পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের? - মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়

রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে প্রশান্ত কিশোর কি আদৌ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আসন্ন নির্বাচনি বৈতরণী পার করতে পারবেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সচিবালয়ে প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে চাপা উত্তেজনা রয়েছে । অন্য দেশের সীমান্তবর্তী একটি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ । বহু ভাষাভাষী মানুষের বাস এ রাজ্যে । এই রাজ্য সম্পর্কে কতটা জানেন প্রশান্ত কিশোর, প্রশ্ন উঠেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যেও ।

প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের?

By

Published : Sep 23, 2019, 4:22 AM IST

কলকাতা, 23 সেপ্টেম্বর : প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের? সাম্প্রতিককালের বেশ কিছু ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন প্রশান্ত কিশোর তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে । তা থেকেই নাকি মতানৈক্য ৷ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রধান রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রশান্ত কিশোরের সম্পর্কের তিক্ততার কারণে নাকি 'দিদিকে বলো' কর্মসূচিতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে ৷

রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে প্রশান্ত কিশোর কি আদৌ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আসন্ন নির্বাচনি বৈতরণী পার করতে পারবেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সচিবালয়ে প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে চাপা উত্তেজনা রয়েছে । অন্য দেশের সীমান্তবর্তী একটি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ । বহু ভাষাভাষী মানুষের বাস এ রাজ্যে । এই রাজ্য সম্পর্কে কতটা জানেন প্রশান্ত কিশোর, প্রশ্ন উঠেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যেও ।

সূত্রের খবর, প্রশান্ত কিশোরের টিম মধ্যরাতে, গভীর রাতে, এমন কী ভোররাতেও বিধায়কদের ফোন করে রীতিমত নির্দেশ দিচ্ছেন । জনসংযোগ বাড়ানো এবং এলাকায় আরও বেশি করে যাওয়ার জন্য বিধায়কদের নির্দেশ দিচ্ছেন প্রশান্ত কিশোরের টিমের ছেলেমেয়েরা । এই ঘটনায় যারপরনাই বেজায় ক্ষুব্ধ জনপ্রতিনিধিরা ।

সূত্রের খবর, নবান্নের 14 তলা থেকে মুখ্যমন্ত্রী নিয়মিত তার রাজনৈতিক উপদেষ্টা, প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন । শোনা যায়, 450 কোটি টাকা দিয়ে প্রশান্ত কিশোরকে মুখ্যমন্ত্রী তার রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবে রেখেছেন । কিন্তু ইদানিংকালে মুখ্যমন্ত্রী প্রশান্ত কিশোরের কথা আর শুনছেন না । প্রশান্ত কিশোর যা যা বুদ্ধি দিচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রী সেগুলি গ্রহণ করছেন না । প্রশান্ত কিশোরের বুদ্ধি এ রাজ্যের সবকটি ক্ষেত্রে কৃতকার্য না হওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে উপেক্ষা করছেন ।

এরাজ্যের মাটিতে প্রশান্ত কিশোরের বুদ্ধির বাস্তব প্রয়োগ যে হবে না সেটা মুখ্যমন্ত্রী বুঝতে পেরেছেন বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের । মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের অনেকেই বলছেন, পশ্চিমবঙ্গে এত কোটি টাকার দুর্নীতি আগে জানলে, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক উপদেষ্টা হতেন না প্রশান্ত কিশোর ।

''দিদিকে বলো'' কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক । কোনওভাবেই সরকারি কর্মসূচি নয় । আট জনের টিম এই কর্মসূচিতে প্রশান্ত কিশোরের হয়ে কাজ করছেন । অভিযোগ, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে যে কাজ করার কথা বেসরকারি জায়গা থেকে, নবান্নে জন অভিযোগ কেন্দ্র থেকেই তা পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । খাদি ভবন থেকে এখন এই কর্মসূচি চলছে বলে জানা গিয়েছে । সমগ্র বিষয়টিতে দুজন IAS অফিসারকে বাধা দেওয়ায় তাদেরকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ । খাদি ভবনের এই জন অভিযোগ কেন্দ্রে প্রতিদিন সকাল থেকে ''দিদিকে বলো''-র টিম বসে থাকে।

সরকারি অফিসে ঢুকে পড়ছে রাজনৈতিক একটি কর্মসূচির দল । অন্যদিকে ''দিদিকে বলো'' কর্মসূচিতে ওয়েবেলকে যুক্ত করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে । প্রযুক্তিগত এবং লোক বল সবটাই ওয়েবেলকে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী সচিবালয় থেকেই । ওয়েবেল সরকার পোষণ করা একটি সংস্থা । ''দিদিকে বলো'' টিমকে পুরোপুরি সাপোর্ট দিচ্ছে তারা । বিরোধীরা জানাচ্ছেন, এই সরকার যখন ক্ষমতাচ্যুত হবে তখন এই জালিয়াতি নিয়ে CBI তদন্ত হবে । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থা তখন হবে রাজীব কুমারের মতো ।

ইতিমধ্যেই প্রশান্ত কিশোর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইদানীংকালের কিছু ঘটনায় ক্ষুব্ধ। যেমন, সাম্প্রতিককালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঁথি থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত হেঁটেছিলেন নাগরিকপঞ্জি বিরুদ্ধে । রাস্তায় হাঁটার জন্য পথের দু'পাশে ব্যারিকেড করার জন্য কলকাতা কর্পোরেশন একদিনে 15 লক্ষ টাকা খরচ করেছিল । এই খবর প্রশান্ত কিশোরের কানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন তিনি । শোনা যাচ্ছে, সেখানে থেকেই মমতার সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরে তাঁর ।

রাজ্যের বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ গুলিতে 34 হাজার আসন রয়েছে । চলতি বছরে ভর্তির মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে, দেখা যাচ্ছে, মাত্র 9 হাজার পড়ুয়া সেখানে ভর্তি হয়েছে । কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে আসছেন না । ওয়ার্ড মাস্টারের চাকরির জন্য ইলেকট্রিক্যাল এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আবেদন করছেন । কেন এই অবস্থা? এই প্রশ্ন সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নাকি করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর । বিষয়টি নাকি ভালোভাবে নেননি তৃণমূল সুপ্রিমো । সূত্র বলছে, প্রশান্ত কিশোর অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের উপরেও সন্তুষ্ট নন । অমিত মিত্রের তথ্যের বিভ্রান্তি নিয়ে চটেছেন তিনি ।

গত সাড়ে আট বছরে সাড়ে ছ'লক্ষ সরকারি চাকরি হয়েছে এরাজ্যের মানুষের । অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের এই বক্তব্যের বাস্তবতা জানতে চেয়েছেন প্রশান্ত কিশোর । গোল বেঁধেছে তাতেই ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details