কলকাতা, 24 সেপ্টেম্বর : ভবানীপুর উপনির্বাচনকে (Bhabanipur By-election) কেন্দ্র করে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস (All India Trinamool Congress) এবং প্রধান বিরোধী বিজেপির (Bharatiya Janata Party) হাইভোল্টেজ প্রচারের মধ্যে বামফ্রন্ট (Left front) প্রার্থী সিপিএম-এর (CPM) শ্রীজীব বিশ্বাস (Srijib Biswas) যেন হ্যালোজেনের সামনে প্রদীপের আলো ৷ সিপিএম সূত্রে খবর, দেওয়াল লিখনের জন্য ভবানীপুরের একটি দেওয়ালও নাকি বাকি রাখেনি তৃণমূল কংগ্রেস ৷ সর্বত্রই শুধুমাত্র তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের (Mamata Banerjee) প্রচার ৷ সঙ্গে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়ে টাঙানো অসংখ্য ফ্লেক্স, ব্যানার ৷
আরও পড়ুন :Bhabanipur By-Election : ভবানীপুরে উপনির্বাচনের প্রচারে কালীঘাট মন্দিরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ পুরী
তৃণমূলের এই প্রচারের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে বিজেপিও ৷ তাদের প্রার্থী পেশায় আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল (Priyanka Tibrewal) ৷ ভবানীপুরের অলিতে-গলিতে ঘুরে ভোটের প্রচার সারছেন তিনি ৷ এমনকী, রাজ্য বিজেপির হেভিওয়েট নেতা থেকে শুরু করে দলের জাতীয়স্তরের নেতা এবং কেন্দ্রীও মন্ত্রীরাও প্রিয়াঙ্কার প্রচারে গলা মেলাচ্ছেন ৷ ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের ‘যুদ্ধ’ই যাবতীয় লাইমলাইট কেড়ে নিয়েছে ৷
এই দুইয়ের ঢক্কানিনাদের মধ্যেই সিপিএম-এর আইনজীবী প্রার্থী শ্রীজীব বিশ্বাস ভবানীপুরের বিশ্বাস অর্জনে পথে নেমেছেন ৷ তাঁকে ঘিরে প্রচারের আলো সেভাবে নেই ৷ ছোট্ট একটি অটোয় মাইকিং এবং জনা দশেক দলীয় সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়েই শ্রীজীব মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছেন ৷ তিনি পাড়ার ছেলে ৷ তাই মুখ চেনা ৷ আইনজীবী হিসেবে আলিপুর আদালতেও যথেষ্ট জনপ্রিয় ৷ আপাতত কালো জোব্বা তুলে রেখে সকালে চেতলা, মেটিয়াবুরুজ, কালীঘাটের অলি-গলি, ভবানীপুরের আবাসন কিংবা পুরনো মহল্লা বা চায়ের আড্ডায় ভোটের প্রচার সারছেন শ্রীজীব ৷
জোটের অঙ্কে ভবানীপুরের উপনির্বাচনে কংগ্রেস না বামফ্রন্ট, কে প্রার্থী দেবে, তা নিয়ে টানাপোড়েন ছিল ৷ শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বামেরাই প্রার্থী দিয়েছে ৷ 10 বছর আগে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টের রাজ্যপাট শেষ হয়েছে ৷ দিন যত এগিয়েছে, বামপন্থীরা ততই মানুষের কাছে ব্রাত্য হয়ে গিয়েছেন ৷ যদিও ভবানীপুর উপনির্বাচনের প্রচারে বেরিয়ে হারানো সমর্থন কিছুটা হলেও ফেরার ইঙ্গিত পাচ্ছেন বামেরা ৷ তাঁদের নিজেদের অন্তত এমনটাই দাবি ৷
স্থানীয় বকুলবাগান ক্লাবের উল্টো দিকের দলীয় কার্যালয় থেকে প্রচার শুরু করছেন শ্রীজীব ৷ ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে জানালেন, দু’বেলা তিনি এবং তাঁর কমরেডরা ভবানীপুরের মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন ৷ তাঁদের অভাব, অভিযোগ শুনছেন ৷ শ্রীজীব বলেন, ‘‘ছয় মাসের মধ্যে ভবানীপুরের উপর আবার নির্বাচন চাপিয়ে দেওয়া, এককথায় এখানকার মানুষের দুর্ভাগ্য ৷ তৃণমুল নেত্রী নিজেকে ‘ঘরের মেয়ে’ বলে দাবি করলেও তিনি কতটা ঘরের মেয়ে, তা এই অঞ্চলের মানুষ ভালোই টের পাচ্ছেন ৷ জল জমা-সহ এলাকার বহু সমস্যা রয়েছে ৷ তাই নিয়ে ক্ষোভও রয়েছে ৷ কঠিন সময়ে বামপন্থীরাই যে মানুষের পাশে থাকে, তা অতীতেই দেখা গিয়েছে । বর্তমানেও একথা প্রমাণিত ৷ তাই মানুষই এর উত্তর দেবেন ৷’’
আরও পড়ুন :Mamata Banerjee : জাতীয় ইস্যু নিয়ে সরব তৃণমূল নেত্রী, ভবানীপুর থেকেই ভারত জয়ের বার্তা মমতার
প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে বলতে গিয়ে শ্রীজীবের মন্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, তাঁকে না জেতালে অন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যাবেন ৷ অথচ ‘বেসরকারিভাবে’ শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের এখন 213 জন বিধায়ক ৷ তা সত্ত্বেও কেন এই শঙ্কা তৃণমূল নেত্রীর তা বুঝতে পারছি না ৷ আমার বা আমাদের জয়ে বিধানসভায় শূন্যের তকমা ঘুচবে কিনা, তা বলতে পারব না ৷ তবে এটুকু বলতে পারি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরাজিত হলে দলটাই উঠে যাবে ৷’’