বাগুইআটি, 7 সেপ্টেম্বর: "আগামী রবিবারের মধ্যে রাজ্য সরকার যদি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ না দেয়, তাহলে মানুষকে আবেদন করব, তাঁরাই যেন সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে আদালতে জনস্বার্থ মামলা রুজু করেন ৷" বাগুইআটি জোড়া খুনের (Baguiati Double Murder) ঘটনায় এমনই মন্তব্য করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ৷
বাগুইআটিতে দুই ছাত্রকে অপহরণ করে খুনের ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই আসরে নেমেছেন রাজনীতির কারবারিরা ৷ গত 22 অগস্ট অতনু দে ও অভিষেক নস্কর নিখোঁজ হয় ৷ দুই ছাত্রের পরিবারের সদস্যদের দাবি, ঘটনার পরই স্থানীয় থানায় ছুটে গিয়েছেন তাঁরা ৷ এমনকী, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়েও হত্যে দিয়েছেন ৷ কিন্তু, তারপরও হুঁশ ফেরেনি পুলিশের ৷ অথচ, দুই ছাত্রের দেহ উদ্ধারের ঘটনা সামনে আসতেই তাঁদের বাড়ির সামনে ভিড় করতে শুরু করেছেন নেতা-মন্ত্রীরা ৷ এর আগে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন নিহত পড়ুয়াদের আত্মীয়, বন্ধু ও প্রতিবেশীরা ৷ তাতে অবশ্য দমেনি গেরুয়া শিবির ৷ বুধবার বাগুইআটি থানার সামনে রীতিমতো মঞ্চ বেঁধে বিক্ষোভ দেখায় তারা ৷ সেই কর্মসূচিতে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারীও ৷
আরও পড়ুন:বাগুইআটি কাণ্ডে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর, সাসপেন্ড আইসি
বিক্ষোভ মঞ্চ থেকে সরাসরি রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে (West Bengal Police) নিশানা করেন শুভেন্দু ৷ তাঁর অভিযোগ, "রাজ্য়ের আমজনতার প্রতি পুলিশের কোনও দায়বদ্ধতা নেই ৷ এদের দায়বদ্ধতা শুধুমাত্র পিসি-ভাইপো ও তাঁদের এজেন্টদের প্রতি ৷ তাই পিসি বেরোলে সাত হাজার এবং ভাইপো বেরোলে দু'হাজার পুলিশ লাগে ৷" কিন্তু, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় পুলিশকে পাওয়া যায় না ৷ এমনকী, পুলিশমন্ত্রী হওয়ায় সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কেও (Mamata Banerjee) কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন শুভেন্দু ৷ তিনি বলেন, "এত অপদার্থ পুলিশমন্ত্রী সারা ভারতে আর কোথাও নেই ৷"
শুভেন্দু অধিকারীর নিশানায় রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসন ৷ এদিকে, এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্তের (CBI Investigation) দাবি জানিয়েছেন নিহত দুই ছাত্রের অভিভাবক ৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সিআইডি তদন্তভার হাতে নিলেও তাতে যে তাঁদের ন্যূনতম ভরসা নেই, তা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সন্তানহারা বাবা-মায়েরা ৷ এদিন শুভেন্দু অধিকারীও সিবিআই তদন্তের দাবি তোলেন ৷ আর এই দাবি পূরণের জন্য সরাসরি জনতার দরবারের দ্বারস্থ হন তিনি ৷ শুভেন্দু বলেন, "পরিবার যদি কোনও মামলা না করে, তাহলে পশ্চিমবঙ্গের শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের এ নিয়ে জনস্বার্থ মামলা করা উচিত ৷ এই মামলা যে কেউ করতে পারে ৷ সিবিআই তদন্তের দাবিতে মামলা করা উচিত ৷ পুলিশের আসল চেহারা সকলের সামনে আসা উচিত ৷" আর সিআইডি তদন্ত প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতার ব্যাখ্যা হল, সমালোচনার মুখে পড়েই এই পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে রাজ্য সরকার ৷
উল্লেখ্য, এদিন শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বাগুইআটি থানার সামনে বিজেপি-র বিক্ষোভ কর্মসূচির পালা শেষ হতে না-হতেই নিহত ছাত্রদের বাড়িতে শাসক শিবিরের প্রতিনিধি হিসেবে পৌঁছে যান সুজিত বসু, অদিতি মুন্সিরা ৷