প্রদীপ-মোমবাতি জ্বালানো শুধুমাত্র চমক, কটাক্ষ সরকারি চিকিৎসক সংগঠনের - প্রধানমন্ত্রীর নতুন চমক
সরকারি চিকিৎসকদের ওই সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক, চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "আলো নিভিয়ে মোমবাতি জ্বালানোর আহ্বান আসলে নভেল কোরোনা ভাইরাস ডিজিজ (COVID-19)-এর প্রতিরোধের নামে প্রধানমন্ত্রীর নতুন চমক। যা চূড়ান্তভাবে বিজ্ঞানবিরোধী।"
কলকাতা, 4এপ্রিল: আগামী কাল 5 এপ্রিল । রবিবার রাত ন' টা থেকে নয় মিনিটের জন্য ঘরের বৈদ্যুতিন আলো নিভিয়ে রেখে প্রদীপ-মোমবাতি-মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই ঘোষণাকে "বিজ্ঞানবিরোধী" এবং "চমক" বলে সমালোচনা করল এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন।
এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের ওই সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক, চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "আলো নিভিয়ে মোমবাতি জ্বালানোর আহ্বান আসলে নভেল কোরোনা ভাইরাস ডিজিজ (COVID-19)-এর প্রতিরোধের নামে প্রধানমন্ত্রীর নতুন চমক। যা চূড়ান্তভাবে বিজ্ঞানবিরোধী।"
গোটা বিশ্বের সঙ্গে এ দেশেও কোরোনা আক্রান্তের এবং মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কোরোনা সংক্রমণ রুখতে চাই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বিজ্ঞানভিত্তিক পদক্ষেপ। এ কথা জানিয়ে চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "COVID-19-এর মোকাবিলায় প্রয়োজন কমিউনিটি বেসড অ্যাক্টিভ সার্ভিল্যান্স এবং হসপিটাল বেসড প্যাসিভ সার্ভিল্যান্স। COVID-19 নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজনমতো টেস্টের ব্যবস্থা এবং নিয়ম মেনে কোয়ারান্টাইন অথবা আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা।"
কমিউনিটি বেসড অ্যাক্টিভ সার্ভিল্যান্স অর্থাৎ, বাড়িতে বাড়িতে নজরদারি চালানোর ব্যবস্থা। এক্ষেত্রে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখতে হবে কারও ক্ষেত্রে COVID-19-এর কোনও উপসর্গ রয়েছে কি না, সংক্রমণের কোনও সম্ভাবনা রয়েছে কি না। এবং, হসপিটাল বেসড প্যাসিভ সার্ভিল্যান্স অর্থাৎ, হাসপাতালে আসা রোগীদের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা। চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "এভাবে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে এবং হাসপাতালে নজরদারি চালানো হলে, সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার অবস্থা রুখে দেওয়া সম্ভব হবে।"
সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক বলেন, "COVID-19 পরীক্ষার ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বে যেখানে প্রতি মিলিয়ন জনসংখ্যা পিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টেস্ট হয়েছে, সেখানে আমাদের দেশে হয়েছে মাত্র ১০.৫টি। যা আমাদেরকে ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দেবে।" তিনি বলেন, "প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে আমরা হতাশ। আমরা ভেবেছিলাম তিনি COVID-19 প্রতিরোধে কমিউনিটি বেসড অ্যাক্টিভ সার্ভিল্যান্স, হসপিটাল বেসড প্যাসিভ সার্ভিল্যান্স, আরও বেশি নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা, এ সব যাতে ভালোভাবে হতে পারে, সেই কথা তিনি ঘোষণা করবেন। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা কিটসের জোগান বাড়ানোর কথা বলবেন। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (PPE), মাস্ক, গ্লাভস এসব অত্যাবশ্যকীয় সরঞ্জাম বিদেশে রপ্তানির না করে দেশের মধ্যে এর যোগান বাড়ানোর কথা বলবেন।"