কলকাতা, 7 জানুয়ারি: অভিন্ন পাঠ্যক্রম, অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা চালুর পরেও উঠছিল মান নিয়ে প্রশ্ন। তাই এবার অধীনস্থ কলেজগুলির স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের উত্তরপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের দিয়েই মূল্যায়ন করানোর সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। ইতিমধ্যেই এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধানদের কাছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে 26টি স্নাতকোত্তর কোর্সের পাশাপাশি অধীনস্থ 39টি কলেজে সেল্ফ ফাইন্যান্সিংয়ে বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স করানো হয়। স্নাতক উত্তীর্ণ পড়ুয়াদের একটি বড় অংশ অধীনস্থ এই কলেজগুলিতে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করেন। বহুদিন ধরেই অভিযোগ ছিল যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় কলেজের স্নাতকোত্তর পড়ুয়ারা বেশি নম্বর পান। তখন স্নাতকোত্তর কোর্সগুলির জন্য পাঠ্যক্রম প্রস্তুত করত কলেজ। প্রশ্নপত্রও কলেজই করত। পরীক্ষা হত হোম সেন্টারে অর্থাৎ কলেজেই। আর তারপরে কলেজের পড়ুয়াদের উত্তরপত্র মূল্যায়ন করতেন কলেজেরই অধ্যাপকরাই। অভিযোগ ছিল, কলেজগুলি পাঠ্যক্রমে কাটছাঁট করে, নরম ধাঁচের প্রশ্নপত্র করে এবং মূল্যায়নে ঢালাও নম্বর দিয়ে পড়ুয়াদের যথেচ্ছ নম্বর পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিত।
আরও পড়ুন:স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে যুক্ত হওয়ায় রাজ্যবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর
কলেজের স্নাতকোত্তর কোর্সগুলির মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় 2018 সালে কলেজগুলিতে চলা স্নাতকোত্তর কোর্সগুলিকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বৈষম্য দূর করতে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের পাঠ্যক্রম অভিন্ন করা হয় সেই সময়। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পাঠ্যক্রম পড়ানো হয় সেই পাঠ্যক্রমই কলেজে পড়ানো বাধ্যতামূলক করা হয়। বদল আনা হয় পরীক্ষা ব্যবস্থাতেও। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেই একই দিনে, একই সময়ে, একই প্রশ্নপত্রে কলেজগুলিতেও পরীক্ষা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও কলেজের স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের ঢালাও নম্বর দেওয়ার অভিযোগ উঠে।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় যে পাঠ্যক্রমে পড়ায়, এরা তো সেই পাঠ্যক্রমে পড়াত না। তার ডিল্যুটেট ভার্সন পড়াত। আংশিক সময়ের অধ্যাপকরা খাতা দেখত। সেই জায়গা থেকে আমরা আগেই বেরিয়ে এসেছিলাম। বলেছিলাম, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো যদি ব্যবহার করা হয় এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে সার্টিফিকেট দিতে হয়, তাহলে ইউনিফর্মিটি থাকতে হবে। মানে আমরা যে পাঠ্যক্রমে পড়াই সেই পাঠ্যক্রমই পড়াতে হবে। আমাদের যে প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হয়, কলেজে যারা স্নাতকোত্তর পড়ে তাঁদেরকেও সেই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিতে হবে। কিন্তু, তারপরেও দেখা যাচ্ছে মূল্যায়নের পরে যে একটা বিরাট পার্থক্য রয়ে যাচ্ছে। কলেজগুলোর একটা টেক্কা দেওয়ার মনোভাব থেকে হোক বা অন্য কোনও কারণেই হোক কলেজের স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের ঢালাও নম্বর দেওয়া হচ্ছে সেটা বোঝা গিয়েছে।"