কলকাতা, 4 অক্টোবর : অষ্টমীর সন্ধ্যা-আরতি শেষে হালকা মেজাজেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Sovandeb Chatterjee) । আর সান্ধ্য আলোচনায় বারবারই উঠে এল দুই নেতার নাম । তাঁদের একজন রয়েছেন কারা অন্তরালে । অপরজন প্রায় এক বছরের কিছু কম সময় হল প্রয়াত হয়েছেন । খুব স্বাভাবিকভাবেই তাই তাঁদের কথা বলতে বলতে স্মৃতিমেদুর হলেন শোভনদেব ।
রাজনৈতিক মহলে বরাবরই পরিচিত তিনি অজাতশত্রু হিসেবে । বরাবরই মিষ্টভাষী এবং অল্প কথা বলেন । দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় রাজনীতির অভিজ্ঞতা । অনেক উত্থান পতনের সাক্ষী । এবার অষ্টমী নীশিতে সেই সব কথাই উঠে এল শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের কথায় ।
হাজরা পার্কের পুজো মণ্ডপে বসে এই প্রবীণ রাজনৈতিক বলছিলেন, ‘‘পার্থর জন্য দুঃখ হয় । কারণ, আমার হাত ধরেই রাজনীতিতে এসেছিল ও । মাঝে মাঝে মনে হয় আমি যদি ওকে রাজনীতিতে না আনতাম, তাহলে হয়তো এই করুণ পরিণতি হত না ।’’
অতীতেও একবার বিধানসভায় বসে পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) সম্পর্কে এই কথাই বলেছিলেন শোভনদেব । পুজোর আনন্দের মধ্যে আরও একবার সে কথাই তাঁর মুখ থেকে শোনার অর্থ মনের মধ্যে পার্থর এই করুণ পরিণতি মেনে নিতে পারছেন না পরিষদীয়মন্ত্রী ।
একই ভাবে সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee) না থাকলেও এই প্রবীণ তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতাকে এখনও ভোলেননি শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় । সুব্রত মুখোপাধ্যায় কথা বলতে গিয়ে অনেকটাই গলা ভারী হয়ে যায় তাঁর । বলছিলেন, ‘‘দীর্ঘদিন একসঙ্গে রাজনীতি করেছি । কত স্মৃতি দুজনের । পুজোর দিনগুলোতে যেভাবেও ভালোবেসে পুজোটা অর্গানাইজ করত, তেমনটা কখনোই পারিনি । তাই এবারের পুজোয় ওর না থাকাটা ভীষণভাবে মনে করাচ্ছে সুব্রতকে ।’’
কথাগুলো বলতে বলতে চোখ ভিজে যায় মন্ত্রীর । তিনি বলতে থাকেন, ‘‘রাজনীতির শুরু থেকেই সুব্রতর সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল । দুজনে কী কী করেছি বলে শেষ করা যাবে না । বিধানসভায় পাশাপাশি বসতাম । তাই বন্ধু সুব্রতকে ভোলা আমার পক্ষে কঠিন । আমাদের বন্ধুত্ব অটুট ছিল শেষ দিন পর্যন্ত । দুঃখ হলে আমাকে ডাকত । বলত, মন খুলে কথা বলার মতো কেউ নেই তুই ছাড়া । তাই আজ সুব্রতকে ছাড়া একটা শূন্যতা মনে হয় ।’’
প্রসঙ্গত, গত বছর পর্যন্তও এই দুর্গাপুজোর সময় দুই নেতাকেই স্বমহিমায় দেখা গিয়েছিল । সুব্রত মুখোপাধ্যায় ছিলেন তার দীর্ঘদিনের পরিচিত ক্লাব একডালিয়া এভারগ্রিনে । আর পার্থ চট্টোপাধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার পরিচিত ক্লাব নাকতলা উদয়ন সংঘে । কিন্তু এই দুই নেতার পরিণতি আজও দুঃখ দেয় সহযোদ্ধাদের মনে তাই তাঁরা স্মৃতি মেদুর ।
আরও পড়ুন :পুজোয় কুঠুরিবন্দি পার্থ, হতাশা বাড়ছে প্রাক্তন তৃণমূল মহাসচিবের