেই তদন্তের উপর ভরসা রাখা । সত্যিই যদি কেউ দোষী হয়, আইন আইনের পথে চলবে ।"
আরও পড়ুন:নিজের বাবাকেও কি ভুয়ো ভ্যাকসিন দিয়েছিল দেবাঞ্জন ? উঠছে প্রশ্ন
যদিও এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার (Jay Prakash Majumdar) বলেছেন, "শুধু ইন্দ্রাণী সাহা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অশোক চক্রবর্তী নন, এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে রয়েছে । কান টানলেই মাথা আসবে । তবে রাজ্যের পুলিশকে দিয়ে সে কাজ হবে না । তারা বরং সবকিছু ঢাকার চেষ্টা করবে । সে কারণেই আমরা সিবিআই তদন্ত চাইছি । সিবিআই তদন্ত হলেই প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হবে ।"