কলকাতা, 15 অগস্ট : প্রথমবার জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে গিয়ে মহা বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে চলেছিলেন বিমান বসু (Biman Bose) ৷ মহম্মদ সেলিমের (Md. Salim) তৎপরতায় অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন ৷ 75তম স্বাধীনতা দিবসে আর একটু হলেই উল্টো পতাকা উত্তোলন করে ফেলছিলেন বিমান ৷ ছুটে এসে তাঁকে থামান সেলিম ৷ তারপর ফের সোজা করে রাজ্য সিপিএমের সদর দফতরে উড়ল জাতীয় পতাকা ৷ তবে এসবের পরও নরেন্দ্র মোদির মাতঙ্গিনী হাজরাকে অসমের মানুষ বলার সমালোচনা করেছেন বিমান ৷
এর আগে সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী কমিউনিস্ট পার্টির স্বাধীনতা দিবস পালনের যুক্তি হিসাবে বলেন, "স্বাধীনতা আন্দোলনে কমিউনিস্টরা কখনওই ব্রাত্য নন । বরং তাঁদের অবদান ভীষণভাবে প্রাসঙ্গিক ।" এদিন বিমান বসু জানিয়েছেন, তাঁদের দিল্লির সদর দফতরে আগে থেকেই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হত । এবার স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর ৷ তাই রাজ্য সদর দফতরেও তা পালিত হচ্ছে । এবার থেকে নিয়মিত এই অনুষ্ঠান পালিত হবে ।
তবে এদিন প্রথমবার কমিউনিস্ট পার্টির সদর দফতরে স্বাধীনতা দিবস পালন অনুষ্ঠান ঘিরে কটাক্ষের বন্যা বইছে বিরোধী শিবিরে ৷ বিমানের কার্যত বিড়ম্বনাকে কটাক্ষের খোরাক বানিয়েছে বিরোধীরা ৷ রাজনৈতিক মহলের খোঁচা, সিপিএমের স্বাধীনতা দিবস পালনের অভ্যাস কখনওই ছিল না ৷ পঁচাত্তর বছরে তারা এই প্রথম তা পালন করতে গিয়ে ভুল করতে যাচ্ছিল ৷ অনভ্যাসের কারণেই উল্টো-সোজার পার্থক্য করা যায়নি ৷ তবে ঘটনা বা প্রায় দুর্ঘটনা, যাই বলা হোক না কেন, তা সামাল দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে নেতা-কর্মীদের তরফ থেকে ৷ তাঁদের দাবি, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান নিজে কর্মসূচির প্রস্তুতিতে ছিলেন না ৷ তাই তাঁকে এভাবে আক্রমণ করা ঠিক নয় ৷ যাঁরা প্রস্তুতিতে ছিলেন ভুলটা তাঁদের থেকেই হয়েছে ৷ তবে তৎপরতার সঙ্গে তা ঠেকানো গিয়েছে ৷ এমন তো আর হয়নি যে উল্টো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে ৷ তার আগেই ভুল শুধরে নেওয়া হয়েছে ৷ সেটাও কম কী ?
প্রথম চেষ্টাতেই হোঁটচ খেয়েও আলিমুদ্দিনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হল নিয়ম মেনেই ৷ এদিন স্বাধীনতা সংগ্রামী মাতঙ্গিনী হাজরাকে অসমের মানুষ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) ৷ সেই ঘটনার প্রতিক্রিয়াতেই বিমান বসু সাংবাদিকদের জানান, আরএসএস নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে না আসতে পারলে প্রধানমন্ত্রী আরও এই ধরনের ভুল করবেন বলে মনে করেন তিনি ৷ বিমান বলেন, "মাতঙ্গিনী হাজরা আত্মাহুতি দিয়েছেন মেদিনীপুরে ৷ তিনি জন্মেওছেন মেদিনীপুরেই ৷ উনি (নরেন্দ্র মোদি) এই যে কথাগুলি বলেন, সেগুলি না জানার জন্য হয় ৷ প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ে এমন অনেক ব্যক্তিত্ব আছেন, যাঁরা তাঁকে সঠিক তথ্য দিতে পারেন ৷ তাঁর (প্রধানমন্ত্রীর) তাঁদের উপর নির্ভর করা উচিত ৷ তা না করে আরএসএসের উপর নির্ভরতা রাখলে এরকম ভুল বারবার করবেন ৷"
আরও পড়ুন : CPIM : কেন এই প্রথম স্বাধীনতা দিবস পালন সিপিএমের, ব্যাখ্যা দিলেন সুজন