কলকাতা, 21 অগস্ট : ভোট পরবর্তী হিংসার (Post Poll Violence) ঘটনায় সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) ৷ কিন্তু হাইকোর্টের এই রায়ের সঙ্গে বাংলার জনজীবনের কোনও সম্পর্ক নেই ৷ এমনটাই মনে করে তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) ৷
আজ, শনিবার শাসক দলের মুখপত্র জাগোবাংলার (Jagobangla) সম্পাদকীয়তে এই মতামত প্রকাশ করা হয়েছে ৷ একই সঙ্গে সেখানে স্পষ্ট করা হয়েছে যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সিবিআই তদন্তে এতটুকু উদ্বিগ্ন নয় তৃণমূল কংগ্রেস ৷ সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘আমরা এইটুকু আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি, তৃণমূল এতটুকু উদ্বিগ্ন নয় ৷’’
আরও পড়ুন :Opposition Meet : কঠিন চ্যালেঞ্জ, একজোট হলে পারব; বিরোধী বৈঠকে বার্তা সোনিয়ার
কেন তৃণমূল কংগ্রেস এই রায় নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়, সেই ব্যাখ্যাও ওই সম্পাদকীয়তে করা হয়েছে ৷ লেখা হয়েছে, ‘‘21টি মৃত্যুর ঘটনার 16টিই তৃণমূল কর্মীর, কেন উদ্বিগ্ন হব আমরা ? হোক তদন্ত ৷’’
প্রসঙ্গত, গত 2 মে পশ্চিমবঙ্গের এবারের বিধানসভা নির্বাচনের (West Bengal Assembly Election) ফল বের হয় ৷ তাতে দেখা যায় তৃণমূল কংগ্রেস আসন সংখ্যার নিরিখে ডাবল সেঞ্চুরি করে ক্ষমতায় ফিরেছে ৷ বিজেপির (BJP) অভিযোগ, তার পর থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা তাদের দলের নেতা-কর্মীদের উপর অত্যাচার শুরু করে ৷ অনেককে খুন করা হয় ৷ বেশ কয়েকজন ধর্ষিতা হয়েছেন ৷ অনেকের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে ৷ বহু মানুষ ঘরছাড়া হন ৷
জাগোবাংলায় প্রকাশিত সম্পাদকীয় আরও পড়ুন :Mamata Banerjee : সোনিয়ার বৈঠকে কৃষি আইন বাতিলের দাবি, ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক মমতার
এই নিয়ে রাজ্যপাল থেকে কেন্দ্রীয় সরকার, সর্বত্র দরবার করে ভারতীয় জনতা পার্টি ৷ এমনকী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah), রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ-সহ (Ramnath Kovind) অনেকের কাছে এই নিয়ে নালিশ জানান স্বয়ং রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar) ৷
অন্যদিকে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে ৷ আদালতের নির্দেশে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (NHRC) ৷ কমিশনের রিপোর্টে কার্যত কাঠগড়ায় তোলা হয় তৃণমূল কংগ্রেস ও শাসক দলের নেতাদের ৷ তার পর বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে গুরুতর অভিযোগের তদন্ত সিবিআইকে (CBI) দিয়েছে ৷ আর কম গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগগুলির তদন্তে সিট গঠন করা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন :Dilip Ghosh : সিপিএম, কংগ্রেসের মতো অবস্থা হবে তৃণমূলেরও, ভবিষ্যদ্বাণী দিলীপ ঘোষের
কিন্তু সেই দিন থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি ৷ কেন তৃণমূল এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল ৷ এদিনের সম্পাদকীয়তে সেই ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে ৷ লেখা হয়েছে, ‘‘আমরা বলেছিলাম, শীর্ষ নেতৃত্ব দেখছেন ৷ গোটা রায় খতিয়ে দেখে জানানো হবে ৷ তৃণমূল কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব যা বলার যথা সময়ে বলবেন ৷ আইনেও যা যা করণীয় করা হবে ৷’’
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বরাবর অস্বীকার করেছেন ৷ নির্বাচন কমিশনের অধীনে যখন প্রশাসন ছিল, তখন অশান্তির ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন ৷ তিনি তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর কোনও অশান্তি হয়নি বলে মমতার দাবি ছিল ৷ এদিন জাগোবাংলায় প্রকাশিত হওয়া উত্তর সম্পাদকীয়তে সেটাও লেখা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন :Bengal BJP : পুজোর পরে রাজ্যজুড়ে তৃণমূল বিরোধী আন্দোলন, নীল নক্সা তৈরি করছে বিজেপি