কলকাতা, 29 জুন : রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankhar) অতীত ঘেঁটে একের পর এক তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছে রাজ্য সরকার ৷ গতকালই 1996 সালের হাওয়ালা-জৈন কেলেঙ্কারির চার্জশিটে জগদীপ ধনকড়ের নাম ছিল বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)৷ যদিও পরে সাংবাদিক বৈঠক করে সেই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন স্বয়ং রাজ্যপাল ৷ মমতার বাউন্সার সামলে উঠতে না-উঠতেই এ বার রাজ্যপালকে ইয়র্কার দিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra) ৷ তাঁর অভিযোগ, বেআইনিভাবে আবাসনের জমি বরাদ্দের (Illegal Residential Land Allotment) সুবিধেভোগী ছিলেন ধনকড় ৷ যদিও পরে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট সেই বরাদ্দ খারিজ করে দেয় ৷ টুইটে ফের রাজ্যপালকে 'আঙ্কেলজি' বলে খোঁচা দিয়ে এই সংক্রান্ত রায়ের প্রতিলিপিও তুলে ধরেছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ ৷
আরও পড়ুন :হাওয়ালা-জৈন কেলেঙ্কারির চার্জশিটে নাম ছিল ধনকড়ের, অভিযোগ মমতার
আজ সাতসকালে টুইট করে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নয়া অভিযোগ আনেন মহুয়া মৈত্র ৷ তিনি টুইটে লেখেন, "'বিশুদ্ধতার প্রতীক' পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল বেআইনি আবাসন বরাদ্দের সুবিধেভোগী ছিলেন, যেটা পরে বাতিল করে দেয় পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের ফুল বেঞ্চ ৷ এটা কি সাংবিধানিক ছিল, আঙ্কেলজি ?"
টুইটের সঙ্গে এই সংক্রান্ত রায়ের প্রতিলিপিও পোস্ট করেছেন তৃণমূল সাংসদ ৷ সেখানে দেখা যাচ্ছে, 1997 সালের একটি মামলায় রায়দান করেছিল পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট ৷ রায়ে বলা হয়েছিল, ডিসক্রিশনারি কোটায় যে জমি বরাদ্দ করা হয়েছিল, তার জন্য আবেদনকারীরা সেই জমি পাওয়ার যোগ্য কি না, তা খতিয়ে দেখা হয়নি ৷ ওই জমি পাওয়ার জন্য আবেদনকারী কর্মক্ষেত্রে বিশিষ্ট কেউ কি না, বা দুঃস্থ কি না, তার উল্লেখ করেননি আধিকারিকরা ৷ সেই জমি আবেদনকারীকে দেওয়া যাবে কি না, তার কোনও সরেজমিন তদন্ত হয়নি ৷ ফরিদাবাদ, গুরগাঁও ও পাঁচকুল্লার জমিগুলি বহু সাংসদ, হরিয়ানা, বিহার, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, নাগাল্যান্ড, গুজরাত, পঞ্জাবের নির্বাচিত বিধায়ক, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য ও তাঁদের সন্তানদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল ৷ যাঁদের নামে জমিগুলি বরাদ্দ হয়েছে, তাঁদের মধ্যে জগদীপ ধনকড়ের নামও রয়েছে ৷ লাল কালি দিয়ে তা স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দিয়েছেন মহুয়া মৈত্র ৷
আরও পড়ুন:"ছোটবোন" মমতার অভিযোগ ওড়ালেন "দাদা" ধনকড়
হাওয়ালা-জৈন মামলার চার্জশিটে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের নাম থাকার অভিযোগ এনে গতকালই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যপাল বলেন, "হাওয়ালা-জৈন মামলায় কেউ দোষী প্রমাণিত হননি । আপনাদের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও চার্জশিট ছিল না । ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে । এটা আমি আশা করিনি । আমার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী । এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ।" যদিও ধনকড়কে পাল্টা আক্রমণ শানিয়ে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেছেন, "জৈন-হাওয়ালার ডায়েরিতে নাম ছিল কি না, বললেন না রাজ্যপাল । সম্ভবত তিনি অর্ধসত্য কথা বলেছেন ।"