কলকাতা, 26 মে: আমফানের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত কলকাতা পাঁচদিন কেটে গেলেও এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারেনি । ক্ষয়ক্ষতির খতিয়ান বের করতে গিয়ে দেখা গেল কলকাতার স্কুলগুলিও রক্ষা পায়নি ঘূর্ণিঝড়ের রোষ থেকে ৷ কলকাতার বহু স্কুলই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেইদিনের প্রবল ঝড়ে । উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতার বহু স্কুলে উপড়ে পড়েছে গাছ ৷ গেট, জানালা থেকে সীমানার দেওয়াল ভেঙে পড়েছে । উড়ে গেছে অ্যাজবেস্টস বা টিনের চাল । ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থাও । বেশ কিছু স্কুলের অবস্থা এমন হয়েছে যে সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত স্কুল খোলা যাবে না ।
যেমনটি হয়েছে উত্তর কলকাতার বাগবাজার মাল্টিপারপাস গার্লস স্কুলে । আমফানে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে স্কুলটিকে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মলি বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের একটা সুন্দর মেন গেট আছে, যেখান থেকে মেয়েরা ঢোকে, সেই গেটের উপরেই একটা গাছ শিকড় সমেত উপড়ে পড়েছে ৷ গেটটা পুরোটাই ভেঙে গেছে । স্কুলের চারতলাতেও ক্ষতি হয়েছে । ছাদের উপর একটা অ্যাডবেস্টারের শেড ছিল । ঝড়ে সেটা উড়ে গেছে । এছাড়া জানালা ভেঙে গেছে, যত ফলস সিলিং ছিল সমস্ত ভেঙে পড়েছে । গাছ পড়ে স্কুল চত্বরের দেওয়ালও ভেঙেছে । চারতলা পুরোটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলা চলে । লাইব্রেরিতে জল ঢুকে অনেক বই নষ্ট হয়ে গিয়েছে । অন্যের বাড়ির পাম্প নষ্ট হয়েছে । তাঁরা এখন ক্ষতিপূরণ চাইছে ।’’
গাছ পড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ট্যাংরার সনৎ রায়চৌধুরি ইনস্টিটিউশনেরও । উচ্চমাধ্যমিক স্তরের এই স্কুলটির চারটি ক্লাসরুম, বাথরুম, সীমানা পাচিল, পানীয় জলের জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । টালিগঞ্জ পূর্ব পুটিয়ারির মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের স্কুল গঙ্গাপুরী শিক্ষা সদনেও একটি বড় গাছ উপড়ে পড়েছিল । ফলে ওই স্কুলবাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে । দুটি ক্লাসরুমের ক্ষতি হয়েছে, যার মধ্যে একটির জানালা ভেঙে গেছে, উড়ে গেছে স্কুলহলের অ্যাজবেস্টস ৷ বৃষ্টির জলনিকাশির পাইপলাইন ফেটে গেছে, পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । টালিগঞ্জের আর একটি স্কুল মিলনগড় বালিকা বিদ্যালয়ের পাঁচটি ক্লাসরুমের ক্ষতি হয়েছে, ক্লাসরুমের জানালা ভেঙে গেছে, সিঁড়ির উপর থাকা শেড উড়ে গেছে, সীমানা প্রাচীর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷ এমনকী, প্রধান গেটটিও ভেঙে গেছে ।