কলকাতা, 12 সেপ্টেম্বর : বেহালা পর্ণশ্রী জোড়া খুনের কিনারা করল লালবাজার হোমিসাইড শাখার পুলিশ ৷ গ্রেফতার করা হল মৃত সুস্মিতা মণ্ডলের মাসতুতো দুই ভাইকে ৷ ধৃতদের পরিচয় সঞ্জয় দাস এবং সন্দীপ দাস ৷ মূলত লুঠের উদ্দেশ্যেই বোন এবং ভাগ্নেকে খুন করেছে তারা ৷ গতকাল রাতেই সঞ্জয় দাসকে তার মহেশতলার বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ ৷ গতকাল রাত থেকে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদের পর সে নিজের দোষ স্বীকার করে ৷ জানা গিয়েছে, দুপুরে বোন ও তাঁর ছেলেকে খুনের পর, রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশও করে দুই অভিযুক্ত ৷ পুলিশের অনুমান, সন্দেহ থেকে বাঁচতেই এই পথ বেছেছিল তারা ৷ আজ বেলা 2টো নাগাদ সঞ্জয় দাসকে গ্রেফতার করে লালবাজারের গোয়েন্দারা ৷ বিকেল 4টে নাগাদ সঞ্জয়ের ভাই সন্দীপ দাসকে কলকাতার এক সরকারি অফিসের বাইরে থেকে গ্রেফতার করা হয় ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তে নেমে পুলিশ মৃতার নিকট আত্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ৷ জানা গিয়েছে, সঞ্জয় ও সন্দীপ খুনের ঘটনা জানাজানি হতে রাতে বাকি আত্মীদের সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল ৷ এমনকি বোনের মৃত্যুর শোকপ্রকাশ করতেও দেখা গিয়েছিল তাদের ৷ তদন্তকারীদের অনুমান নিজেদের সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ দিতেই সেই নাটক করেছিল অভিযুক্ত সঞ্জয় এবং সন্দীপ ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, তাদের নিকট আত্মীরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যায় পর্ণশ্রীর ওই ফ্ল্যাটে কান্নাকাটি করতে দেখা গিয়েছিল ওই দু’জনকে ৷ এর পর রাতের দিকে দু’জনেই হঠাৎ করে সবার চোখের আড়ালে চলে যায় এবং গা ঢাকা দেয় ৷ বিষয়টি আত্মীয়দের থেকে জানতে পেরেই সন্দেহ হয় লালবাজারের গোয়েন্দাদের ৷ সেই মতোই পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং সঞ্জয়ের ধার-দেনার বিষয়টি সামনে আসে ৷ এর পর গতকাল রাতে মহেশতলার বাড়ি থেকে সঞ্জয়কে লালবাজারে নিয়ে আসা হয় জেরার জন্য ৷ সেখানেই সারা রাত এবং আজ সারাদিন জেরার পর দুপুরে অপরাধ স্বীকার করে অভিযুক্ত সঞ্জয় ৷ পাশাপাশি জানায়, তার ভাই সন্দীপও এই অপরাধে যুক্ত রয়েছে ৷
আরও পড়ুন :Behala murder: বেহালা মা-ছেলে খুনে ধৃত মৃতার দুই মাসতুতো ভাই
আজ সাংবাদিক বৈঠক করে গোয়েন্দাদের তরফে জানানো হয়েছে, সঞ্জয় দাস দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছিলেন ৷ দেনার টাকা শোধ করার জন্য অর্থের প্রয়োজন ছিল ৷ সেই অর্থের জোগান দিতে বোন সুস্মিতা মণ্ডলের বাড়িতে লুঠের পরিকল্পনা করে সঞ্জয় এবং তার ভাই সন্দীপ ৷ পুলিশকে সঞ্জয় জানিয়েছে, সঞ্জয় যাকে বিয়ে করেছিল, সেই মহিলার এক ছেলে রয়েছে ৷ তাঁর বিয়েতে প্রচুর খরচ করতে হয় সঞ্জয়কে ৷ আর সেই খরচের জেরেই প্রচুর ঋণ হয়ে গিয়েছিল সঞ্জয় দাসের ৷ টাকা শোধ করতে আত্মীপরিজনদের কাছ থেকে টাকা চেয়েছিল সে কিন্তু, সবাই তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল ৷