কলকাতা, 30 জুন: বেকারত্ব ও একাকীত্ব ক্রমেই গ্রাস করছে বর্তমান সমাজকে । তবে এই সমস্যা থেকে অনেকে মুক্তির স্বাদ খুঁজে পান সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media)। ভিডিয়ো করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু মানুষই আজ জীবিকা নির্বাহ করে । উপার্জনের পথ হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া ৷ আর অল্প বয়সিদের মধ্যে এই ঝোঁক প্রবল দেখা যায় ।
ইউটিউবে(Youtube) ভিডিয়ো বানিয়ে অনেকের নামডাক হয় ও নিজস্ব একটা পরিচিত পায় তারা । তবে সেখানেও রয়েছে বিপত্তি । ভিডিয়োর সাপেক্ষে ইতিবাচক মন্তব্যের পাশাপাশি তাদের কুড়োতে হয় নেতিবাচক মন্তব্যও । আর এই ট্রোলিং-এ দুর্বল হয়ে পড়ছে বর্তমান প্রজন্ম ।
সম্প্রতি একরমই এক ঘটনা সামনে এসেছে ৷ যেখানে এক তরুণী ইউটিউবার (Youtuber) ঐশ্বর্য মুখোপাধ্যায় (Aishwarya Mukherjee) সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করে আত্মহত্যার কথা জানান ৷ সে নাকি তার বাড়ির লোকের সঙ্গে ভিডিও বানান আর তাতেই আপত্তি নেটিজেনের ৷ ঐশ্বর্য তার মায়ের পাশাপাশি দিদি-জামাইবাবুর সঙ্গেও ভিডিয়ো বানায় । আর সেটা নিয়েই দেখা দিয়েছে সমস্যা । ইউটিউবারের দাবি, নেট নাগরিকরা এই ব্যাপারটা পছন্দ করছে না ৷ যার ফলে তাকে কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করা হচ্ছে ৷ কারণ সে নাকি তার দিদি জামাইবাবুর জনপ্রিয়তাকে হাতিয়ার করে শিখরে ওঠার চেষ্টা করছে । আর তাতেই দুর্বল হয়ে পড়েছে ঐশ্বর্য ৷ তাই লাইভে এসে আত্মহত্যা করার কথা জানান এই তরুণী ইউটিউবার ৷
তবে এই সবকে বোকামো বলে মনে করছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ (Psychiatrist)। স্মরণিকা ত্রিপাঠি বলেন, "বর্তমানে যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া মানুষের যোগাযোগ তৈরি করার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে, তাই আমজনতা অনেকটাই সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নির্ভরশীল । তবে যারা ভিডিয়ো বানায় তাদের উচিত প্রশংসার পাশাপাশি সমালোচনারও মুখোমুখি হওয়া । সর্বোপরি পরিবার যদি পাশে থাকে তবে এগুলো কোনওভাবেই প্রভাব ফেলবে না । আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নেগেটিভ কমেন্টগুলোকে এড়িয়ে পজিটিভ যে বার্তাগুলো তাতে গুরুত্ব দেওয়া ।"
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ স্মরণিকা ত্রিপাঠির বার্তা এছাড়াও অতিমারির সময় থেকে প্রবলভাবে দেখা দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো বানানোর হুজুগ (Psychiatrist on Youtuber Trolling)। সেই বিষয়ে তিনি বলেন, "যখন কোনও মানুষ দেখে অন্য আরেকজন ওই কাজটা করে সাফল্য ও পরিচিতি দুটোই পাচ্ছে তাহলে আমি কেন পারব না । বিষয়টা ভীষণভাবে প্রভাব ফেলে । কিন্তু ওই কাজটা করে আমি কতটা পারব, এটা অনেকেই বুঝতে পারে না । তাই এই ধরনের সমস্যা দেখা যায় । তবে আমি মনে করি সোশ্যাল মিডিয়ার পরিচিতি কখনওই একটা আল্টিমেট গোল হতে পারে না । আর নয় তো সময় সাপেক্ষে, সম্পূর্ণ বিষয়টাই হবে ৷ আর তার থেকেও বড় কথা যদি পরিবার পাশে থাকে তাহলে কোনও কাজেই সমস্যা আসার কথা নয় ।"
আরও পড়ুন:উদয়পুর হত্যাকাণ্ডে সরব বলিউড, মুখ খুললেন অনুপম-কঙ্গনারা
অন্যদিকে আরেকজন ইউটিউবার (Youtuber) গৌরব তপাদার (Gaurab Tapadar) বলেন, " প্রথমে যখন কেউ ভিডিয়ো বানায় তখন তাকে বিভিন্ন মন্তব্যের মুখোমুখি হতে হয় । সেখানে প্রশংসার পাশাপাশি সমালোচনাও থাকে । তবে এখনই হেরে গিয়ে বা আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া কোনওভাবেই শ্রেয় নয় । আমার মনে হয় নেগেটিভ কমেন্টগুলোকে বাদ দিয়ে পজেটিভ যে মন্তব্যগুলো রয়েছে সেগুলোর ওপর জোর দিয়ে এগিয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ ৷"