কলকাতা, ২৮ জানুয়ারি: গো ব্যাক পোস্টারে আর ‘শেম শেম’ শ্লোগানে 'স্বাগত' জানানো হল তাঁকে । মঙ্গলবার কলকাতা মেডিকেল কলেজে এভাবেই বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল নির্মল মাজিকে । যদিও এই ঘটনাকে গুরুত্ব দিতে চান না বলেই জানিয়েছেন নির্মলবাবু ।
২৮ জানুয়ারি কলকাতা মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবস । এই দিন হয় সমাবর্তন অনুষ্ঠান । মন্ত্রী নির্মল মাজি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি । মঙ্গলবার সকালে কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে যখন জাতীয় পতাকা উত্তোলন হচ্ছিল, সেই সময় মেডিকেল কলেজের পড়ুয়াদের একাংশ গো ব্যাক লেখা পোস্টার হাতে বিক্ষোভ দেখায় । অ্যাকাডেমিক বিল্ডিংয়ের হলে প্রতিষ্ঠা দিবস এবংসমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । বিল্ডিংয়ে প্রবেশপথের কিছুটা আগে নির্মল মাজি গো ব্যাক লেখা পোস্টার দেখা যায় ৷ পতাকা উত্তোলনের পরে নির্মল মাজি যখন অ্যাকাডেমিক বিল্ডিংয়ে বক্তব্য রাখছিলেন, তখনও হলের মধ্যে গো ব্যাক লেখা পোস্টার হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় পড়ুয়াদের একাংশকে । তার বক্তব্যের মাঝেই ‘শেম, শেম’ বলতে থাকে পড়ুয়ারা । এই পরিস্থিতিতে বক্তব্য রাখার সময় নির্মল মাজি বলেন, ‘‘বাম আমলে ১৩২ জন শিশু মারা গিয়েছিল । তারপর আমিও প্রতিবাদ সংগঠিত করেছি ৷ প্রতিবাদের অধিকার সকলের রয়েছে ৷ তবে পরিবেশ নষ্ট করার অধিকার কারও নেই ।"
ছাত্রদের বিক্ষোভ ও বক্তব্য প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান শেষে হল থেকে বেরিয়ে ডঃ নির্মল মাজি এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, "কলেজে ১,৩০০ ছাত্র-ছাত্রী ও ১৫০ জন পোস্ট-গ্রাজুয়েট ট্রেনি - সব মিলিয়ে মোট ১৪৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে । ১৪৫০-জনের মধ্যে যদি ১৩ জন অতি বামপন্থী বা ব্য়়ডিকাল বামপন্থীরা কিছু বলে থাকে, সেটা আমি ধর্তব্যের মধ্যে আনি না । পাত্তাও দিই না ।"
এদিন মেডিকেল পড়ুয়াদের কাছে বিক্ষোভের কারণ জানতে চাইলে ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র সৌম্যদীপ রায় বলেন, "সাড়ে পাঁচ বছর ধরে পড়াশোনা করে একজন ছাত্র তার ফাইনাল ডিগ্রি নির্মল মাজির মতো রাজনীতিবিদের হাত থেকে নেবে না । উচ্চশিক্ষিত ও যোগ্য বহু শিক্ষক রয়েছেন, প্রিন্সিপাল, ডিন সবাই রয়েছেন, ডিগ্রি তাঁদের হাত থেকে নেব কিন্তু এমন একটি লোক যিনি ডাক্তার সমাজের দাবিকে সব সময় নস্যাৎ করে দেয়, তার হাত থেকে ডিগ্রি নেব না ৷ আমাদের যখন ইন্টার্নদের স্ট্রাইক চলছিল, তখন উনি গোটা ডক্টর ফ্যাটারনিটির বিরুদ্ধে গিয়েছিলেন । শুধুমাত্র ওনার জন্য আমাদের ১৪ দিন অনশনে বসতে হয়েছিল । ওনার জন্য কলেজে বহিরাগত রাজনীতি ঢুকেছে । আমরা চাই না কলেজে বহিরাগত রাজনীতি প্রবেশ করুক । উনি যাতে আমাদের কলেজে আর না আসেন, সেটাই আমরা চাই । ওনার জায়গায় আমাদের প্রিন্সিপাল, ডিন ম্যাম, এনারা থাকুক । ওনারা আমাদের চিফ গেস্ট হোক । বাকি যাঁরা এসেছেন, তাঁদের সবাইকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি । শুধু ওনাকেই আমরা স্বাগত জানাইনি ৷"