কলকাতা, 12 মে: বর্ষায় যাতে জমা জলের যন্ত্রণা নাগরিকদের ভোগ করতে না হয়, তাই লাগাতার বছরভর কাজ করে চলেছে কলকাতা পৌরনিগমের নিকাশি বিভাগ । আবার অনেক কাজ করেও উঠতে পারেনি আর্থিক সঙ্কটের কারণে । ফলে উত্তর হোক বা দক্ষিণ, নাগরিকদের জল যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মেলেনি । জমা জলের সমস্যার জেরে ভোটের জনসভা পর্যন্ত বাতিল হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর । ফলে মহানগরের নিকাশি ব্যবস্থার সমস্যা ঠিক কোথায় কোথায় ? এর প্রতিকারই বা কিভাবে সম্ভব ? এই সমস্ত নিয়েই বর্ষার আগে মহানগরের নিকাশি ব্যবস্থার পুঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্ট তলব করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং (Kolkata waterlogged)।
সেই রিপোর্ট তৈরি করেছে কলকাতা পৌরনিগমের নিকাশি বিভাগ (Firhad Hakim)। গত মঙ্গলবার তা মেয়র ফিরহাদ হাকিমের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে । আজ সেই রিপোর্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জমা দেবেন মেয়র (KMC to hand over Drainage Report to MamataFirhad )৷ এমনই খবর পৌরনিগম সূত্রে । রিপোর্টটির নাম দেওয়া হয়েছে 'কলকাতায় জমা জলের সমস্যার কারণ ও তার প্রতিকার' ।
রিপোর্টে কী আছে ?
কলকাতা পৌরনিগম সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওই রিপোর্টে ইএম বাইপাস লাগোয়া পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব কলকাতার জল সমস্যার কারণ বিস্তারিত ভাবে বলা হয়েছে । দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় জল কেন জমে থাকে, সেই সমস্যা তুলে ধরা আছে । কলকাতার নিকাশির জল যায় এমন খালগুলির অবস্থান, জল ধারণ ক্ষমতা প্রকৃত কী ছিল, বর্তমানে কী অবস্থা তার উল্লেখ আছে রিপোর্টে ।
আরও পড়ুন:Firhad Hakim on Drainage System : মেট্রোর কাজের জন্য বন্ধ খালে নিকাশি নিয়ে উদ্বেগ, নবান্নের দ্বারস্থ কেএমসি
বলা আছে, শহর এবং শহরতলির 27টি নিকাশি খাল সংস্কার করার কথা । যার মধ্যে কয়েকটি খালের পলি তোলার কাজ শুরু হয়েছে । খালের পাশাপাশি নিকাশির বড় পাইপলাইন যার মাধ্যমে খালে জল আসবে, সেগুলির কোথায় কী অবস্থা তার বিস্তারিত তথ্য দেওয়া আছে রিপোর্টে । সেগুলির পলি তোলার কাজও কতটা হল, কতটা বাকি আছে, কোথায় কাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে, সে সব বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে । কোথায় নতুন পাম্পিং স্টেশন দরকার সেটাও বলা হয়েছে । কলকাতার প্রতিটি ওয়ার্ডে চলছে নিয়মিত পলি তোলার কাজ । সেই কাজের বর্তমান কী অবস্থা তাও রিপোর্টে লিখিত আছে । বিশেষ করে খালের উপরে মেট্রোর কাজের জেরে কী সমস্যা হচ্ছে সেই বিষয়টিও রয়েছে এই রিপোর্টে । শোনা যাচ্ছে, কদিনের মধ্যেই রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বেও এ ব্যাপারে একটি বৈঠক হতে পারে।
কলকাতা পৌরনিগমের আধিকারিকরা আশাবাদী, আর্থিক সঙ্কটের কারণে বহু বড় পদক্ষেপ করতে যে বাধা বা সমস্যা এতদিন হয়েছে, সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে । মুখ্যমন্ত্রী গোটা রিপোর্ট বিবেচনা করে একাধিক পরিকল্পনা রূপায়ণে জোর দিতে নির্দেশ দিতে পারেন । তার জন্য অর্থ বরাদ্দ করতে নির্দেশ দিতে পারেন । খাল সংস্কারে বেশি করে গুরুত্ব দিতে পারেন । তেমনটা হলে দীর্ঘমেয়াদি সুফল পাবেন কলকাতাবাসী (KMC to hand over Drainage situation report to Mamata Banerjee today)।