দিল্লি ও কলকাতা, 22 সেপ্টেম্বর : মুর্শিদাবাদ থেকে ধৃত 6 জঙ্গিকে ট্রানজ়িট রিমান্ড শেষ হওয়ার দু'দিন আগেই দিল্লির আদালতে তোলা হল । আজ তাদের পাতিয়ালা হাউস কোর্টে তোলা দেওয়া হয়। NIA সূত্রে খবর, ধৃত জঙ্গিদের চার দিনের জন্য NIA হেপাজত মঞ্জুর করেছে আদালত । এদিকে এই তদন্তে এবার নামতে চলেছে ED । কোন সূত্র থেকে ওই জঙ্গিরা টাকা পেত তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করছে তারা ।
ধৃত জঙ্গিদের চারদিনের NIA হেপাজত, আসরে নামছে ED
দ্রুত জঙ্গিদের গতকাল নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিতে। সেখানেই নয় জঙ্গিকে একসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করবে তদন্তকারীরা ।
পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ এবং কেরালা এর্নাকুলাম থেকে 9 আল-কায়েদা জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে NIA । গোয়েন্দারা রাতভর অভিযান চালিয়ে এই জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয় । তাদের মধ্যে 6 জন মুর্শিদাবাদের । এই জঙ্গি মডিউলের ভারতে হামলার পরিকল্পনা ছিল । মূলত রাজধানী দিল্লিতে হামলার পরিকল্পনা ছকা হচ্ছিল বলে ইন্টেলিজেন্স রিপোর্টে জানতে পেরেছিল NIA । তার পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লিতে দায়ের হয় মামলা(RC case no-31/2020/NIA/DLI)। তার জেরে কলকাতা NIA আদালত ধৃতদের 24 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ট্রানজ়িট রিমান্ডের অনুমতি দেয় ।
ডোমকল থেকে জলঙ্গি । ওদের কেউ ইঞ্জিনিয়রিং পড়ুয়া, কেউ আবার পরিযায়ী শ্রমিক । মুর্শিদাবাদের ছ'টি জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে 6 জনকে । এ বিষয়ে এনআইএর কাছে ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট ছিল । তার পরিপ্রেক্ষিতে গত 11 সেপ্টেম্বর মামলা দায়ের করে NIA । তারপর থেকেই গোয়েন্দারা বিভিন্ন সূত্র মারফত খবর নেওয়া শুরু করেন । সেই সূত্র ধরে মুর্শিদাবাদ থেকে নাজমুস সাকিব, আবু সুফিয়ান, মইনুল মণ্ডল, লিউইয়ান আহমেদ, আল মামুন কামাল, আতিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন : কড়া নিরাপত্তায় মুর্শিদাবাদে ধৃত 6 জঙ্গিকে কলকাতা বিমানবন্দরে আনা হল
নাজমুস সাকিবের বাড়ি ডোমকলে । ডোমকলের বসন্তপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কম্পিউটার সায়েন্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সে । জলঙ্গীর ঘোষ পাড়ার বাসিন্দা আতিউর রহমানও কলেজ পড়ুয়া । সে নদিয়ার করিমপুরে নেতাজি মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র । এই দুজনের বাড়ি থেকেই মোবাইল, ল্যাপটপ, পেনড্রাইভ ও বেশকিছু নথি বাজেয়াপ্ত করেছে গোয়েন্দারা । জলঙ্গীর মধুবনা গ্রামের বাসিন্দা মইনুল । পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক। কাজ করত কেরালায় । মইনুলের মতই মামুনও পরিযায়ী শ্রমিক । ডোমকলের রায়পুর- নাড্ডাপাড়ায় বাড়ি মামুনের । সে বেঙ্গালুরুতে রাজমিস্ত্রির কাজ করত । অবশ্য বছর দুয়েক আগে বাড়ি ফিরে আসে। তারপর থেকে কখনও গাড়ি চালাতেন, কখনও আবার রাজমিস্ত্রির কাজ করত । আবু সুফিয়ানের বাড়িও ডোমকলেই । সেও পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে দিল্লিতে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন । তবে সম্প্রতি বাড়ি ফিরে একটি লেদ কারখানা তৈরি করেছে । ধৃতরা প্রত্যেকেই একটি নির্দিষ্ট চ্যাট গ্রুপের মেম্বার বলে জানিয়েছে NIA । সেই চ্যাট গ্রুপের নাম ছিল গাজওয়াতুল হিন্দ।
দ্রুত জঙ্গিদের গতকাল নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিতে। সেখানেই নয় জঙ্গিকে একসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করবে তদন্তকারীরা । এদিকে জঙ্গি কার্যকলাপ চালানোর জন্য আবু সুফিয়ানদের কাছে কীভাবে টাকা আসত তা খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্তে নামতে চলেছে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট । জঙ্গি কার্যকলাপ চালানোর জন্য ভারতের কেউ টাকা দিত কিনা তা জানার চেষ্টা চলছে ।