কলকাতা, 13 জানুয়ারি : সন্ধে তখন সাতটা কি সোয়া সাতটা । উত্তর কলকাতার ব্যস্ত রাস্তায় অফিস ফেরত মানুষজনের ভিড় । হঠাৎ বিকট শব্দে যেন কেঁপে উঠল গোটা এলাকা । কিছু বুঝে ওঠার আগে কান্না আর চিৎকারের রোলে তখন কান পাতাই দায় । কোভিডের ভ্য়াকসিন আসার আনন্দে শহরটা যখন একটু আনন্দ করবে ভাবছিল ঠিক তখনই যেন সুর কাটল । যেন বড়বাজারের স্মৃতি ফিরল বাগবাজারে ।
টালা ব্রিজ বন্ধ থাকায় বাগবাজার দিয়েই সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে গাড়ির ভিড় ইদানিং বেশি । আচমকা দূর থেকে মানুষজনের চিৎকার কানে ভেসে এল । বাগবাজার মহিলা কলেজের পাশের বস্তিতে বিধ্বংসী আগুন । ঘিঞ্জি বস্তিতে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে । বাদ যায়নি সারদা মায়ের বাড়িও । বাড়ির একাংশে আগুন লেগে বেশ কিছু নথি পুড়ে যায় । যদিও স্বস্তি, কোনও হতাহতের খবর নেই । দু'ঘণ্টা পর 27টি ইঞ্জিনের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে ।
একে উত্তর কলকাতার ঘিঞ্জি এলাকা । তার উপর বস্তিতে ঢোকার মুখের রাস্তাও সংকীর্ণ । আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছায় । দমকলকে দেখেই উত্তেজিত জনতা ক্ষোভে ফেটে পড়ে । তাদের অভিযোগ, সময়মতো খবর দিলেও দমকল পৌঁছায়নি । দু'পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে । দমকল কর্মীদের মারধর ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে । পাল্টা লাঠিচার্জ করে পুলিশ । ততক্ষণে উত্তুরে হাওয়ার দাপটে আগুন পাশের বহুতলেও ছড়িয়ে পড়ে । এদিকে আগুন লাগার পরপরই বস্তিতে একের পর এক সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হতে থাকে । প্রাণ ভয়ে মানুষ এদিক-ওদিক ছুটতে থাকে । অবশ্য সময়মতো বস্তি থেকে বেরিয়ে আসে মানুষজন । তাই প্রাণে রক্ষা । কিন্তু চোখের সামনে ঘর থেকে আসবাব, প্রয়োজনীয় নথি-পত্র ছাই হতে দেখে অনেকে হাউ হাউ করে কেঁদেছে ।