পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

Mamata Banerjee Sister In-Law Exposes Corruption: দিদির দুয়ারে দুর্নীতি! হাতেনাতে ধরলেন 'কাউন্সিলর বউদি' কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Mamata Banerjee) খাসতালুকেই দুর্নীতির অভিযোগ! প্রতারিতদের পাশে দাঁড়ালেন তাঁরই ভ্রাতৃবধূ কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় (Kajari Banerjee)। কলকাতা পৌর এলাকার যে 73 নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটেছে, কাজরীই সেখানকার কাউন্সিলর ৷ কাঠগড়ায় প্রাক্তন কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি!

mamata banerjee sister in-law kajari banerjee exposes corruption in cm resident ward
Mamata Banerjee Sister In-Law Exposes Corruption: দিদির দুয়ারে দুর্নীতি! হাতেনাতে ধরলেন 'কাউন্সিলর বউদি' কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়

By

Published : Jun 7, 2022, 6:45 PM IST

কলকাতা, 7 জুন: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বেই রয়েছে 'জয় হিন্দ ভবন'৷ এটি আদতে কলকাতা পৌরনিগমের 73 নম্বর ওয়ার্ডের কমিউনিটি হল। অভিযোগ, এই হল ভাড়া করাকে কেন্দ্র করেই বছরের পর বছর ধরে টাকা নয়ছয় করে যাচ্ছিলেন সেখানকারই এক অস্থায়ী কর্মী ৷ অভিযুক্ত ব্যক্তি সরাসরি পৌরনগমের সঙ্গে যুক্ত নন ৷ তিনি আদতে 100 দিনের প্রকল্পের একজন শ্রমিক। সূত্রের দাবি, লাগাতার দুর্নীতি করে গেলেও শেষ রক্ষা হল না তাঁর ৷ প্রকাশ্যে চলে এল সমস্ত ঘটনা ৷ গোটা বিষয়টি জানার পরই প্রতারিতদের সময় নষ্ট না করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেন স্থানীয় কাউন্সিলর তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ভ্রাতৃবধূ কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়।

কলকাতা পৌরনিগমের তরফে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত হয় 2016 সালে । তৎকালীন কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তিকে100 দিনের প্রকল্পের আওতায় কাজ দেওয়া হয়। তাঁর উপর এই 'জয় হিন্দ ভবন' দেখভালের দায়িত্ব ছিল। আর সেই সুযোগেই ওই কর্মী পৌরনিগমের চোখে ধুলো দিয়ে বেআইনিভাবে বুকিং করিয়ে হল ভাড়ার টাকা আত্মসাৎ করতে শুরু করেন বলে নানা মহলে অভিযোগ ওঠে। কলকাতা পৌরনিগমের কমিউনিটি হল বুকিং করার নিয়ম অনুসারে, ভাড়ার সব টাকা ড্রাফট মারফত ব্যাঙ্কে জমা দিতে হয় ৷ বুকিং করতে হয় স্থানীয় বরো অফিসে গিয়ে। কিন্তু, অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছে যাঁরা আসতেন, তাঁদের জন্য ছিল 'বিশেষ' ব্যবস্থা ৷ কলকাতা পৌরনিগমের (Kolkata Municipal Corporation) চালানের রঙিন প্রতিলিপির তারিখ বদলে নগদের বিনিময়ে ওই বাড়ি ভাড়া দিতেন অভিযুক্ত ৷ ফলে পৌরনিগমের তহবিলে ওই ভাড়ার টাকা জমা পড়ত না।

আরও পড়ুন:Mamata at Alipurduar: এতকিছু করার পরও সমর্থন করেননি, দুঃখ পেয়েছি; আলিপুরদুয়ারে বললেন মমতা

সূত্রের খবর, ওই কমিউনিটি হলের এক দিনের ভাড়া প্রায় 20 হাজার টাকা। বরো অফিসের পক্ষ থেকে যেদিন যেদিন বুকিং থাকত, সেই তালিকার বাইরে ফাঁকা দিনগুলিতে এই কর্মী নকল প্রতিলিপি দিয়ে 'জয় হিন্দ ভবন' ভাড়া দিতেন। অভিযোগ, দিনের পর দিন এভাবেই চলছিল ৷ সম্প্রতি এক ব্যাক্তি বুকিংয়ের জন্য এসেছিলেন 9 নম্বর বরোর কার্যালয়ে। বরোর তরফে বাড়ি ভাড়া পাওয়ার জন্য ফাঁকা দিনের (Available Dates) তালিকা তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু, এরপর কমিউনিটি হল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের হয়ে অভিযুক্ত ওই কর্মী দাবি করেন, বরোর পক্ষ থেকে পেশ করা তথ্য সঠিক নয় ৷ তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট সময়ের মধ্যে একদিনও 'জয় হিন্দ ভবন' খালি নেই !

ইটিভি ভারতকে দেওয়া কাজরী বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার৷

যে ব্যক্তি কমিউনিটি হল ভাড়া নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন, এই ঘটনায় তাঁর সন্দেহ হয় ৷ গোটা ঘটনা স্থানীয় বরোর কার্যালয়ের আধিকারিকদের জানান তিনি ৷ এরপর বরোর তরফে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি যেসমস্ত দিনগুলিতে বুকিং রয়েছে বলে দাবি করেছেন, সেই সমস্ত দিনের ভাড়াবাবদ একটি টাকাও বরো অফিসে জমা পড়েনি! অবিলম্বে এই ঘটনা বিস্তারিতভাবে স্থানীয় কাউন্সিলর তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ভ্রাতৃবধূ কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Kajari Banerjee) জানানো হয়। এরপর কাউন্সিলর নিজেই এই ঘটনা নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেন ৷ স্থানীয় বরোর আধিকারিকদের এ নিয়ে তদন্তেরও আবেদন জানান তিনি ৷

আরও পড়ুন:উত্তরবঙ্গ থেকেই নিহত গুজরাতি দম্পতির মেয়ের সঙ্গে কথা মমতার

এলাকার কাউন্সিলরের আবেদন অনুযায়ী, কমিউনিটি হলে গিয়ে খাতা পরীক্ষা করেন বরোর কার্যনির্বাহী আধিকারিক। আর খাতা খুলতেই সামনে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য ৷ বোঝা যায়, এতদিন ধরে পৌরনিগমকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে বাড়ি ভাড়া দিয়ে আসছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি ৷ তাঁর কাছ থেকে অসংখ্য ব্যক্তি নানা অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিভিন্ন সময় বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন ৷ বরো কার্যালয়ের তরফ থেকে সেইসব ব্যক্তিদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয় ৷ যাঁরা আগামী কিছু দিনের জন্য বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন, তাঁদের জানান হয়, যেহেতু তাঁরা নিয়ম মাফিক বাড়ি ভাড়া নেননি, তাই নির্দিষ্ট দিনে কমিউনিটি হল ভাড়া পাবেন না ৷ ভুক্তভোগীদের জানানো হয়, তাঁদের যে চালান দেওয়া হয়েছে, তা নকল!

সূত্রের খবর, এই বেআইনি কার্যকলাপ চালানোর জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তি সর্বদাই নগদে লেনদেন সারতেন ৷ মনে করা হচ্ছে, আর্থিক দুর্নীতির প্রমাণ এড়াতেই এই কাজ করতেন তিনি ৷ এদিকে, গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই প্রতারিত ব্যক্তিদের সময় নষ্ট না করে কালীঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেন বর্তমান কাউন্সিলর কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ ইতিমধ্যেই ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে ৷ ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "প্রতারিতদের বলেছি, তাঁরা যেন অবিলম্বে গোটা ঘটনা পুলিশকে জানান ৷ পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখুন ৷ এরপর যা করার তারাই করবে ৷"

ABOUT THE AUTHOR

...view details