কলকাতা, 17 মে : আনিশ খানের বাড়িতে ঘটনার দিন রাতে পুলিশের অভিযান আইন মেনে হয়নি (Police Raids on Anish Khan House were Illegal Says Advocate General to HC) ৷ এদিন কলকাতা হাইকোর্টে সিটের তদন্ত রিপোর্ট পেশ করতে গিয়ে সেকথা স্বীকার করে নিলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ৷ তবে, কলকাতা হাইকোর্টের সম্মতিতে সিট পুরো ঘটনার খুঁটিনাটি তদন্ত করছে ৷ শুধু মাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই মামলার তদন্ত সিবিআইকেই দিতে হবে, এই আর্জি গ্রহণযোগ্য নয় বলে এ দিন আদালতে জানান এজি ৷
পাশাপাশি, সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজ নিয়েও এ দিন হাইকোর্টে সওয়াল করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল ৷ তিনি বলেন, সিভিক ভলান্টিয়ারদেরকে যাতে কোনও কিছুতে অপব্যবহার করা না-হয়, তার জন্য তিনি রাজ্যকে নিয়োগ বন্ধ করার কথা জানিয়েছেন ৷ সেই সঙ্গে ওইদিন পুলিশের ভূমিকা যে অত্যন্ত নক্কারজনক ছিল, তা স্বীকার করেছেন অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় । আদালতের উদ্দেশ্যে তিনি জানান, ‘‘পুলিশ অপরাধি হলে শাস্তি পাওয়া উচিত ৷ কিন্তু, আনিষ খানের বাড়িতে সেদিন যাঁরা গিয়েছিলেন ৷ অর্থাৎ, সিভিক ভলান্টিয়ার সৌরভ কানরা এবং ওসি আমতা কেউই চিনতেন না আনিশকে ৷ এসআই নির্মল দাস ও কাশিনাথ বেরার মধ্যেও কেউ তাঁকে চিনতেন না ৷’’ তিনি আদালতে জানিয়েছেন, হিজাব ইস্যুতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আনিশের করা কিছু পোস্ট নিয়ে কথা বলতেই সেদিন পুলিশ তাঁর বাড়ি গিয়েছিল ৷
আরও পড়ুন : Anish Khan Death Case : আনিশ মৃত্যুর ঘটনায় হাইকোর্টে রিপোর্ট পেশ সিটের, সালেম খানকে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ বিচারপতির
ঘটনার পরেও পুলিশের ভূমিকা যে সঠিক ছিল না তাও এ দিন আদালতে স্বীকার করেছেন এজি ৷ তিনি জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ উপযুক্ত ভূমিকা পালন করেনি ৷ তাঁদের আনিশকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল ৷ এমনকি অভিযান আইন মাফিক হয়নি ৷ কিন্তু, আনিসকে খুন করা হয়েছে, এমন কোনও তথ্যও সিটের তদন্তে উঠে আসেনি বলে জানান সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ৷
আরও পড়ুন : Anish Khan Death Case : আনিশকে পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে পুলিশ, সিটের রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে দাবি বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের
এ দিন বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চে আনিশ খান মৃত্যু মামলার শুনানি ছিল ৷ অ্যাডভোকেট জেনারেলের বক্তব্য শোনার পর, বিচারপতি জানান, ‘‘কোনও পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে সব সময় মাথায় রাখতে হবে, বিষয়টির সঙ্গে সাধারণ মানুষ এবং তাঁর পরিবারের স্বার্থ জড়িত ৷ সুপ্রিম কোর্টের আদেশ আছে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তাহলে একই পুলিশ দিয়ে তদন্ত করা যাবে না ৷ শুধু ভুক্তভোগী ও পরিবারের সদস্যদের বিশ্বাস জাগানোর জন্য ৷’’
বিচারপতির মন্তব্যের পর এজি’র পালটা যুক্তি, ‘‘রাজ্য এর থেকে বেশি কী করতে পারে ! আমরা কেস ডায়েরি দিয়ে দিচ্ছি ৷ আদালত দেখুক কোথায় ভুল আছে ৷
প্রতিদিন কম করে 20টি মামলায় দেখা যাচ্ছে, বলা হচ্ছে রাজ্য পুলিশের উপর ভরসা নেই ৷’’ অ্যাডভোকেট জেনারেলের এই বক্তব্য শুনে বিচারপতি বলেন, ‘‘কিছু কিছু ক্রুটি ছাড়া রাজ্যের প্রশাসন অন্য জায়গায় থেকে অনেক বেটার ৷’’ আনিশ খান মৃত্যুরহস্য মামলার পরবর্তী শুনানি দিন আগামী 7 জুন রাখা হয়েছে ৷