কলকাতা, 21 জানুয়ারি : তৃণমূল ও BJP একই পাঠশালা থেকে শিক্ষা নিয়েছে । দুজনেই আদবানির পাঠশালায় পড়াশোনা করেছে । সোমবার শহিদ মিনারে কলকাতা জেলা CPIM-এর সমাবেশে এভাবেই রাজ্যের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের কড়া সমালোচনা করলেন CPI(M)-এর নেতা মহম্মদ সেলিম । CAA ও NRC-র বিরোধিতা করে সেলিম আক্রমণাত্মক ভাষায় বলেন, "এটা কারও বাপের দেশ নয়। হিন্দুস্থান কারও বাবার নয়, যে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবে ।" রাজ্য-রাজনীতিতে CPI(M) এই দুই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যে সমান দূরত্ব বজায় রাখবে তাও এদিনের সভার সুর থেকে স্পষ্ট ।
CPI(M) -এর সেন্ট্রাল কমিটির সদস্য মহম্মদ সেলিম ও CPI(M) রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করেন ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একই পাঠশালার তৈরি বলে কটাক্ষ করেন এই সেলিম । সেলিম বলেন, "দু'জনের পতাকার রং আলাদা। কিন্তু দুজনই আদবানির পাঠশালায় পড়াশোনা করেছেন । এদের সিলেবাস একই । কায়দা-কানুন একই। বিরোধীদের মিটিং মিছিল করতে দেয় না । দিলীপ ঘোষের এত বড় সাহস হয় কিভাবে, বলেন দুই কোটি লোককে বাংলা থেকে বার করে দেবেন ? নবান্নের 14 তলায় চোরেদের আড্ডা হলে দিলীপ ঘোষের মতো নেতা তৈরি হয়।"
সোমবার কলকাতা জেলা CPI(M)-এর ডাকে শহিদ মিনারে জনসমাবেশের আয়োজন করা হয় । এদিন সমাবেশে কেন্দ্রীয় সরকারের এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশপুতুল কবর দেওয়া হয় । মহম্মদ সেলিম দাবি করেন, এই বাংলায় ডিটেনশন ক্যাম্প করতে দেওয়া হবে না । এটা কারও বাপের দেশ নয়।"
তৃণমূল ও BJP একই পাঠশালা থেকে শিক্ষা নিয়েছে,দাবি সেলিমের CAA ও NRC-র বিরোধিতায় বাম-কংগ্রেসের ডাকা বন্ধে সারা রাজ্যে বিক্ষিপ্ত অশান্তি হয় । ট্রেন অবরোধ থেকে সরকারি বাস ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটে । এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও জোট করবেননা জানিয়ে দেন । শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী প্রতিবাদে দিল্লিতে সোনিয়া গান্ধির সভাতেও না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ।
সেই ঘটনার উল্লেখ করে সেলিম মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন," মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন কোনও প্রতিবাদ নয় । জাতীয় সম্পত্তি ভেঙো না । বাম শ্রমিক সংগঠনের ডাকে ৮ জানুয়ারির হরতালে পুলিশ গাড়ি ভেঙেছে। গাড়ি ভাঙল পুলিশ। আর প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আমাদের নামে নালিশ করে এলেন। উনি বললেন আমরা ভেঙেছি । আমরাও ভিডিয়ো দেখিয়ে দিয়েছি কারা ভেঙেছে ।" তিনি আরও বলেন," মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলবেন, সরকারি সম্পত্তি ভেঙো না । কলকাতায় এক একটা গুজব, এখানে আগুন লাগিয়েছেন তিনি । বিধানসভার সম্পত্তি ভেঙেছেন । "
বিধানসভা অধিবেশন ডেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করে প্রস্তাব নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । এই বিষয়ে CPI(M) রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন ," না আঁচালে বিশ্বাস নেই। মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভা ডেকে সেই প্রস্তাব নিলে অবশ্যই ধন্যবাদ জানাবেন মুখ্যমন্ত্রীকে । কিন্তু তার আগে আমি বাংলার মানুষকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। কারণ বাংলার মানুষের চাপের জন্যই আজ মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভা অধিবেশন ডেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব নিতে বাধ্য হয়েছেন ।"
সূর্যকান্ত মিশ্র-র প্রশ্ন ," দেশের প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজেদের সার্টিফিকেট দেখাতে পারবেন? তারা তো সব P.hd ডক্টরেট বলে নিজেদের পরিচয় দেন। আগে নিজেরা পরীক্ষার সার্টিফিকেট দেখান। তারপর মানুষের নাগরিকত্বের পরীক্ষা এবং সার্টিফিকেট দেখতে আসবেন।"