কলকাতা, 17 মে : নারদ স্টিং অপারেশন মামলায় তৃণমূলের কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই ৷ আজ তাঁকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে গিয়ে অ্যারেস্ট মেমোতে সই করায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ৷ তারপরেই সরকারিভাবে জানানো হয় নারদ স্টিং অপারেশনে টাকা নেওয়ার অভিযোগে মদন মিত্রকে গ্রেফতার কথা জানানো হয় ৷ মদন ছাড়াও নারদকাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে ৷ সেই সঙ্গে তৎকালীন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও আজ গ্রেফতার করা হয়েছে ৷
2016 সালে বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে বিজেপির তরফে নারদের এই স্টিং অপারেশন প্রকাশ্যে আনা হয় ৷ যেখানে দেখা গিয়েছিল কোনও কিছুর সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নামে ম্যাথু স্যামুয়েলের থেকে টাকা নিচ্ছেন মদন মিত্র ৷ সেই মামলায় দীর্ঘ 5 বছরের তদন্তের আজ মদন মিত্রকে গ্রেফতার করল সিবিআই ৷ তবে, জন প্রতিনিধি মদন মিত্রের জেল যাত্রা এই প্রথম নয় ৷ এর আগে সারদা কাণ্ডে 2 হাজার 459 কোটি টাকার তছরুপের মামলায় প্রায় 2 বছর জেল খাটতে হয়েছিল মদন মিত্রকে ৷
প্রসঙ্গত, 2014 সালে তৃণমূলের প্রথম সরকার আসার পর সারদা চিটফান্ডে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে ৷ লক্ষ লক্ষ মানুষের সঞ্চয়ের টাকা তছরুপের অভিযোগ ওঠে সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের বিরুদ্ধে ৷ যেখানে রাজ্যের তৎকালীন পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রের বিরুদ্ধে সেই টাকার ভাগ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ৷ আর তার জেরে 2014 সালের 12 ডিসেম্বর মদন মিত্রকে গ্রেফতার করে সিবিআই ৷ হাজার চেষ্টা করেও সেই সময় সিবিআই এর জাল কেটে বেরতে পারেননি তিনি ৷ ফল 22 মাস জেলে কাটাতে হয় তাঁকে ৷
এত বড় দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এলেও, মদন মিত্রের উপর আস্থা হারাননি তাঁর দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ 2016 সালে জেলে থাকা অবস্থায় বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে কামারহাটি বিধানসভার টিকিট পান তিনি ৷ মদন মিত্রের হয়ে প্রচারে নামেন তাঁর পুত্রবধূ ৷ তবে, ভোটে জিততে পারেননি তিনি ৷ বাম ও কংগ্রেসের জোট প্রার্থী মানস মুখোপাধ্যায়ের কাছে হারতে হয় তাঁকে ৷ মন্ত্রিত্ব আগেই গিয়েছিল ৷ 2016 সালে হারের পর বিধায়ক পদও হারাতে হয়েছিল ৷ তাঁকে বোঝা গিয়েছিল, সারদাকাণ্ডে তছরুপে যুক্ত থাকায় জেলযাত্রা এবং বিধানসভা ভোটের আগে নারদ স্টিং অপারেশনে ফের টাকা নেওয়ার ভিডিয়ো ৷ সব মিলিয়ে কামারহাটির ভোটাররা মদন মিত্রকে মেনে নেয়নি ৷