কলকাতা, 7এপ্রিল : প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠকে যথারীতি ধৈর্য হারালেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। মুখ্যমন্ত্রীকে বিমান বসু বললেন, "সরকার যা বলছে, তা করছে না।" ক্ষিপ্ত মমতা মেজাজ হারিয়ে বললেন, "কোনটা হচ্ছে না, কি হচ্ছে না আমাকে বলুন"। যদিও বিমান বসুকে স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখতেও বলন মুখ্যমন্ত্রী ৷ বাকি বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানালেন, CPI(M)-এর রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।
আজ 17 দফা দাবি নিয়ে রাজ্যের বামফ্রন্ট নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন নবান্নে । বৈঠক শুরু বেলা সাড়ে তিনটে। পাঁচটা নাগাদ বৈঠক শেষ হয়। বৈঠকে বাম দলগুলির 10 জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, CPI(M)রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, RCPI-এর মিহির বাইন,CPI-এর রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, ফরোয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ আজ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী 17 দফা দাবির সঙ্গে প্রায় সহমত। কয়েকটি বিষয় তিনি মেনে নিয়েছেন খামতি রয়েছে। মূলত, পরিযায়ী শ্রমিকদের এরাজ্যে ফেরানো এবং স্বচ্ছ রেশন ব্যবস্থার প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু।কর্মচ্যুত শ্রমিকদের উপযুক্ত ত্রাণ বন্টনের দিকেও দৃষ্টিআকর্ষণ করেছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান।CPI(M) রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র চিকিৎসা সংক্রান্ত বেশ কিছু বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়েছেন
ধৈর্য হারালেন বিমান, ক্ষিপ্ত মমতার প্রশ্ন,"কোনটা হচ্ছে না, কী হচ্ছে না !"
মুখ্যমন্ত্রীকে বিমান বসু বললেন, "সরকার যা বলছে, তা করছে না।"ক্ষিপ্ত মমতা মেজাজ হারিয়ে বললেন, "কোনটা হচ্ছে না, কি হচ্ছে না আমাকে বলুন"।বাকি বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানালেন, CPI(M)-এর রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।
CPI রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দোপাধ্যায় লকডাউনের পরে রাজ্যে প্রচুর মানুষের সমাগম হতে পারে এই আশঙ্কায় মুখ্যমন্ত্রীকে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়, মানুষের মধ্যে সঠিক পরিমাণে রেশন বিলি করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যেকের কথা দেড় ঘন্টা ধরে শুনেছেন।
অশীতিপর বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানকে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ শরীরের প্রতি নজর দিন। ঘটনাচক্রে আজ যে সাদা পাঞ্জাবি পরে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান নবান্নে গিয়েছিলেন, সেই পাঞ্জাবির বুকের বোতামের পাশে কিছুটা জায়গা ছেঁড়া ছিল, মুখ্যমন্ত্রী নজরে আসতেই তিনি জিজ্ঞেস করলেন, "বিমান দা, আপনার পাঞ্জাবি ছেঁড়া কেন? শরীরের যত্ন নেবেন। মুখে মাস্ক বাঁধবেন।"
নবান্নে ঢোকার সময় ন'জন বামফ্রন্ট নেতৃত্বের মুখে মাস্ক বাঁধা ছিল। কেবল বিমান বসু বাদে। নবান্নে ঢোকার আগে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বিমান বসুকেও মাস্ক পরিয়ে দেওয়া হল। মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে ঢুকে মাস্ক খুলে ফেললেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। ফের মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ করলেন মাস্ক পরার জন্য। বিমান বসু মাস্ক পরলেন।
সভায় উপস্থিত পরিষদীয় মন্ত্রী এবং শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ডেকে মজাও করলেন ওজন নিয়ে ৷ কেবলমাত্র কাগজের কাপে লাল চা দিয়ে এবার বৈঠক শেষ হল।
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সীমাবদ্ধতার কথা বলেছেন। কালোবাজারি এবং মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ফোড়েদের বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যের সব জায়গায় নজর রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বামফ্রন্ট নেতৃত্ব জানিয়ে এসেছে কোরোনা ভাইরাস মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে।