কলকাতা, 24 অগস্ট : করোনাকালে দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সোমবারই কিছু দাওয়াই দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন (Nirmala Sitharaman) ৷ মঙ্গলবার তার কড়া সমালোচনা করলেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় (Sukhendu Sekhar Roy) ৷ তাঁর অভিযোগ, মোদি সরকার ‘‘সরকারেরই বেসরকারিকরণ’’ করে দিচ্ছে ৷ এই মুহূর্তে সরকার দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে ৷ কেন্দ্রের ভ্রান্ত নীতির ফল ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে ৷ তৃণমূল সাংসদের অভিযোগ, সরকারি সম্পত্তি বিক্রি করে আর্থিক কোষাগার পূর্ণ করতে চাইছে কেন্দ্র ৷ কোষাগার ভরার এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অ্যাসেট মনিটাইজেশন’ ৷ কেন্দ্রের দাবি, এতে আখেরে লাভ হবে দেশের মানুষেরই ৷ যা মানতে নারাজ ঘাসফুলশিবির ৷
আরও পড়ুন :National Monetization Pipeline : সরকারি সম্পত্তি বেসরকারি হাতে তুলে দিচ্ছে মোদি সরকার, অভিযোগ তৃণমূলের
মঙ্গলবার কেন্দ্রের এই আর্থিক দাওয়াই প্রসঙ্গে সুখেন্দুশেখর বলেন, “সরকার পক্ষ তাদের এই পদক্ষেপ নিয়ে সংসদে কোনও আলোচনা করেনি ৷ এক তরফা সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷” উল্লেখ্য, সোমবার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জানান, অ্যাসেট মনিটাইজেশনের মাধ্যমেই রেল, জাতীয় সড়ক, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পরিবহণ, তেল ও গ্যাসের পাইপলাইন থেকে শুরু করে 25 টি বিমানবন্দর, কলকাতা, হলদিয়ার মতো জল বন্দরের পরিকাঠামো বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হবে ৷ এই উপায়ে আগামী চার বছরের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের কোষাগারে 6 লক্ষ কোটি টাকা ঢুকবে ৷
এই বিষয়ে সুখেন্দুশেখরের কটাক্ষ, “চার বছর পর কেন্দ্রে বিজেপি-র সরকারই থাকবে না ৷ তাহলে চার বছর পরের কথা ভেবে এই বেসরকারিকরণের মানে কী !” সাংসদের বক্তব্য, সরকার অল্প সময়ের জন্য এইসব সম্পত্তি ‘লিজ’ দেওয়ার কথা বললেও আদতে সেসব 25 থেকে 30 বছরের জন্য বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে ৷ এমনকী, এই ব্যবস্থা পুনর্নবীকরণের ব্যবস্থাও থাকছে ৷ অর্থাৎ, ধাপে ধাপে সরকারি সমস্ত সম্পদই চলে যাবে বেসরকারি সংস্থার হাতে ৷ তৃণমূল সাংসদের মতে, “30 বছর পর হয়তো আমরা থাকব না ৷ যাঁরা এইসব প্রকল্প করছেন, তাঁরাও থাকবেন না ৷ কিন্তু সাধারণ মানুষের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে ।”
অন্যদিকে, নীতি আয়োগের প্রধান অমিতাভ কান্তের দাবি, দফায় দফায় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করার পরই অ্যাসেট মনিটাইজেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ এই ব্যবস্থায় সরকারি সম্পত্তির গুরত্ব একই থাকছে ৷ শুধু পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে ৷ তিনি জানিয়েছেন, 83 শতাংশ মোট আয় বৃদ্ধির মধ্যে থেকে 27 শতাংশ রাস্তা, 25 শতাংশ রেল, 15 শতাংশ বিদ্যুৎ এবং তেল ও গ্যাস থেকে আট শতাংশ এবং টেলিকম সেক্টর থেকে ছয় শতাংশ চলতি বছরেই বাজার থেকে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের ৷
আরও পড়ুন :Amit Mitra : রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণের প্রতিবাদ, নির্মলাকে চিঠি অমিতের
এই বিষয়ে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেছেন, “নীতি আয়োগ কোনও সাংবিধানিক সংস্থা বা সংগঠন নয় ৷” তাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের পরামর্শ বা সুপারিশ নিয়েই কার্যত প্রশ্ন তুলেছেন তিনি ৷ পাশাপাশি, সুখেন্দুশেখর বলেন, “এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মানুষের জীবন নষ্ট হয়ে যাবে ৷ প্রাকৃতিক সম্পদ এভাবে ব্য়ক্তি বিশেষের হাতে তুলে দেওয়া যায় না ৷ এইসব সরকারি সংস্থাগুলি বেসরকারি হাতে চলে গেলে মানুষের কাজের আর নিরাপত্তা থাকবে না ৷’’