পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

মিঠুনের দলবদলে অবাক নন সুভাষ-জায়া রমলা - বিজেপি

যাবতীয় জল্পনার অবসান ঘটিয়ে রবিবারের ব্রিগেডে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী ৷ এরপরই মিঠুনের গায়ে কার্যত দলবদলুর তকমা সেঁটে দিয়েছেন তৃণমূল নেতাদের একাংশ ৷ যদিও মিঠুনের এই পদক্ষেপে তিনি বিস্মিত নন বলেই জানিয়েছেন প্রয়াত সিপিএম নেতা তথা রাজ্য়ের প্রাক্তন মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর স্ত্রী রমলা চক্রবর্তী ৷ বরং তাঁর আশঙ্কা, চাপের মুখেই হয়ত বারবার শিবির বদল করতে হচ্ছে মিঠুনকে ৷ প্রসঙ্গত, একটা সময় সুভাষ চক্রবর্তীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন মিঠুন ৷

west bengal assembly election 2021_wb_kol_04_ramala_mithun_copy_7203847
মিঠুনের দলবদলে অবাক নন সুভাষ জায়া রমলা

By

Published : Mar 7, 2021, 9:31 PM IST

কলকাতা, 7 মার্চ : একদা রাজ্যের দোর্দণ্ডপ্রতাপ মন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী ৷ সেই মিঠুনই আজ তৃণমূলের ঘর ঘুরে যোগ দিলেন গেরুয়া শিবিরে ৷ এর মাঝে গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল ৷ সুভাষ আজ নেই। মিঠুনের কি মনে পড়ছে, যেদিন সুভাষ চক্রবর্তীর জয় নিশ্চিত করতে একদিন সিপিএমের হয়ে প্রচারে নেমেছিলেন তিনি ? অতীতের স্মৃতিচারণে আবেগপ্রবণ হলেও মিঠুনের এই রংবদলে অবাক হননি সুভাষ-জায়া রমলা চক্রবর্তী ৷

বাংলার ছেলে, বাঙালি মিঠুনের সাফল্য নিয়ে বরাবরই ভারী গর্ব এ রাজ্য়ের আমজনতার ৷ তাই আজও তিনি বাঙালির ‘মহাগুরু’ ৷ লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, বাঙালির আবেগে মিঠুনের অধিকার নতুন নয় ৷ এমনকী, রাজনীতির মঞ্চেও বহুবার সম্মানিত হয়েছেন তিনি ৷ বাম জমানায় 1986 সালের পয়লা জানুয়ারি ‘হোপ 86’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল ৷ সেই অনুষ্ঠান মঞ্চেই মিঠুন চক্রবর্তীকে নতুন করে চিনেছিল বাঙালি ৷ ঘরে ঘরে পরিচিতি বেড়েছিল তাঁর ৷ এমনকী, বাম আমলেই বেশ কয়েকটা বছর রাজ্যের তথ্য়-সংস্কৃতি দফতরের উপদেষ্টা ছিলেন মিঠুন ৷ ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল তৎকালীন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর সঙ্গে ৷ এমনকী, হার্দ্যিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন দুই পরিবারের সদস্যরাও ৷

রবিবার ব্রিগেডের গেরুয়া মঞ্চে বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেন মিঠুন ৷ যোগ দেন মোদি-শাহের দলে ৷ তাঁর এই পদক্ষেপে একটুও বিস্মিত নন সুভাষ-পত্নী রমলা ৷ তাঁর কথায়, ‘‘ক্ষ্যাপা খুঁজে ফেরে পরশ রতন।’’ রমলার আশঙ্কা, হয়ত কোনও চাপের মুখে বারবার এমন কাজ করতে হচ্ছে মিঠুনকে ৷ তিনি বলেন, ‘‘মিঠুন তো এর আগে তৃণমূলে গিয়ে ভেবেছিল পরশ রতন খুঁজে পাবে ৷ কিন্তু পায়নি ৷ আবার নতুন জায়গায় গেছে ৷ চরৈবেতি চরৈবেতি ৷ মিঠুনের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক ছিল ৷ প্রত্যেক মানুষেরই স্বাধীন চিন্তার জায়গা রয়েছে। যে যার নিজের মতো স্বাধীন চিন্তা করতেই পারে ৷ অনেক রকমের চাপ থাকে ৷ বাইরে থেকে দেখে সবকিছু বোঝা যায় না ৷ ও নিজেই বুঝবে। ও হয়ত বারবার এক্সপেরিমেন্ট করছে ৷ সময়ের সঙ্গে অনেক কিছুই বদলে যায় ৷ কেন মিঠুনকে বিজেপিতে যেতে হল, সেই প্রশ্নের উত্তর হয়ত পরে পাওয়া যাবে ৷ এখন নয় ৷’’

মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সঙ্গে এক মঞ্চে মিঠুন চক্রবর্তী ৷

তবে মিঠুনের এই রংবদল হজম হয়নি তৃণমূল শিবিরের ৷ এ নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ খুলতে শুরু করেছেন দলের নেতারা ৷ ফিরহাদ হাকিমের কথায়, ‘‘মিঠুনদা কখন কোন দলে থাকেন, তা বোঝা দায় ৷ এর আগে সুভাষ চক্রবর্তীর সঙ্গে ছিলেন ৷ তারপর আমাদের সঙ্গে ৷ এখন বিজেপির সঙ্গে ৷ এরপর হয়ত অন্য কারও সঙ্গে থাকবেন ৷’’ অর্থাৎ এক কথায় মহাগুরুর গায়ে ‘দলবদলু’র তকমা সেঁটে দেন ফিরহাদ ৷

এক কাঠি উপরে উঠে তৃণমূল নেতা মদন মিত্র মিঠুনকে ‘জলঢোড়া’ বলে তোপ দেগেছেন ৷ মদনের যুক্তি, "জলঢোড়া না হলে মোদির পায়ে গিয়ে মাথা ঠেকাতেন না মিঠুন৷’’

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শিবিরে মিঠুন চক্রবর্তী ৷

আরও পড়ুন:সিপিএম-মমতা অতীত, মিঠুন এবার মোদির

তবে দলীয় সতীর্থদের তুলনায় বেশ খানিকটা কৌশলী সৌগত ৷ মহাগুরুর নতুন ইনিংস নিয়ে কোনও মন্তব্যই করতে চাননি তিনি ৷ সৌগতর মতে, কে কোন দলে যোগদান করবেন, সেটা একেবারেই তাঁর ব্য়ক্তিগত বিষয় ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details