কলকাতা, 8 ফেব্রুয়ারি: ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের(NGT) নির্দেশ পালন করতে গিয়ে কলকাতায় 26 টি স্কুলের পড়ুয়াদের আসা-যাওয়ায় ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল স্কুল শিক্ষা দপ্তর । যার যৌক্তিকতা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল । সেই বিতর্কের জেরেই ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার নির্দেশিকা প্রত্যাহার করল স্কুল শিক্ষা দপ্তর । জানা গেছে, শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশেই দপ্তর এই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করা হয়েছে ।
সম্প্রতি কলকাতার নামী 26টি স্কুলকে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয় স্কুল শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে । নির্দেশ, পড়ুয়াদের আসা-যাওয়ার জন্য বাস অথবা কারপুল ব্যবস্থা চালু করার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে । যে সকল পড়ুয়ারা স্কুলে আসা-যাওয়ার জন্য ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করে তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে চলতি বছরের 1 এপ্রিল থেকে বাধ্যতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে । পড়ুয়াদের আসা-যাওয়ার জন্য ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার শুধুমাত্র জরুরি এবং ব্যতিক্রমী অবস্থাকালীনে ব্যবহার করা যাবে । তবে, তার জন্য উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিতে হবে ।
মূলত NGT-র নির্দেশ মেনে যানজট এবং কলকাতা পুলিশ বড় স্কুলগুলির চারপাশে যে বায়ুদূষণ চিহ্নিত করেছে তা নিয়ন্ত্রণ করতেই এই নির্দেশিকা জারি হয়েছে । এর আগে বড় বড় স্কুলগুলি খোলা ও বন্ধের সময় প্রবল যানজটের সৃষ্টি হয় । অধিকাংশ সময়ে এক একজন পড়ুয়ার ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারের কারণে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে সমস্যা দেখা দেয় । উপায় বার করতে একাধিকবার স্কুলগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছিল স্কুল শিক্ষা দপ্তর ।
স্কুল শিক্ষা দপ্তরের সচিব মণীশ জৈনের সভাপতিত্বে হওয়া বৈঠকগুলিতে উপস্থিত ছিলেন পরিবহন ও পরিবেশ দপ্তর, কলকাতা পুরসভা ও শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা । কিন্তু, ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞায় তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় সংশ্লিষ্ট মহলে । স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে অভিভাবকরা সকলেই এই নিষেধাজ্ঞার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন । অনেকের মতে, এতো পড়ুয়ার জন্য বাস সংখ্যাও নিত্যান্ত কম নয় । আবার অনেক অভিভাবকের বক্তব্য, তাঁরা নিরাপত্তার স্বার্থেই তাঁদের বাচ্চাদের গাড়িতে করে পৌঁছে দেন । সেখানে পুলকার বা বাস ব্যবহার বাধ্যতামূলক করায় ব্যাপক চিন্তায় পড়েন তাঁরা । বিশেষত, ছাত্রীদের অভিভাবকরা । এই পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগত গাড়িতে নিষেধাজ্ঞার নির্দেশিকাই প্রত্যাহার করে নিল স্কুল শিক্ষা দপ্তর । শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশেই তা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে ।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ব্যাক্তিগত গাড়িতে পড়ুয়াদের স্কুলে আসা-যাওয়ায় করার জন্য নিষেধাজ্ঞার নির্দেশিকা প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, "পরিবেশ রক্ষা করা উচিত, তবে যে কায়দায় শিক্ষা দপ্তর করছে সেই কায়দায় নয় । পরিবেশটা তো শুধু শিক্ষা দপ্তরের বিষয় নয় । পরিবেশটা সামগ্রিকভাবে রাজ্যের এবং সমগ্র দেশের বিষয় । সুতরাং, 26টি স্কুলকে বন্ধ করলেই যে পরিবেশ রক্ষা হবে, এমত আমার নয় ।" তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের কাগজপত্র পর্যবেক্ষণ করে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলেছেন । তারপর যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা নেওয়া হবে । তা ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেওয়া হবে ।