কলকাতা, 2 অক্টোবর:একে জনসংযোগ বলবেন ? নাকি রাজনৈতিক কর্মসূচি ? দুর্গা ঠাকুর দেখতে গিয়ে (Durga Puja 2022) সাধারণ মানুষের চোখে পড়ছে 'চাকরি চাই'-এর পোস্টার ! তাও আবার এই দাবি করা হচ্ছে খোদ 'জাগো বাংলা'র স্টল (Jago Bangla Stall) থেকেই ! তাহলে কি এবার রাজ্য সরকারের বিরোধিতায় নামল শাসকদল ? ভুলেও তেমনটি ভাববেন না ৷ এক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের চাকরির দাবি কেন্দ্রের মোদি সরকারের কাছে ৷ রাজ্য়ের কাছে নয় ৷ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ পোক্ত করতেই এবারের পূজোয় নতুন স্লোগান তুলেছে তৃণমূল ৷ তারা বলছে, 'এজেন্সি নয়, চাকরি চাই' !
ভরা পুজোর মরশুমেও গান্ধি মূর্তির পাদদেশে ধরনা দিচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা ৷ কিন্তু, তৃণমূল কংগ্রেসের চাকরির দাবির সঙ্গে এর বিরাট ফারাক রয়েছে ৷ কারণ, তৃণমূলের স্লোগানে চাকরির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় এজেন্সিরও উল্লেখ রয়েছে ৷ বস্তুত, মোদি জমানায় গোটা দেশেই যে চাকরি বাজার পড়েছে, সেকথা সকলেরই জানা ৷ কিন্তু, এ রাজ্যের অবসস্থাও তার থেকে আলাদা কিছু নয় ৷ উলটে, এরই মধ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সির তৎপরতায় চাপ বেড়েছে রাজ্য়ের শাসকদলের ৷ এবার তাই পালটা চাপের খেলায় নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ আর জনমানসে এই পরলিকল্পনা ছড়িয়ে দিতেই বেছে নেওয়া হয়েছে দুর্গাপুজোর উৎসবকে ৷
আরও পড়ুন:অসুস্থ রাজ্যপাল, গান্ধি ঘাটে অনুষ্ঠান সারলেন মুখ্যসচিব ও শিক্ষামন্ত্রী
প্রসঙ্গত কয়েকদিন আগেই কেন্দ্রের বিরোধিতায় পথে নেমেছিল তৃণমূল মহিলা কংগ্রেস ৷ জাতীয় ক্ষেত্রে কর্ম-সংকোচ হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে কড়াই-উনুন নিয়ে লুচি ভেজে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মালা রায়রা ৷ সেই সময় রাজ্যের অর্থ-প্রতিমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, এজেন্সিগুলির যে নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি ছিল, তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে ৷ তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে কেন্দ্র ৷ মুখে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রাখতে পারেনি মোদি সরকার ৷ সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সঠিকভাবেই রাজ্য সরকারের শীর্ষ পদে থেকে নিজের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন বলেও দাবি করেছিলেন চন্দ্রিমা ৷
এই প্রেক্ষাপটে জাগো বাংলার স্টলে চাকরির দাবিতে পোস্টার নজর কাড়ছে আমবাঙালির ৷ আসলে বছরের বারোটা মাসই আন্দোলন, কর্মসূচির খবরের মধ্যে থাকলেও, পুজোর ক'দিন রাজনীতি থেকে দূরে থাকে বাংলার মানুষ ৷ কিন্তু এবার পুজোর স্টলেও এই ধরনের জনসংযোগ আদতে তৃণমূল কংগ্রেসের একটি নয়া কৌশল বলেই মনে করা হচ্ছে ৷ যদিও এই নিয়ে শাসকদলের নেতাদের প্রশ্ন করা হলে তাঁদের তরফ থেকে বলা হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেস এমন একটা দল যে সুখে, দুঃখে মানুষের পাশে থাকে ৷ তাই উৎসব আনন্দে যেমন তৃণমূল আছে, একইভাবে দুঃখের সময়ও মানুষের দাবিদাওয়া নিয়ে তৃণমূল আন্দোলন করে ৷ প্রত্যেকটি দলের একটি রাজনৈতিক অবস্থান থাকে ৷ সেই অবস্থান থেকেই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে ৷