পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

উচ্চমাধ্যমিকের দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা স্থগিতের দাবি শিক্ষক সমিতির

রাজ‍্যে বাড়ছে কোরোনা সংক্রমণের সংখ‍্যা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার, উচ্চমাধ্যমিকের স্থগিত হয়ে যাওয়া তিনদিনের পরীক্ষার দিন ঘোষণা করেছে ৷ এই পরীক্ষা হবে আগামী 2, 6 ও 8 জুলাই ৷ কিন্তু রাজ্য সরকারের এই ঘোষণা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ‍্যালয় শিক্ষক সমিতি ৷ সমিতির পক্ষ থেকে পরীক্ষা স্থগিত রাখার দাবি জানানো হয়েছে ৷ রাজ্যে কোরোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি করা হয়েছে ৷ যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়নের প্রস্তাবও রাখা হয়েছে ৷

teachers association
পরীক্ষা স্থগিতের দাবি শিক্ষক সমিতির

By

Published : Jun 17, 2020, 7:58 AM IST

কলকাতা, 16 জুন: রাজ‍্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী 2, 6 ও 8 জুলাই উচ্চমাধ্যমিকের স্থগিত হয়ে যাওয়া তিনদিনের পরীক্ষা হতে চলেছে‌। কিন্তু, রাজ‍্যে উত্তরোত্তর বাড়ছে কোরোনা সংক্রমণের সংখ‍্যা। এই পরিস্থিতিতে কী করে রাজ‍্য উচ্চমাধ্যমিকের দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা আয়োজন করছে? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে শিক্ষক মহলের একাংশ। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ‍্যালয় শিক্ষক সমিতির তরফ থেকে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি, দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা স্থগিত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে পুনরায় তার আয়োজন করার এবং সেটা সম্ভব না হলে বাকি থাকা বিষয়ের মূল্যায়নের জন্য বিকল্প পদ্ধতির প্রস্তাবও বিস্তারিতভাবে দেওয়া হয়েছে এই সমিতির তরফ থেকে‌।


গত শনিবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, জুলাই মাসেও স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে‌। সেই মর্মে গতকাল স্কুল শিক্ষা দপ্তরের সচিব মণীশ জৈন গতকাল বিজ্ঞপ্তিও জারি করে দিয়েছেন। যেখানে বলা হয়েছে, আগামী 31 জুলাই পর্যন্ত রাজ‍্যের সব সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত, সরকার পোষিত এবং প্রাইভেট স্কুলগুলি বন্ধ থাকবে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজ‍্যজুড়ে কোরোনা ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ‍্যা যেভাবে বাড়ছে তা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজ‍্যের তরফে। কিন্তু, স্কুলগুলি 31 জুলাই পর্যন্ত বন্ধ থাকলেও ঘোষণা অনুযায়ীই উচ্চমাধ্যমিকের দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার আয়োজন অব‍্যাহত রাখা হয়েছে।

সেই প্রেক্ষিতেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ‍্যালয় শিক্ষা সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু আজ শিক্ষামন্ত্রীকে যে চিঠি পাঠিয়েছেন তাতে বলেন, "21 মার্চ যখন বাকি তিন দিনের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা স্থগিত হয়েছিল তখন রাজ্যে কোরোনা সংক্রমণ যে জায়গায় দাঁড়িয়েছিল তার তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে আজ 16 জুন সেই কোরোনা সংক্রমণ অনেক বেশি আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে এবং আগামী 15 দিন পর এই কোরোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসার কোনও লক্ষণ নেই। এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রাধীন পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ কোন যুক্তিতে আগামী 2, 6 ও 8 জুলাই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার দ্বিতীয় পর্যায় আয়োজন করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে? গতকাল মাননীয় শিক্ষাসচিব আগামী 31 জুলাই পর্যন্ত রাজ্যের সমস্ত বিদ্যালয় বন্ধ থাকা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। এই পরিস্থিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় 2020 সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার দ্বিতীয় পর্যায় আয়োজনে প্রতিবাদ করছে এবং অতি দ্রুত তার স্থগিত রাখার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার দাবি জানাচ্ছে।"

তবে, শুধু পরীক্ষা স্থগিত রাখার দাবি জানানও হয়নি এই সমিতির তরফ থেকে। চিঠিতে কীভাবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার দ্বিতীয় পর্যায় নেওয়া যেতে তার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাঁদের প্রথম প্রস্তাব, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার দ্বিতীয় পর্যায় স্থগিতের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হোক এবং কোরোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করে পরিবর্তিত সূচি প্রকাশ করে পরীক্ষা গ্রহণ করা হোক। যদি তা না সম্ভব হয় তাহলে বিকল্প পথে পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়নের পথে হাঁটার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিস্তারিতভাবে বাকি থাকা বিষয়গুলির মূল‍্যায়ন বিকল্প পদ্ধতি কী হতে পারে তাও বলা হয়েছে চিঠিতে। মূলত ল‍্যাব নির্ভর বিষয়গুলির জন্য প্রাকটিক্যাল পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর, উচ্চমাধ্যমিকের অন্যান্য ইলেকটিভ বিষয় প্রাপ্ত নম্বরের 20 শতাংশ ও ক্লাসে উপস্থিতির 20 শতাংশের ভিত্তিতে মূল‍্যায়ণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ল‍্যাব নির্ভর নয় এমন বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে প্র‍্যাকটিক‍্যালের বদলে প্রজেক্টে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মূল‍্যায়নের কথা বলা হয়েছে। এই বিকল্প পথে মূল্যায়নের পরও কোনও পরীক্ষার্থী যদি সন্তুষ্ট না হয় তাহলে তাঁদের নম্বর ভালো করার জন্য কোরোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাবও রাখা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর পাশাপাশি এই দাবি ও প্রস্তাব সম্বলিত চিঠি উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি, স্কুল শিক্ষা দপ্তরের প্রধানসচিব ও দপ্তরের কমিশনারের কাছেও পাঠানো হয়েছে।




ABOUT THE AUTHOR

...view details