কলকাতা, 3 জুলাই : ভুয়ো আমলা (Fake IAS) পরিচয় দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিল দেবাঞ্জন দেব ৷ তার গ্রেফতারির পর এখনও পর্যন্ত যা তথ্য সামনে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে যে সে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কলকাতা পুরনিগমের (Kolkata Municipal Corporation) নাম ভাঙিয়ে প্রতারণার জাল বিস্তার করেছে ৷ এমনকি, কসবার যে অফিসে সে ভুয়ো ভ্যাকসিন (Fake Covid Vaccine) দেওয়ার ক্যাম্প করেছিল, সেটাও কলকাতা পুরনিগমের নামে চলত ৷
স্বাভাবিকভাবেই তাই অভিযোগের আঙুল উঠছে কলকাতা পুরনিগমের দিকে ৷ প্রাক্তন পুলিশ কর্তারা মনে করছেন, কলকাতা পুরনিগমের আধিকারিক ও কর্মীদের একাংশের যোগসাজশ ছাড়া এই ধরনের জালিয়াতি সম্ভব নয় ৷ কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীরা এই নিয়ে মুখে কুলুপ আঁটলেও সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, কলকাতা পুরনিগমে অবাধ যাতায়াত ছিল দেবাঞ্জন দেবের ৷ তার যে ল্যাপটপ পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে, সেখান থেকে পুরনিগমের কিছু নথির কপি পাওয়া পাওয়া গিয়েছে ৷ আর দেবাঞ্জনের মোবাইলে রয়েছে পুরনিগমের কর্মীদের নাম-নম্বর ৷ তাঁদের অনেককে ফোন করার প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে প্রাথমিক তদন্তে ৷
আরও পড়ুন :Fake Vaccination Case : ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে ধৃত আরও এক
তদন্তে নেমে পুরনিগমের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছিল লালবাজার । কিন্তু তাও কেন সিসিটিভি ফুটেজে এখনও পুলিশ দেবাঞ্জনকে দেখতে পেল না ? অন্যদিকে দেবাঞ্জনের মোবাইলে যে পুরকর্মীদের নাম-নম্বর পাওয়া গেল কিংবা যাঁদের সঙ্গে দেবাঞ্জনের ফোনে বার্তালাপ হত, তাঁদের কাউকেই এখনও জেরা করেননি তদন্তকারীরা ৷ স্বাভাবিকভাবেই তাই প্রশ্ন উঠছে, পুরনিগমের আধিকারিকদের একাংশকে কি তাহলে আড়াল করতেই তদন্ত গতি অন্যদিকে বইয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে? এর জন্য লালবাজারের গোয়েন্দাদের উপর কোনও অদৃশ্য চাপ রয়েছে ?
প্রসঙ্গত, এই ঘটনায় মোট ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । যাঁদের মধ্যে রয়েছে দেবাঞ্জনের দাদা ও দেবাঞ্জনের নিরাপত্তারক্ষীও । লালবাজারের দাবি, এখনও পর্যন্ত দেবাঞ্জন কাণ্ডে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা কোনও না কোনও ভাবে দেবাঞ্জনকে সাহায্য করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে । তাহলে পুরনিগমের অন্দরে কারা কারা লাভবান হলেন, সেটা কেন খতিয়ে দেখা হবে না, উঠছে প্রশ্ন ৷