কলকাতা, 30 সেপ্টেম্বর: কেন্দ্রীয় বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা নয়ছয় করছে রাজ্য সরকার (West Bengal Government) ! এই অভিযোগ তুলে আগেই বহুবার সরব হয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ৷ তথ্য জানার অধিকার (RTI) আইনের আওতায় এই সংক্রান্ত বেশ কিছু নথিও জোগাড় করেছিলেন তিনি ৷ আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, শীঘ্রই এই অনিয়ম বন্ধ করার দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের (Nirmala Sitharaman) দ্বারস্থ হবেন ৷ এবার সেই ঘোষণা অনুসারেই পদক্ষেপ করলেন শুভেন্দু ৷ উৎসবের আবহেই শুক্রবার নির্মলাকে চিঠি পাঠালেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari Letter) ৷ যদিও সেই চিঠিতে তারিখ রয়েছে বৃহস্পতিবারের (29 সেপ্টেম্বর, 2022) ৷ কিন্তু, সূত্রের দাবি, চিঠিটি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে 30 সেপ্টেম্বর ৷
চিঠিতে ঠিক কী লিখেছেন শুভেন্দু অধিকারী ?
চিঠির প্রথমেই শুভেন্দু সরাসরি রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন ৷ তিনি লিখেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়নের জন্য দিল্লির তরফে রাজ্যকে যে টাকা পাঠানো হয়, রাজ্য তার অপব্যবহার করছে ৷ বেআইনি এবং অনৈতিকভাবে এক প্রকল্পের টাকা অন্য খাতে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে ৷ এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে অবহিত করতেই তাঁর এই চিঠি বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু ৷
আরও পড়ুন:কেন্দ্রের টাকা ঘুরপথে রাজ্যের প্রকল্পে ব্যবহার ! আরটিআই করলেন শুভেন্দু
এই প্রসঙ্গেই শুভেন্দু উল্লেখ করেছেন, জনকল্যাণমুখী বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য দেওয়া অর্থের বণ্টন খতিয়ে দেখতে সদ্য 'পাবলিক ফিন্যান্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম' বা পিএফএমএস গঠন করা হয়েছে ৷ কিন্তু, তার আগে পর্যন্ত কেন্দ্রের দেওয়া যে পরিমাণ টাকা রাজ্যে বণ্টন করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখার আবেদন জানিয়েছেন শুভেন্দু ৷ তাঁর দাবি, এমন সরকারি আধিকারিকদের দিয়ে এই কাজ করাতে হবে, যাঁরা রাজ্য সরকারের দ্বারা প্রভাবিত নন ৷ শুধু তাই নয় ৷ যেসমস্ত প্রকল্পের 100 শতাংশ খরচ কেন্দ্রীয় সরকার বহন করে, সেইসব ক্ষেত্রে যাতে রাজ্যকে টাকা পাঠানোর 48 ঘণ্টার মধ্যে তা বৈধ উপভোক্তার ব্য়াংক অ্য়াকাউন্টে পৌঁছে যায়, তাও নিশ্চিত করার আবেদন জানিয়েছেন শুভেন্দু ৷
বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, কেন্দ্রীয় টাকা খরচের ক্ষেত্রে নিয়মের ধার ধারছে রাজ্য সরকার ৷ তাহলে কী করছে তারা ? শুভেন্দু জানিয়েছেন, প্রথমেই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের জন্য আসা টাকার একটা বড় অংশ তুলে নেওয়া হচ্ছে ৷ তারপর তা জমা করা হচ্ছে রাজ্যের আপদকালীন ত্রাণ তহবিলে ৷ এরপর সেই টাকা ইচ্ছা মতো বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য খরচ করা হচ্ছে ৷
এছাড়াও, নির্দিষ্ট প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থ সেই প্রকল্পে খরচ করতে রাজ্য সরকার মাত্রাতিরিক্ত সময় নিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু ৷ তাঁর দাবি, এর ফলে বৈধ উপভোক্তারা বঞ্চিত হচ্ছেন ৷ এমনকী, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আটকে রাখার যে অভিযোগ বারবার রাজ্য সরকার করছে, তাও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু ৷ সব শেষে রাজ্য়ের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন শুভেন্দু ৷ যাতে জনসমক্ষে কেন্দ্রের ভাবমূর্তি নষ্ট না হয় ৷