কলকাতা, 7 সেপ্টেম্বর: সরকারি ক্ষেত্রে নিয়োগ নিয়ে বারবার প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে রাজ্যকে ৷ তাই এবার এই বিষয়ে কড়া অবস্থান নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee) ৷ বুধবার নবান্নের (Nabanna) সভাঘরে একটি প্রশাসনিক বৈঠক (Administrative Meeting) হয় ৷ সেই বঠকে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, এবার থেকে নিয়োগ কমিটির (Recruitment Committee) অনুমোদন ছাড়া কাউকে কোনও সরকারি চাকরিতে বহাল করা যাবে না ৷ এদিন এই নির্দেশ দেওয়ার সময় রাজ্য়ের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) নাম আলাদা করে উল্লেখ করেন মমতা ৷ যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ৷
প্রসঙ্গত, সরকারি স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির (SSC Recruitment Scam) জেরেই এখন হাজতবাস করতে হচ্ছে রাজ্য়ের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়কে (Partha Chatterjee) ৷ এসএসসি-এর পাশাপাশি, প্রাথমিক শিক্ষক, মাদ্রাসা-সহ অন্য়ান্য ক্ষেত্রেও নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ৷ কেন্দ্রীয় বিভিন্ন সংস্থা থেকে শুরু করে বিরোধী রাজনৈতিক শিবির, নিয়োগে বিস্তর গরমিলকে হাতিয়ার করেই বাংলার শাসকদলের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধেছে ৷ এই প্রেক্ষাপটে নিয়োগ নিয়ে নতুন করে আর কোনও অশান্তি হোক, তা চাইছে না রাজ্য সরকার ৷ আর সেই কারণেই সতর্ক মমতা ৷
আরও পড়ুন:বাগুইআটি কাণ্ডে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর, সাসপেন্ড আইসি
সূত্রের দাবি, এদিন নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত মন্ত্রীদেরও রাজ্য সরকারি বিভিন্ন চাকরিতে দুর্নীতি যাতে না ঘটে, সেই বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ আলাদা করে ব্রাত্য বসুর নাম করে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, চাকরি স্থায়ী হোক বা অস্থায়ী, এখন থেকে সমস্ত প্রক্রিয়াই সারতে হবে নিয়োগ কমিটির অনুমতি সাপেক্ষে ৷ বুধবার নবান্নের এই বৈঠকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন বিভিন্ন দফতরের সচিব ও আধিকারিকরা ৷ উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপাররাও ৷
এদিনের এই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভের সুরে বলেন, অনেক দফতর নিজেদের মতো করে লোক নিয়োগ করছে ৷ এর ফলে সমস্যা তৈরি হচ্ছে ৷ একদিকে বেতন খাতে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে, অথচ সরকার এই নিয়োগ সম্পর্কে কিছুই জানতে পারছে না ৷ অন্যদিকে, ঠিকা বা ক্যাজুয়াল কর্মীরা পাকা চাকরির দাবি নিয়ে আদালতে চলে যাচ্ছেন ৷ এইভাবে কর্মী নিয়োগ বন্ধ করতে হবে ৷
এই প্রসঙ্গে সরাসরি ব্রাত্যকে উদ্দেশ্য করে মমতা বলেন, কর্মী নিয়োগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের নিয়োগ কমিটিকেই প্রথম সিদ্ধান্ত নিতে হবে ৷ তারা সুপারিশ পাঠাবে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে ৷ প্রস্তাবে উল্লেখ করতে হবে, কেন এই নিয়োগ দরকারি ৷ তারপরই সবদিক বিবেচনা করে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ৷
প্রসঙ্গত, ওয়াকিবহাল মহলের দেওয়া তথ্য অনুসারে, শুধুমাত্র শিক্ষা দফতর নয়, অন্য়ান্য ক্ষেত্রেও নিয়োগ কমিটির অনুমোদন ছাড়াই বহু আবেদনকারীর চাকরি হয়েছে ৷ যেখানে সরকার পক্ষের বিরুদ্ধে উঠেছে স্বজনপোষণের অভিযোগ ৷ নবান্ন সূত্রে খবর,গত 10 বছরে আনুমানিক অন্তত 2 লক্ষ আবেদনকারীকে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে ঠিকা শ্রমিক বা চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে ৷