কলকাতা, 16 ডিসেম্বর : নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন, 2019-র প্রতিবাদে বিক্ষোভের নামে রাজ্যজুড়ে তাণ্ডব চলছে । তবে কলকাতায় এখনও পর্যন্ত সেই অশান্তির বড় কোনও আঁচ পড়েনি । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কলকাতা পুলিশ বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে । লালবাজারের শীর্ষ কর্তারা দফায়-দফায় আলোচনায় বসছেন । স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে রাখা হচ্ছে বিশেষ নজরদারি । শহরে শান্তির পরিবেশ বজায় রাখতে নিজেদের ইন্টেলিজেন্সকে পুরোপুরি ব্যবহার করছে কলকাতা পুলিশ । কিন্তু তারপরেও আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে । আর এই কারণেই কলকাতা পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা গোটা বাহিনীকে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন ।
লালবাজার সূত্রের খবর, কমিশনারের তরফে বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়েছে সমস্ত OC, ডিভিশনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার, ডিভিশনাল কমিশনার, যুগ্ম-কমিশনার, অতিরিক্ত কমিশনারদের । গোটা বাহিনীকে সক্রিয় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি । কলকাতা পুলিশের সমস্ত ছুটি বাতিল করা হয়েছে । 'স্পর্শকাতর' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে কাশীপুর, বেলগাছিয়া, রাজাবাজার, বড়বাজার, পার্কসার্কাস, তিলজলা, তপসিয়া, ট্যাংরা, খিদিরপুর, গার্ডেনরিচ ও মেটিয়াবুরুজ এলাকাকে ।
গতকাল গার্ডেনরিচ লাগোয়া আখড়া স্টেশনে যেভাবে তাণ্ডব হয়েছে, তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে কলকাতা পুলিশ । পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রের কাছ থেকে খবর পেয়ে স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে নাকা চেকিং করার প্রস্তাব উঠেছে । অশান্তিতে যারা উস্কানি দেবে তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে টহলদারি চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে । প্রয়োজনে কমিউনিটি পুলিশের সহযোগিতা নিতে বলা হয়েছে OC-দের । বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে প্রতিমুহূর্ত যোগাযোগ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে OC-দের । কোথাও কোনও বিক্ষোভের সম্ভাবনা তৈরি হলেই সেই এলাকার নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে, কী করা যাবে না তা বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে । কোথাও কোনো ভাবেই রাস্তা অবরোধ করতে দেওয়া যাবে না বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে । রাস্তার উপর কোন কিছু জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো যাবে না । যতদিন পর্যন্ত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, 2019-এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভের আঁচ না কমবে, ততদিন এই নির্দেশই বহাল থাকবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন অনুজ শর্মা । এছাড়া গতকাল এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে আজ থেকে কলকাতা পুলিশের সমস্ত ছুটি বাতিল করা হয়েছে ।
আরও পড়ুন : NRC ও CAA-র প্রতিবাদে অবরোধ রাজারহাট ও নিউটাউনে, নাজেহাল মানুষ
কমিশনার বলেছেন, "শহরে কোনওভাবেই সাধারণ মানুষ যাতে অসুবিধায় না পড়ে তা দেখতে হবে । যুগ্ম কমিশনার এবং অতিরিক্ত কমিশনারদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে প্রডিভিশনগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে । প্রত্যেক যুগ্ম কমিশনার এবং অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারকে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট এলাকা । সেই সব এলাকায় থানার OC-দের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে যে কোনও পরিস্থিতিতে পরামর্শ দেওয়া এবং প্রয়োজনে সশরীরে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের । জোর দিতে বলা হয়েছে গ্রাউন্ড ওয়ার্কে ।"