কলকাতা, 14 এপ্রিল :বৈশাখের প্রথম দিনে বাঙালি যেন অধিক বাঙালি হয়ে উঠতে চায় । খাওয়ায়, পোশাকে, আচার আচরণে । বিশেষ করে এদিন যে বাঙালি কিঞ্চিৎ বেশি খাদ্যপ্রাণ হয়ে ওঠেন তাঁরা তা বলাই বাহুল্য (Special Foods in Bengali New Year) । সেই হুতোমের আমল থেকে আজ বিশ্বায়নের বাঙালিও খাদ্য ভাবনায় খুব একটা বদল ঘটতে দেয়নি । সকালে বাড়িতে গলদা চিংড়ির মালাইকারি আর রাতে কচি পাঁঠার ঝাল ঝোল- বাঙালি আজও এই ট্রেন্ড থেকে বেরোয়নি, বেরোতে চায়ও না । শুধু বদল ঘটেছে এক জায়গায় । তারা আজ সপরিবারে ইটিং আউটে যান এইদিনে । হাল দুনিয়ায় ইটিং আউটের পাশাপাশি মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অনলাইনে খাবার অর্ডার । অনলাইনে খাবার অর্ডার করলেই তা হাজির হয়ে যাচ্ছে সদর দরজায় । তারপর আর কী?
প্রসঙ্গ যখন নববর্ষে বাঙালির খাওয়া দাওয়া, তাই চেনা চিত্রের খানিক বিশ্লেষণ করা যেতেই পারে । প্রভাতফেরি সেরে বাড়ির কর্তা বাড়ি ফিরে গিন্নিকে অর্ডার, "বলি চা টা হল?" গিন্নিও অমনি হাজির । দুধে টইটম্বুর এক কাপ চা আর পাশে দু'টি বিস্কুট নিয়ে । চা-পানের পরেই কর্তার হাতে দেওয়া হল বাজারের থলেটি । এক হাতে থলে, অন্য হাতে বাজারের লিস্টি । কর্তাও এদিন এক্কেবারে পুরোদমে খাওয়াদাওয়ার মুডে । এদিন তাঁর একটাই কাজ- গুছিয়ে বাজার । প্রথমে পাঁঠা কেনার লাইনে কতজনের পরে গুনে নিয়ে লাইনটা রাখতে বলে সোজা হানা চিংড়ির দোকানে । সেখানে চিংড়ি নিতে নিতে পাঁঠার দোকানে তাঁর লাইনও খানিকটা এগিয়ে গেছে । বাজারহাট সেরে বাড়ি ফিরে গিন্নিকে অর্ডার- "মাছ মাংসের সঙ্গে আজ শুক্তোটাও করো ।" গিন্নিও এদিন কর্তাকে খুশি করতে দশ পা এগিয়ে একেবারে । এই চিত্র আজও একইরকম। এক এক বাড়িতে এক এক পদে খাদ্যরসে মেতে ওঠে বাঙালি।