কলকাতা, 23 নভেম্বর : বিগত কয়েক বছরের থেকে চলতি বছর রেকর্ড সংখ্যক আসন ফাঁকা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিভিন্ন শাখার স্নাতক স্তরে । বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেকনোলজির 23টি বিভাগ মিলিয়ে থাকা মোট 1253 টি আসনের মধ্যে তিনটি অনলাইন কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে 1239 জন পড়ুয়াকে আসন অ্যালট করেছিল পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষা বোর্ড। যা অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু, তার মধ্যে 804 জন ভরতি হওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদনপত্র জমা করেছেন। অর্থাৎ, এক ধাক্কায় 435টি আসন ফাঁকা থেকে যাচ্ছে ৷ আবার আবেদনকারীদের মধ্যে অনেকেই হয়ত ভরতি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন না। যার ফলে আরও 40-50টি আসন খালি রয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। ফাঁকা থাকা এই বিপুল সংখ্যক আসন পূরণে বি-কেন্দ্রীভূত কাউন্সেলিংয়ের পথে হাঁটবে বলে ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
প্রায় 450 আসন ফাঁকা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে
বিগত কয়েক বছর ধরেই তিন দফার কাউন্সেলিংয়ের পর পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষা বোর্ডের (WBJEEB) দেওয়া অ্যালটমেন্টের ভিত্তিতে ভরতি হচ্ছিল না যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক কোর্সের সব আসন। সেই আসনগুলি ভরতি করতে পরবর্তীতে বি-কেন্দ্রীভূত কাউন্সেলিং করানো হতো।
বিগত কয়েক বছর ধরেই তিন দফার কাউন্সেলিংয়ের পর পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষা বোর্ডের (WBJEEB) দেওয়া অ্যালটমেন্টের ভিত্তিতে ভরতি হচ্ছিল না যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক কোর্সের সব আসন। সেই আসনগুলি ভরতি করতে পরবর্তীতে বি-কেন্দ্রীভূত কাউন্সেলিং করানো হতো। গত বছর জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষা বোর্ডের দেওয়া অ্যালটমেন্টের ভিত্তিতে ভরতি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পরেও 261টি আসন ফাঁকা ছিল। তার আগের বছর ফাঁকা ছিল 253টি আসন । গত বছর থেকেই রাজ্যের পড়ুয়াদের জন্য ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে 90 শতাংশ আসন সংরক্ষন চালু করা হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে । কিন্তু, তারপরেও আসন ফাঁকা থাকার চেনা চিত্রটা থেকেই গেছে । কিন্তু গত বছরগুলির আসন ফাঁকা থাকার রেকর্ড ছাপিয়ে গেল এবছর।
চলতি বছর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির (FET) অধীনস্থ ১৬টি বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারিং, টেকনোলজি, ফার্মেসি ও আর্কিটেকচারের স্নাতক কোর্সে মোট 1253টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে 1239টি আসনে ছাত্র-ছাত্রী অ্যালট করেছিল WBJEEB। বোর্ডের কাছে থেকে অ্যালটমেন্ট পাওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের ভরতির প্রক্রিয়া শুরু 10 নভেম্বর থেকে শুরু করেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। সম্পূর্ণ অনলাইন মাধ্যমে অ্যালটমেন্ট পাওয়া পড়ুয়াদের আবেদনপত্র জমা করতে বলা হয়েছিল। চলতি বছর কোরোনা আবহে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের ভরতি হওয়ার আগ্রহ বেশি থাকবে বলে আশাবাদী ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেছিলেন, "এবার আসন খুবই কম ফাঁকা আছে। সাম্প্রতিক কয়েক বছরে এত কম খালি থাকার রেকর্ড নেই। আমরা মনে করছি, এবছর COVID-19-এর কারণেই যাদবপুরের ডিমান্ড বেশি। কারণ, আগে যারা IIT, NIT যেত তারা এখন আর যাচ্ছে না। আমরা আশা করছি, বেশিরভাগ আসনই ভরতি হয়ে যাবে।"
কিন্তু, 15 নভেম্বর পর্যন্ত অনলাইন আবেদনপত্র জমা করার প্রক্রিয়া শেষ হতেই ভেঙে যায় সেই আশা। জানা যায়, মাত্র 804 জন পড়ুয়া আবেদনপত্র জমা করেছেন। এরপর তাঁদের অ্যাডমিশন ফি জমা করে ভরতি হওয়ার কথা। কিন্তু, এই 804 জনের মধ্যে অনেকেই হয়তো তা করে শেষ পর্যন্ত ভরতি হবেন বলে আশঙ্কা রয়েছে। সেক্ষেত্রে, আসন ফাঁকা থাকার সংখ্যা বর্তমানের থেকে আরও 40-50টি বেশি হতে পারে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পদস্থ আধিকারিক।
তবে, প্রতিবছরই প্রাথমিকভাবে WBJEEB-র তিন দফার কাউন্সেলিংয়ের পর বহু আসন ফাঁকা থাকলেও, শেষ পর্যন্ত বি-কেন্দ্রীভূত কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সেই আসনগুলি পূরণ হয়ে যাওয়ার নজির রয়েছে। এ বছরও তাই হবে বলে আশাবাদী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "আমরা অবশ্যই বি-কেন্দ্রীভূত কাউন্সেলিং করব। তার জন্য যা যা করণীয় অর্থাৎ উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অনুমোদন নেওয়া এবং বিজ্ঞপ্তি জারি করা সবই করব। তবে, এখনও আমাদের ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। শেষ হলেই আমরা বুঝতে পারব কত আসন আসলে ফাঁকা রয়েছে। তারপরে আমরা বি-কেন্দ্রীভূত কাউন্সেলিংয়ের পথে হাঁটব।" একইসঙ্গে তিনি বলেন, "যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আসন ফাঁকা থাকে না। এবছরও সেটা হবে না বলে আশা করছি।"