কলকাতা, 16 অগস্ট: খেলা হবে দিবস (Khela Hobe Dibas) থেকে দলকে আন্দোলনমুখী হওয়ার ডাক দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আজ তাঁর ডাকে সরকারি ভাবে এবং দলীয় উদ্যোগেও শহর থেকে জেলা খেলা হবে দিবস পালন হচ্ছে । আর এই খেলা হবে দিবসকে কেন্দ্র করেই জোরদার হয়েছে রাজনৈতিক তরজা (Mamata Banerjee wishes on Khela Hobe Dibas)। এ দিন সকালেই এই খেলা হবে দিবস নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি । রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও রাজনৈতিকভাবে এর জবাব দিতে দেরি করেনি । পত্রপাট জবাব দিয়েছে তৃণমূলও ।
আজ খেলা হবে দিবস উপলক্ষে সকাল সকাল রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সোশ্যাল সাইট টুইটারে তিনি লিখেছেন, "আমি #খেলাহবেদিবসে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাতে চাই । গত বছরের ইভেন্টের চরম সাফল্যের পর, আমরা আজ তরুণদের আরও বেশি অংশগ্রহণের জন্য উন্মুখ । এই দিনটি আমাদের তরুণ নাগরিকদের উদ্যোগকে সমুন্নত রাখুক, যারা অগ্রগতির সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য আশ্রয়দাতা !"
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন এই খেলা হবে দিবসের সাফল্য নিয়ে রাজ্যের তরুণ ও যুব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছেন, ঠিক তখন বিজেপির তরফ থেকে এই খেলা হবে দিবসকে কেন্দ্র করে চরম কটাক্ষ ছুড়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের শাসকদলের উদ্দেশে । বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই ইস্যুতে একযোগে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি । পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারের প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে তারা তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলেছেন ।
আরও পড়ুন:এবার সুকান্তর মুখে পালটা খেলা হবে স্লোগান, হুঁশিয়ারি শাসকদলকে
ঠিক কী বলেছেন বিজেপি নেতারা ?
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ খেলা হবে দিবস নিয়ে কটাক্ষ করে বলেছেন, "আমরাও দেখব কী খেলা হয় । খেলা তো শুরু হয়ে গিয়েছে । দুটো গোল খেয়েছেই তৃণমূল । তিন নম্বর হলেই চিৎ ।" তিনি আরও বলেন, গতকাল স্বাধীনতা দিবস হয়ে গেল, কোথায় টিএমসি ? গতকাল তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসে লোক ছিল না । এই অবস্থা হয়ে গেল একদিনে । দুটো মাত্র স্ট্রোক হয়েছে । প্রথম পার্থ, তারপরে অনুব্রত । তৃতীয় স্ট্রোক হলে দল কোমাতে চলে যাবে ।
খেলা হবে দিবস নিয়ে রাজনৈতিক তরজা এ দিকে খেলা হবে দিবস নিয়ে তৃণমূলর উদ্দেশে হুঙ্কার ছেড়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও । তিনি বলেন, যেভাবে একের পর এক নেতা চুরির দায়ে গরু পাচারের দায়ে ধরা পড়ছেন, তৃণমূল নেত্রী আশঙ্কা করছেন আগামী দিনে আরও কিছু ধরা পড়বে । তৃণমূল কংগ্রেস এই মুহূর্তে গণতান্ত্রিক ভাবে সম্পূর্ণ ব্যাকফুটে রয়েছে । বাংলার মানুষ তৃণমূলকে বাসে ট্রামে শুধু চোর চোর বলছে । এরকম পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে হিংসাই একমাত্র ঘুরে দাঁড়ানোর আশ্রয় । হিংসার মাধ্যমেই তারা গণতান্ত্রিকভাবেই লড়াই লড়তে না পেরে পুলিশকে সামনে রেখে খেলা হবে দিবস পালন করছে । তিনি বলেন, "খেলতে বিজেপির কোনও আপত্তি নেই । তবে এই খেলা সব সময় ইভেন গ্রাউন্ডে হওয়া উচিত । সমান রাজনৈতিক জমি পেলে বিজেপি দারুণ খেলবে । তাই পুলিশকে সরিয়ে নিন । বাকিটা আমাদের নেতাকর্মীরা বুঝে নেবেন ।"
এ দিকে সুকান্ত মজুমদারের এই বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার । তিনি বলেন, "কোনও রাজনৈতিক দল কাউকে লড়াইয়ের জন্য জমি তৈরি করে দেয় না । এটা প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকে নিজেকে তৈরি করতে হয় । সব সময় পরমুখাপেক্ষী হয়ে থেকেছে বিজেপি । কখনও কংগ্রেস সিপিএম কখনও অন্য রাজনৈতিক দলের উপর নির্ভরশীল হওয়া বিজেপি আজ চাইছে ইভেন প্লেগ্রাউন্ড । আজকে উনি বলছেন পুলিশ তুলে নাও দেখো কী করি ! আমরাও বলছি সিবিআই এবং ইডিকে তুলে নাও । তাঁদেরকে রাজনৈতিকভাবে জমি তৈরির জন্য ব্যবহার করো না । গণতান্ত্রিকভাবে লড়তে চাইলে তৃণমূল কংগ্রেসও ভয় পায় না ।"