পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

শিশুসুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে কর্মশালা

By

Published : Feb 7, 2021, 10:48 PM IST

Updated : Feb 8, 2021, 7:27 PM IST

বাল্যবিবাহ, শিশুপাচার ও শিশুশ্রম বাগে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে স্কুলগুলি৷ পড়ুয়া থেকে অভিভাবক, সকলকেই এ বিষয়ে সচেতন করতে পারেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা৷ কিভাবে, কোন পথে এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনা করতেই অনুষ্ঠিত হল কর্মশালা৷ রবিবার মৌলালি যুবকেন্দ্রে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের উদ্য়োক্তা ছিল ‘স্টেট ফোরাম অফ হেডমাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস’৷

wb_kol_01_school_as_a_center_for_exclence_to_combat_human_trafficking_and_early_child_marriage_7204411p
শিশুসুরক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষক-শিক্ষিদের নিয়ে কর্মশালা

কলকাতা, 7 ফেব্রুয়ারি: শিশুসুরক্ষা ও শিশুকল্যাণে বাধা সৃষ্টি করে বাল্যবিবাহ, শিশুপাচার ও শিশুশ্রমের মতো বিষয়গুলি। তবে এইসব বাধা কাটাতে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে স্কুলগুলি। হয়ে উঠতে পারে উৎকর্ষের কেন্দ্র। কিন্তু, কিভাবে হবে সেই কাজ? তারই উত্তর খুঁজতে রবিবার রাজ্যের 23টি জেলার প্রায় 300টি স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে কর্মশালা করল ‘স্টেট ফোরাম অফ হেডমাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস’। ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস মিশনের সহায়তায় সারাদিনব্যাপী এই কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী।

বাল্যবিবাহ ও শিশুপাচারের সঙ্গে লড়তে উৎকর্ষের কেন্দ্র হিসেবে স্কুলকে কিভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে, তা নিয়েই রাজ্যস্তরের এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয় কলকাতায় মৌলালি যুবকেন্দ্রের স্বামী বিবেকানন্দ প্রেক্ষাগৃহে। এদিনের কর্মশালার লক্ষ্য ছিল, স্কুলকে শিশুদের জন্য একটি সুরক্ষিত জায়গা হিসাবে গড়ে তোলা৷ পাশাপাশি, গ্রামস্তরে শিশু সুরক্ষা কমিটি ও যুবদলের সাহায্যে সমাজকেও শিশুদের জন্য সুরক্ষিত করে তোলা৷

এই কর্মশালার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আয়োজক ‘স্টেট ফোরাম অফ হেডমাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস’-এর সাধারণ সম্পাদক চন্দনকুমার মাইতি বলেন, ‘‘মহামারি পরিস্থিতিতে দীর্ঘ 11 মাস স্কুল বন্ধ। বন্ধ রয়েছে ছাত্রাবাসগুলিও। একইসঙ্গে, প্রকট হচ্ছে মানুষের অর্থনৈতিক সমস্য়াগুলি৷ যার ফলে বাড়ছে স্কুলছুটে সংখ্যা৷ পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহ এবং পাচারের ঘটনা৷ সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দীপাঞ্চলের মৎস্যজীবী পরিবারের সন্তান হোক বা মুর্শিদাবাদের ইটভাটা কিংবা বিড়িশ্রমিক পরিবারের সন্তান৷ তরাই-ডুয়ার্সের চা বাগান শ্রমিক হোক বা মালদার পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের শিশুকন্যা৷ সকলেই আজ মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। সম্প্রতি রাজ্য সরকার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু, তারই মধ্যে যে সমস্ত শিশুরা বিভিন্ন কারণে বিদ্যালয়ের আঙিনা থেকে হারিয়ে গেল, তাদের শিক্ষার মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি প্রত্য়েকের মানসিক স্বাস্থ্য়ের উন্নতির দিকেও আমাদের নজর দিতে হবে৷ এরজন্য অভিভাবকদের সচেতন করা দরকার৷ যা এই কর্মশালার অন্যতম লক্ষ্য৷’’

আরও পড়ুন:খুলছে স্কুল, বিস্তারিত গাইডলাইন দিল স্কুল শিক্ষা দপ্তর

ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস মিশন কলকাতার ডিরেক্টর অফ অপারেশন সাজি ফিলিপ বলেন, ‘‘শিক্ষা ও সচেতনতার প্রসারই একমাত্র মানবপাচারের মতো ভয়ঙ্কর অপরাধকে দমন করতে পারে৷ বহু ক্ষেত্রেই গ্রামাঞ্চল, বিশেষত, নিম্নবিত্ত পরিবারের শিশুদিরে ফুসলিয়ে পাচার করা হয়৷ পরবর্তীতে তাদের দেহব্যবসায় নামতে বাধ্য করে পাচারকারীরা৷ তাই ছোট থেকেই এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি হওয়া দরকার৷ স্কুলগুলি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে৷’’

এদিন সাজি ফিলিপ প্রতিটি স্কুলে লিডারশিপ প্রোগ্রাম চালু এবং স্কুলগুলিকে উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা প্রকাশ করেন। শিশুসুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী তাঁর বক্তব্যে লকডাউন ও তার পরবর্তী সময়ে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতির জন্য বিদ্যালয়গুলির কী কী করণীয়, তার ব্যাখ্যা দেন। এ ছাড়া, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে হয় প্যানেল ডিসকাশনও হয়। তার মধ্যে দিয়েই উঠে আসে স্কুলছুটের করুণ ও ভয়াবহ চিত্র৷

Last Updated : Feb 8, 2021, 7:27 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details