পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

By

Published : Dec 11, 2019, 11:17 PM IST

ETV Bharat / city

শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা সদর্থক, আন্দোলন প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা হবে জানালেন পার্শ্বশিক্ষকরা

শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছেন বলে জানান প্রতিনিধিরা । তাহলে কি অনশন-আন্দোলন তুলে নেওয়া হচ্ছে? মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, " সেটা এখনই বলতে পারব না । আমরা স্টিয়ারিং কমিটির সঙ্গে বৈঠক করব । অনশনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করব । আন্দোলনকারীদের মতামত নেব । তারপরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব ।"

Meeting between Para Teacher and Partha Chatterjee
পার্থ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা, 11 ডিসেম্বর : প্রায় একমাস পর শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা । আর সেই আলোচনায় কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছে পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চের প্রতিনিধিরা ৷ তবে, আলোচনা সদর্থক হলেও অনশন-আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে কি না, তা নিয়ে স্টিয়ারিং কমিটির সঙ্গে আলোচনার পরেই সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিনিধিরা ৷

আজ প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চ সহ পার্শ্বশিক্ষকদের চারটি সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় । বৈঠকে পার্শ্বশিক্ষকদের সংগঠনগুলির চারজন করে প্রতিনিধি ছাড়াও শিক্ষা দপ্তরের প্রধান সচিব মনীশ জৈন সহ প্রশাসনের অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ছিলেন । বৈঠক শেষে পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ বলেন, "ভালো আলোচনা হয়েছে ‌। সময় চেয়েছে সরকার । আমরা সেই সময়টা দিতে প্রস্তুত ।" সংগঠনের অন্য যুগ্ম আহ্বায়ক মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের একটাই দাবি, তা হল ভাতা নয়, বেতন কাঠামো করে দিতে হবে । শিক্ষামন্ত্রী সহমত পোষণ করেছেন ৷ উনি জানিয়েছেন, আজ সমস্ত সংগঠনকে নিয়ে একসঙ্গে বসার একটাই কারণ যে, তিনি কিছু ওয়ার্কআউট করে এসেছেন । উনি বলেছেন, আমাদের সময় দিন, আপনারাও সময় নিন । যদি না হয় তাহলে আবার আন্দোলন করবেন । যেহেতু এতখানি জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেছেন সেহেতু আমরা আশা রাখতে পারি যে, একটা সদর্থক কিছু হবে ।"

শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছেন বলে জানান প্রতিনিধিরা । তাহলে কি অনশন-আন্দোলন তুলে নেওয়া হচ্ছে? মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, " সেটা এখনই বলতে পারব না । আমরা স্টিয়ারিং কমিটির সঙ্গে বৈঠক করব । অনশনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করব । আন্দোলনকারীদের মতামত নেব । তারপরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব ।"

তবে, পার্শ্বশিক্ষকদের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেও তাঁদের নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে আজ জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী । তিনি বলেন, "আমরা আজ তাঁদের প্রত্যেকটা পয়েন্ট বুঝিয়ে বলেছি । আমি তাঁদের বলেছি, আপনারা আপনাদের অনশন, আন্দোলন, ধরনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য আপনাদের সহকর্মীদের কাছে আবেদন করুন । তাঁদের দাবি বেতন কাঠামোর স্কেল করে দিতে হবে ৷ আমরা তাঁদের বলেছি, স্থায়ীকরণের বিষয়টি আমরা বিবেচনা করব । অন্যান্য বিষয়গুলোও বিবেচনা করব । কিন্তু বিবেচনা করতে গেলে আমাদের দপ্তরে আলোচনার দরকার আছে ৷ অর্থ দপ্তরের সঙ্গে কথা বলার দরকার আছে ৷ মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন নেওয়ার দরকার আছে । "

পার্শ্বশিক্ষকরা জানিয়েছেন, তাঁদের থেকে সময় চেয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী । আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চের মধ্যে তাঁদের প্রধান দাবি বেতন কাঠামো নিয়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী । তবে সেই আশ্বাস বা প্রতিশ্রুতি লিখিতভাবে দিলেই তাঁরা অনশন প্রত্যাহার করবেন । শিক্ষামন্ত্রী এই বিষয়ে বলেন, "বুদ্ধিজীবী থেকে রাজনীতিবিদ, চারিদিক থেকে আমাকে বলা হচ্ছে ওদেরকে (পার্শ্বশিক্ষকদের) নিয়ে একবার বসুন । সরকারের যে সদিচ্ছা আছে সেটা তাঁদের বুঝিয়েছি । তাঁরা যদি আন্দোলন প্রত্যাহার না করেন সেটা তাঁদের ব্যাপার । এটাও বলেছি, খেয়াল রাখবেন কোনও সংস্থায় আপনি যদি চাকরি করেন, আর সেখানে দীর্ঘদিন কিছু না বলে না আসেন, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই সেই সংস্থা আপনার প্রতি সহানুভূতি দেখাতে পারে না । " সময় চাওয়ার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "আমি কোনও সময় চাইনি ।"

অনশনরত পার্শ্বশিক্ষকদের প্রধান দাবি, ভাতা প্রথার অবসান ঘটিয়ে বেতন কাঠামো দিতে হবে । সেটা কি দেওয়া হবে? শিক্ষামন্ত্রী বলেন, " কী বেতন কাঠামো আমি নিজেই বুঝতে পারছি না । স্থায়ীকরণটা বুঝি । এটা একটা নতুন উঠেছে, স্কেল তৈরি করা । আমি জানি না এটা কী । স্কেল তৈরি করলেই কি তার স্থায়ীকরণ হয়ে গেল? ওরা নিজেদের মধ্যে সুস্থ মাথায় স্বাভাবিকভাবে আলোচনা করুক । তারপরে বলুক । আমাদের যে রকম সুযোগ আসবে সেরকমভাবে সমাধানসূত্র নিশ্চয়ই বার করব ।"

আজকের বৈঠক নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, "যাঁরা আন্দোলন করছেন তাঁদের বলেছি, আপনাদের মঞ্চে এসে যাঁরা বলছেন কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিয়েছে, রাজ্য সরকার সেই টাকা দিচ্ছে না - সেই কাগজটা দেখান । উলটে আমরা তাঁদের দেখিয়েছি, কেন্দ্রীয় সরকার বা মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক শিক্ষকদের বেতন বা ভাতা বাবদ নির্দিষ্ট কোনও হেডে টাকা পাঠান না । উলটে কয়েক হাজার কোটি টাকা আমরা তাদের কাছে পাই । 68 থেকে 70 শতাংশ বেতন বা ভাতা বাড়ানো হয়েছে । আমরা তাঁদের প্রতি যথেষ্ঠ সহানুভূতিশীল । কিন্তু তার মানে এই নয়, বছরে বছরে কেউ না কেউ রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাবে । আর আমরা দৌড়ে গিয়ে বিক্ষোভ উঠিয়ে বলব, তোমাদের দাবিগুলো মেনে নিচ্ছি । এটা গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ লক্ষণ নয় ।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details