কলকাতা, 16 সেপ্টেম্বর :সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে বেআইনি অস্ত্রব্যবসার ধরন ৷ আগে হয় ‘রেডিমেড’ অবৈধ অস্ত্র চোরাপথে অন্য রাজ্য থেকে ঢুকত এই রাজ্যে ৷ অথবা শহর বা জেলার কিছু কুখ্যাত অঞ্চলে লেদ কারখানার আড়ালে তৈরি হত বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র ৷ কিন্তু একের পর এক পুলিশের অভিযান এবং ধরপাকড়ের ফলে এখন বেআইনি অস্ত্র সরবরাহের ধরনটাই বদলে ফেলেছে কারবারিরা ৷ সূত্রের খবর, ইদানীংকালে গ্রাহকের ঘরে এসেই তার ফরমায়েশ মাফিক অস্ত্র তৈরি করে দিয়ে যাচ্ছে ভিনরাজ্যের কারিগররা ৷
আরও পড়ুন :Arms Dealer Arrested : আগ্নেয়াস্ত্র-সহ বনগাঁ থেকে গ্রেফতার অস্ত্র ব্যবসায়ী ও সঙ্গী
কীভাবে চলছে সেই ব্যবসা ? তথ্য বলছে, প্রথমেই গ্রাহকের কাছ থেকে একটা ফোন বা হোয়াটসআপ কল যায় ভিনরাজ্যে বসে থাকা কোনও অস্ত্র ব্যবসায়ীর কাছে ৷ দু‘-তিন দিনের মধ্যে রীতিমতো শ্যুট, বুট পরে এবং অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম নিয়ে একেবারে গ্রাহকের দুয়ারে হাজির হয়ে যায় অস্ত্র তৈরির কারিগর ৷ তারপর গ্রাহকের বাড়ির মধ্যেই কোনও শেড বা গ্যারাজ বা এমনকী চিলেকোঠায় বসে চলে অস্ত্র তৈরি ৷ রীতিমতো আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অস্ত্র তৈরি করে তারা ! তারপর সেই অস্ত্র গ্রাহকের হাতে তুলে দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যায় কারিগররা ৷
এতে বেআইনি কারবারিদের ঝুঁকি কমলেও মাথাব্যথা বেড়েছে পুলিশের ৷ আসলে চোরাপথে অস্ত্র চালান করা হলে অনেক সময়েই সেই ‘কনসাইনমেন্ট’ পাকড়াও করে ফেলে পুলিশ ৷ সেই সূত্র ধরে অস্ত্রপাচারকারীদের কাছে পৌঁছতেও সমস্যা হয় না ৷ কিন্তু নয়া নিয়মে ঝুঁকি অনেক কম ৷ যেহেতু অস্ত্র এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পাঠানোর কোনও ব্যবস্থাই নেই, ফলে মাঝপথে অস্ত্র-সহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ার কোনও সম্ভাবনাও নেই ৷ তাছাড়া, কোন এলাকায় কার বাড়িতে বাইরে থেকে লোক এসে গ্যারাজে বা চিলেকোঠায় ঠাঁই নিয়েছে, সেই খবর জোগাড় করা পুলিশের পক্ষেও খুব একটা সহজ নয় ৷ ফলে এক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়েই গ্রাহক এবং কারিগর, দু’পক্ষই থেকে যাচ্ছে আড়ালে ৷ আর অস্ত্র ব্যবসায়ী ভিনরাজ্যে তার নিরাপদ আশ্রয়ে থেকেই গোটা প্রক্রিয়াটা অবাধে পরিচালনা করে যাচ্ছে ৷
রাজ্য পুলিশের সদর দফতর ভবানী ভবন সূত্রে খবর, সামান্য কয়েক হাজার টাকা খরচ করলেই পছন্দ মাফিক অস্ত্র হাতে পেয়ে যাচ্ছে ক্রেতারা ৷ বোমা, গুলি, আগ্নেয়াস্ত্রের যে দাম সামনে এসেছে, তা হল-
ওয়ান শটার (পাইপ গান) - 10 থেকে 12হাজার টাকা
সেভেন এমএম পিস্তল - 22 হাজার টাকা