কলকাতা, 7 মার্চ : একদা রাজ্যের দোর্দণ্ডপ্রতাপ মন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী ৷ সেই মিঠুনই আজ তৃণমূলের ঘর ঘুরে যোগ দিলেন গেরুয়া শিবিরে ৷ এর মাঝে গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল ৷ সুভাষ আজ নেই। মিঠুনের কি মনে পড়ছে, যেদিন সুভাষ চক্রবর্তীর জয় নিশ্চিত করতে একদিন সিপিএমের হয়ে প্রচারে নেমেছিলেন তিনি ? অতীতের স্মৃতিচারণে আবেগপ্রবণ হলেও মিঠুনের এই রংবদলে অবাক হননি সুভাষ-জায়া রমলা চক্রবর্তী ৷
বাংলার ছেলে, বাঙালি মিঠুনের সাফল্য নিয়ে বরাবরই ভারী গর্ব এ রাজ্য়ের আমজনতার ৷ তাই আজও তিনি বাঙালির ‘মহাগুরু’ ৷ লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, বাঙালির আবেগে মিঠুনের অধিকার নতুন নয় ৷ এমনকী, রাজনীতির মঞ্চেও বহুবার সম্মানিত হয়েছেন তিনি ৷ বাম জমানায় 1986 সালের পয়লা জানুয়ারি ‘হোপ 86’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল ৷ সেই অনুষ্ঠান মঞ্চেই মিঠুন চক্রবর্তীকে নতুন করে চিনেছিল বাঙালি ৷ ঘরে ঘরে পরিচিতি বেড়েছিল তাঁর ৷ এমনকী, বাম আমলেই বেশ কয়েকটা বছর রাজ্যের তথ্য়-সংস্কৃতি দফতরের উপদেষ্টা ছিলেন মিঠুন ৷ ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল তৎকালীন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর সঙ্গে ৷ এমনকী, হার্দ্যিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন দুই পরিবারের সদস্যরাও ৷
রবিবার ব্রিগেডের গেরুয়া মঞ্চে বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেন মিঠুন ৷ যোগ দেন মোদি-শাহের দলে ৷ তাঁর এই পদক্ষেপে একটুও বিস্মিত নন সুভাষ-পত্নী রমলা ৷ তাঁর কথায়, ‘‘ক্ষ্যাপা খুঁজে ফেরে পরশ রতন।’’ রমলার আশঙ্কা, হয়ত কোনও চাপের মুখে বারবার এমন কাজ করতে হচ্ছে মিঠুনকে ৷ তিনি বলেন, ‘‘মিঠুন তো এর আগে তৃণমূলে গিয়ে ভেবেছিল পরশ রতন খুঁজে পাবে ৷ কিন্তু পায়নি ৷ আবার নতুন জায়গায় গেছে ৷ চরৈবেতি চরৈবেতি ৷ মিঠুনের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক ছিল ৷ প্রত্যেক মানুষেরই স্বাধীন চিন্তার জায়গা রয়েছে। যে যার নিজের মতো স্বাধীন চিন্তা করতেই পারে ৷ অনেক রকমের চাপ থাকে ৷ বাইরে থেকে দেখে সবকিছু বোঝা যায় না ৷ ও নিজেই বুঝবে। ও হয়ত বারবার এক্সপেরিমেন্ট করছে ৷ সময়ের সঙ্গে অনেক কিছুই বদলে যায় ৷ কেন মিঠুনকে বিজেপিতে যেতে হল, সেই প্রশ্নের উত্তর হয়ত পরে পাওয়া যাবে ৷ এখন নয় ৷’’