কলকাতা, 14 অগাস্ট : হুগলির আরামবাগের একটি ইউটিউব চ্যানেলের সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, তাঁর বিবি হালিমা বিবি এবং ক্যামেরাম্যান সুরজ আলির জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ আজ জামিন মঞ্জুর করে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ ৷ মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, সাংবাদিকদের যদি নিজেদের কাজ করতে দেওয়া না হয়, তাহলে গণতন্ত্র অর্থহীন ৷ বিচারপতিরা বলেন, "ভিন্নমত তিক্ত লাগতে পারে। কোনও পক্ষের অসুবিধা সৃষ্টি হচ্ছে বলে গণতন্ত্রে ভিন্নমতের কণ্ঠরোধ করা যায় না । যদি মনে করা হয়, সাংবাদিকরা তাঁদের বক্তব্য প্রচার করতে পারবেন না, তাহলে গণতন্ত্রের কোনও অর্থ নেই ।'' একই সঙ্গে বিচারপতিরা বলেন, ''সাংবাদিকদেরও তাঁদের কাজে সৎ থাকা জরুরি।"
ঘটনার সূত্রপাত এপ্রিল মাসে ৷ আরামবাগের ওই ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ করা হয় । সেই ফুটেজে দেখা যায়, লকডাউন চলাকালীন থানা থেকে ক্লাবগুলোকে চেক বিলি করা হচ্ছে । এরপরই ওই ইউটিউব চ্যানেলের সম্পাদক শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে আরামবাগ থানায় তোলাবাজির অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ ৷ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শফিকুল ৷ শফিকুলের আইনজীবীর তরফে হাইকোর্টে সেই ভিডিয়ো পেশ করা হয় ৷ পুলিশ সেই ভিডিয়োর সত্যতা অস্বীকার করে ৷ যদিও পরে চাপের মুখে স্বীকার করে নেয় ৷ ওই মামলায় হাইকোর্ট জামিন দেয় শফিকুলকে ৷
তবে হাইকোর্টে জামিন পেলেও ফের শফিকুল, তাঁর বিবি হালিমা বিবি ও চ্যানেলের ক্যামেরাম্যান সুরজ আলির বিরুদ্ধে 29 জুন আরামবাগ থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির 384, 506, 420, 406, 467, 469, 471, 472, 473, 474 ও 120বি ধারায় অভিযোগ দায়ের করেন এক ব্যক্তি । অভিযোগকারী অভিযোগপত্রে জানান, গাছ কাটা নিয়ে তাঁকে হুমকি দিয়েছেন শফিকুলের ক্যামেরাম্যান সুরজ আলি । তিনি না কি 30 হাজার টাকাও চেয়েছেন ৷ টাকা না দিলে গাছ কাটার ভিডিয়ো সামনে আনার হুমকি দিয়েছেন ৷ অভিযোগের প্রেক্ষিতে 30 জুন শফিকুল, তাঁর বিবি ও ক্যামেরাম্যানকে গ্রেপ্তার করে আরামবাগ থানার পুলিশ ৷ সেই মামলাতেই আজ 45 দিনের মাথায় ওই তিনজনের জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট ৷ রাজ্যের শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, নিম্ন আদালত থেকে 10 হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জমিন পাবেন শফিকুলরা ৷