কলকাতা, 29 জুন: আজ সকালেই ভারত সরকারের সংস্কৃতিমন্ত্রক টুইট করেছে, "জন্মদিনের শ্রদ্ধা পদ্মভূষণ ভারতের রাশিবিজ্ঞানের জনক অধ্যাপক প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশকে ৷ তিনি ছিলেন দক্ষ পদার্থবিদ, প্রবৃত্তিগতভাবে রাশিবিজ্ঞানী এবং একজন দৃঢ় সংকল্পের পরিকল্পক ৷"
বস্তুত উনিশ শতকের বিরল বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী বাঙালিদের মধ্যে অন্যতম প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ ৷ যিনি ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইন্সটিটিউট গড়ে তোলেন ৷ তিনিই 1922-এর উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ বন্যার পর তার আগের 50 বছরের বৃষ্টিপাত ও বন্যার পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে সাহায্য করেন প্রশাসনকে ৷ রাশিবিজ্ঞানকে মানবকল্যাণে লাগানোর এই ধরনের কাজ ভারতে সেই প্রথম ৷ এই প্রশান্তচন্দ্রই নেহরুর পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা কমিশনের অন্যতম সদস্য ৷ দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাকালেই শিল্পায়নকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন তিনি ৷ প্রশান্তচন্দ্রের এতখানি ছড়ানো কাজের পরিসরের জন্যই তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় পরিসংখ্যান দিবসে এমন টুইট করেছে ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রক ৷ বলা বাহুল্য, 29 জুন যে জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস, তা বাংলা তথা ভারতের গর্ব বিশ্বের অন্যতম সেরা রাশিবিজ্ঞানী প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশের জন্মদিনকে মনে রেখেই ৷
কলকাতার 201 কর্নওয়ালিস স্ট্রিটে প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশের জন্ম হয় 1893 সালের 29 জুন ৷ পিতামহ ছিলেন ব্রাহ্ম সমাজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা গুরুচরণ মহলানবিশ ৷ বাবার নাম প্রবোধচন্দ্র মহলানবিশ ৷ শিক্ষিত, পারিবারিক সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বড় হন ভবিষ্যতের মহান রাশিবিজ্ঞানী ৷ প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে 1912 সালে পদার্থবিজ্ঞানে অনার্স সহ স্নাতক হন । পরবর্তী পড়াশোনার জন্য 1913 সালে ইংল্যান্ডে যান । 1915 সালে কেমব্রিজের পদার্থবিদ্যার পাঠ শেষ করেন ৷ কিন্তু, দেশে ফেরার পথে লন্ডনের কিংস কলেজের লাইব্রেরিতে ‘বায়োমেট্রিকা’ নামের সেই সময়কার বিখ্যাত স্ট্যাটিসটিক্স জার্নাল চোখে পড়ে প্রশান্তচন্দ্রর ৷ একটু পড়ে দেখতে গিয়ে জার্নালটি কিনেই ফেলেন প্রশান্তচন্দ্র । জাহাজে করে দেশে ফেরার পথে ওই জার্নালে বুঁদ হন ৷ কলকাতায় ফিরেও চলে নয় খণ্ডের ‘বায়োমেট্রিকা’ পাঠ । এতেই বদলে গেল জীবনের গতিপথ । জন্ম হল যুগস্রষ্টা রাশিবিজ্ঞানীর । ভারতে সূচিত হল বিজ্ঞান-চর্চার এক নতুন ধারা ৷