কলকাতা, 30 জানুয়ারি : 2 ফেব্রুয়ারি হতে চলেছে 2020 সালের রাজ্য জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষা (WBJEE) । গত বছর পরীক্ষা ব্যবস্থাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রের ইনচার্জের কাছে একটি করে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্টর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষা বোর্ড (WBJEEB)। এই বছর পরীক্ষা ব্যবস্থাকে আরও নিশ্চিদ্র করতে বোর্ড অবজ়ার্ভাদের সংখ্যা বাড়ালো বোর্ড।
গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন পরপর ছ'টি বিষয়ের প্রশ্নপত্র সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে গেছিল । তা থেকে শিক্ষা নিয়ে সচেতন হয়ে রাজ্য জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষা বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে একটি করে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্টর যন্ত্র দেওয়া হবে । সেন্টার ইনচার্জ পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রতিটি রুমে ওই যন্ত্রটি নিয়ে ঘুরবেন । পরীক্ষা হলে কোনও মোবাইল ফোন বা ব্লু-টুথ ডিভাইস সক্রিয় থাকলে তা জানান দেবে এই ডিটেক্টর । যদিও গত বছর প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে সেই যন্ত্র পৌঁছে দিতে পারেনি বোর্ড । তাই এ বছর সব ক'টি পরীক্ষাকেন্দ্রে যন্ত্রটি পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য জয়েন্ট বোর্ড । সে বিষয়ে রাজ্য জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রার দিব্যেন্দু কর বলেন, "প্রত্যেক পরীক্ষাকেন্দ্রে সেন্টার ইনচার্জদের কাছে একটি করে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্টর থাকবে । যাতে পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনও রকম ইলেকট্রনিক গ্যাজেট কেউ যদি ব্যবহার করেন সেই যন্ত্রের দ্বারা সেটা ধরা পড়বে । ভ্রাম্যমাণ অবজ়ারভারদের হাতেও এটা থাকবে ।"
শুধু যন্ত্র নয়, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য এবার মানববলের উপরও ভরসা করছে রাজ্য জয়েন্ট বোর্ড । এই বছর পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোতে বাড়ানো হচ্ছে বোর্ড অবজ়ার্ভারদের সংখ্যা । এমনটাই জানাচ্ছেন দিব্যেন্দু কর । তিনি বলেন, "এই বছর আমরা অধিক সংখ্যক বোর্ড অবজ়ারভার বা বোর্ড রিপ্রেজেন্টেটিভ রেখেছি । জয়েন্ট বোর্ডের তরফ থেকে নিয়োগ করেছি যাতে পরীক্ষাটা সুস্থভাবে সম্পন্ন হয় । আগে প্রত্যেকটা সেন্টারে একজন করে বোর্ড অবজ়ার্ভার থাকতেন, সর্বোচ্চ দু'জন থাকতেন । এবার অনেক সেন্টারে একের অধিকও রাখা হয়েছে । এবারে গুরুত্ব বুঝে আমরা কোনও কোনও সেন্টারে একই রেখেছি, কোনও জায়গায় বাড়িয়েছি । বেশিরভাগ জায়গাতেই অবজ়ার্ভারের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে । "
এ বছর এই পরীক্ষা এগিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে । গত বছর 26 মে পরীক্ষা হয়েছিল । ভিন রাজ্যে পড়ুয়াদের চলে যাওয়ার প্রবণতা রুখতেই এ বছর এই সিদ্ধান্ত ৷ এই বছর মোট পরীক্ষার্থী সংখ্যা 88 হাজার 800 জন । পরীক্ষাকেন্দ্র অসম ও ত্রিপুরা মিলিয়ে মোট 219টি । তবে, গত বছরের তুলনায় এ বছর কমেছে পরীক্ষার্থী সংখ্যা । পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমায় পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যাও কমেছে । পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা কমানোর বিষয় রাজ্য জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রার দিব্যেন্দু কর আগেই বলেছিলেন, " JEE মেনের প্রার্থীও অনেক কমেছে । এ'টা এখন সর্বভারতীয় ট্রেন্ড ।" আর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমায় স্বাভাবিকভাবে কমেছে পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা । তা নিয়ে দিব্যেন্দু কর বলেন, "আমরা বেছে বেছে পরীক্ষাকেন্দ্র নির্বাচন করেছি ৷ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা যেহেতু কম এটাও একটা কারণ । এছাড়া যে সমস্ত পরীক্ষা কেন্দ্রের পরিকাঠামো ভালো আছে সেগুলোকেই আমরা পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে গণ্য করেছি ।"
2 ফেব্রুয়ারি সকাল 11টা থেকে 1টা পর্যন্ত অংক পেপার এবং দুপুর 2টো থেকে বিকেল 5টা পর্যন্ত ফিজিক্স ও কেমিস্ট্রি পেপারের পরীক্ষা হবে । পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দিব্যেন্দু কর বলেন, "প্রত্যেক প্রার্থীদের বলা হচ্ছে তারা যেন 11 টার আগে নির্দিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে যায় । 11টার পরে কোনও ছাত্র-ছাত্রীকে পরীক্ষায় বসতে অনুমতি দেওয়া যাবে না । ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে কোনওভাবেই রিস্টওয়াচ বা কোনও ইলেকট্রনিক গ্যাজেট না নিয়ে আসে । তারা সঙ্গে অ্যাডমিট কার্ড ও তাদের ফটো আইডেন্টিটি আনবে । এ ছাড়া, রঙিন ছবির এক কপি আনতে হবে । ফর্ম ফিলাপের সময় যে ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি আনলেই ভালো ।"